-->
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ

পুতিনকে ‘যুদ্ধাপরাধী’ বললেন বাইডেন, কড়া প্রতিক্রিয়া রাশিয়ার

অনলাইন ডেস্ক
পুতিনকে ‘যুদ্ধাপরাধী’ বললেন বাইডেন, কড়া প্রতিক্রিয়া রাশিয়ার
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ফাইল ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে 'যুদ্ধাপরাধী' বলে অভিহিত করার পর, ক্রেমলিন ত্বরিত এক প্রতিক্রিয়ায় একে 'অগ্রহণযোগ্য' এবং 'ক্ষমার অযোগ্য' বাগাড়ম্বর বলে আখ্যা দিয়েছে।

গতকাল ১৬ মার্চ বুধবার হোয়াইট হাউজে এক সংবাদ সম্মেলনে পুতিনকে প্রথমবারের মতো 'যুদ্ধাপরাধী' বলে আখ্যা দেন বাইডেন। পুতিনকে ওই আখ্যা দেওয়ার বিষয়ে বাইডেনের পূর্বপ্রস্তুতি ছিল না, একজন সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি ওই মন্তব্য করেন।

তবে পরে হোয়াইট হাউজ বিবৃতি দিয়ে বলেছে, বাইডেন ‘স্পিকিং ফ্রম হিস হার্ট’ বা 'অন্তর থেকে'/'মন থেকে' কথা বলছিলেন। ক্রেমলিন এই মন্তব্যকে বলছে, 'ক্ষমার অযোগ্য' বাগাড়ম্বর।

রাশিয়ার মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা তাসকে বলেছেন, ‘একজন রাষ্ট্রনেতার কাছ থেকে এ ধরনের বাগাড়ম্বর অগ্রহণযোগ্য এবং ক্ষমার অযোগ্য বলে আমরা বিশ্বাস করি। বিশেষ করে যাদের ছোড়া বোমায় সারা দুনিয়ায় হাজার হাজার মানুষ মারা গেছে।’

বাইডেনের বক্তব্যের মাধ্যমে ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যেই দুই দেশের সম্পর্কে উত্তেজনার পারদ নতুন করে আরো একটু চড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

ওয়াশিংটনে জো বাইডেনকে একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন, ‘মি. প্রেসিডেন্ট, সব কিছু দেখার পর আপনি কি মি. পুতিনকে এখন যুদ্ধাপরাধী বলবেন?’

প্রশ্নের জবাবে শুরুতে বাইডেন 'না' বললেও পরে হঠাৎই মত বদলে জিজ্ঞেস করেন, ‘আপনি কি জানতে চাইছেন আমি তাকে বলবো কি না...? ওহ, আমি মনে করি তিনি একজন যুদ্ধাপরাধী।’

হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি পরে বলেছেন, ইউক্রেনে 'বর্বর' হামলার চিত্র দেখে, আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা না দিয়ে প্রেসিডেন্ট মন থেকেই ওই কথা বলেছেন।

তবে তিনি উল্লেখ করেছেন, এজন্য যুদ্ধাপরাধ কী তা চিহ্নিত বা শনাক্ত করার জন্য স্টেট ডিপার্টমেন্টের আলাদা আইনি প্রক্রিয়া আছে এবং সে কাজটি পৃথকভাবে চলছে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি মার্কিন কংগ্রেসে দেওয়া এক ভার্চুয়াল ভাষণে বলেছেন, বর্তমান পরিস্থিতি পার্ল হারবার এবং নাইন ইলেভেনের মতো এবং তা মোকাবেলায় পশ্চিমা দেশগুলোর কাছ থেকে আরো সহায়তার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

জেলেনস্কি পরে ইউক্রেনের নাগরিকদের উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে বলেছেন, সিরিয়া, আফগানিস্তান এবং চেচনিয়াতে রাশিয়ার যত সৈন্য মারা গেছে তার চেয়ে বেশি রুশ সেনা ইউক্রেনে মারা গেছে।

এদিকে যুদ্ধের ২১তম দিন গতকাল বুধবাার ইউক্রেনের মারিউপোল শহরে রাশিয়া এক থিয়েটারে বোমা ছুড়েছে যেখানে প্রায় ১২০০ মানুষ আশ্রয় নিয়েছিলেন।

ইউক্রেনকে ১০০ কোটি ডলারের সামরিক সরঞ্জাম দেবে যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে কৌশলগত ১০০টি মানব-বিধ্বংসী ড্রোন, রকেট ও গ্রেনেড লঞ্চার, রাইফেল, মেশিন গান, বডি আর্মার এবং গোলাবারুদসহ ১০০ কোটি ডলারের সামরিক সরঞ্জাম পাঠাচ্ছে।

বার্তাসংস্থা এপি এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ একজন মার্কিন কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে বুধবার বাইডেন প্রশাসনের এই সামরিক সহায়তা পাঠানোর কথা জানান।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে মার্কিন সামরিক বাহিনীর একজন কর্মকর্তা বলেন, যেসব অস্ত্র পাঠানো হবে তার মধ্যে আছে সুইচব্লেড ৩০০ নামে ড্রোন-যা মার্কিন বাহিনীর কাছে 'কামিকাজি ড্রোন' নামে পরিচিত। এটি ব্যাকপ্যাকের মতো পরা যায় এমন অস্ত্র।

কংগ্রেসের কর্মকর্তারা এনবিসি নিউজকে বলেছেন, ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থাটি মূলত কোনো 'ব্যক্তির ওপর সুনির্দিষ্ট আঘাতের' জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা। এই ক্ষেপণাস্ত্র বহু মাইল দূরে থেকে সরাসরি তার লক্ষ্যবস্তুতে সঠিকভাবে আঘাত করতে পারে।

বার্তা সংস্থা এএফপি বলছে, মূলত রাশিয়ার নকশায় তৈরি এসব অস্ত্র এখন ন্যাটোভুক্ত কিছু ইউরোপীয় দেশ উৎপাদন করছে। আর সেজন্যই ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী সহজেই এগুলো ব্যবহার করতে পারবে বলে মনে করা হচ্ছে।

সূত্র: বিবিসি

মন্তব্য

Beta version