বিবাহিত হওয়ার পরও স্ত্রীর অমতে শারীরিক মিলনকে ধর্ষণ হিসেবে ঘোষণা করল কর্ণাটক হাইকোর্ট। এর মধ্য দিয়ে অনেকদিন ধরে চলে আসা বিতর্কে আরেকবার স্বীকৃতি মিললো নারীদের জন্য। এমনকি বিষয়টি নিয়ে আদারতে যাওয়ার পথও সুগম হল।
বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) ওই রায় দেন ভারতের কর্নাটক হাইকোর্টের একক বেঞ্চের বিচারক বিচারপতি নাগপ্রসন্ন।
অবশ্য, মামলাটি ছিল এক নারী তার স্বামীর বিরুদ্ধে অপর একটি শিশুকে যৌন হয়রানির অভিযোগ আনার বিষয়ে। তবে ওই মামলায় ওই নারী তার স্বামীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ, অস্বাভাবিক যৌনতা এবং বৈবাহিক হিংস্রতার অভিযোগও আনেন।
এসব অভিযোগ তদন্তের পর সত্যতা পাওয়ায় অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়। ভারতের আইনের ৩৭৬ (ধর্ষণ) ধারায় তাকে অপরাধীও ঘোষণা করে একটি ট্রায়াল কোর্ট।
এরপর পাল্টা হিসেবে ওই ব্যক্তি হাইকোর্টে গিয়েছিলেন। অভিযুক্ত ব্যক্তির পাল্টা মামলায় দাবি করা হয়, নিজের সম্পর্কের ভিত্তিতে কোনও স্ত্রী তার স্বামীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা দায়ের করতে পারেন না। পুলিশ এতে চার্জশিটও জমা দেয়।
তবে শুনানি শেষে আদালত রায় দেয়, যে কোনও ধর্ষণই ধর্ষণ, সে ধর্ষক 'স্বামী'ই হোক বা অন্য কেউ। আদালত স্পষ্ট ব্যাখ্যায় জানায়, “একজন মানুষ একজন মানুষই; কোনও একটি কাজ, আসলে একটি কাজই।’’
ভারতের আইনের ৩৭৫ ধারায় ধর্ষণের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, আঠারো বছরের উর্ধ্বে কোনও মহিলার সঙ্গে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হলে সেই ঘটনাকে ধর্ষণ বলা যাবে না। এই আইনের সুযোগ নিতে চেয়েছিলেন অভিযুক্ত ব্যক্তি। তবে বিচারে তার সাজা হয় ৩৭৬ ধারায়। ধর্ষণের সংজ্ঞাটিও আদালতে চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। আর বৈবাহিক ধর্ষণের সাংবিধানিকতা নিয়ে দিল্লি ও গুজরাট হাইকোর্ট চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড়িয়ে আছে।
প্রসঙ্গত ২০১৮ সালে গুজরাট হাইকোর্টে অনুরূপ একটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল। সেবার এক ব্যক্তি তার স্ত্রীর আনা ধর্ষণের অভিযোগ অপসারণের জন্য এফআইআর বাতিল করার দাবি জানিয়েছিলেন।
এ মামলার রায়ে বিচারপতি নাগপ্রসন্ন জানিয়েছেন, ‘বিবাহের মতো প্রতিষ্ঠান কোনও পুরুষকেই পাশবিক ব্যবহারের জন্য অনুমতি প্রদান করে না, প্রদান করতে পারে না। আমার দৃষ্টিতে, এর জন্য যে কোনও পুরুষের শাস্তি পাওয়া উচিত, সে যদি মহিলার স্বামীও হন তবেও এই শাস্তি তাঁর প্রাপ্য।’
সূত্র: নিউজ ১৮
মন্তব্য