গত এক সপ্তাহ ধরে ভয়ানক অর্থনৈতিক সঙ্কটের মুখে থাকা শ্রীলঙ্কাজুড়ে জ্বালানির হাহাকার চলছে। প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে পরিবহন। খরচ বাঁচাতে ১০-১৩ ঘণ্টা লোডশেডিং করা হচ্ছে দেশজুড়ে। এরই প্রতিবাদে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিক্ষোভে ফেটে পড়ে রাজধানী কলম্বোর মানুষ। সহিংস বিক্ষোভের পর পরিস্থিতি সামাল দিতে কলম্বোর বিভিন্ন জায়গায় কারফিউ জারি করা হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসের পদত্যাগের দাবিতে হাজার হাজার মানুষ কলম্বোয় তার বাসভবনের সামনে বিক্ষোভে শামিল হন। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষও বাধে বিক্ষোভকারীদের। পরিস্থতি সামাল দিতে প্রাথমিকভাবে ব্যর্থ হয় পুলিশ। বিক্ষোভ ঠেকাতে বিশেষ টাস্ক ফোর্সকে ডাকতে বাধ্য হয় প্রশাসন। এই ঘটনায় এক নারীসহ মোট ৪৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে পুলিশের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, গত রাতে মিরিহানা, নুগেগোডায় বিক্ষোভের পর এক এএসপিসহ পাঁচ পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়েছেন এবং হাসপাতালে তাদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। পুলিশের একটি বাস, একটি জিপ, দুটি মোটরবাইক পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে একটি জলকামান। এই ঘটনার পর কলম্বোর বিভিন্ন জায়গায় কারফিউ জারি করা হয়েছে।
স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে এটিই শ্রীলঙ্কার সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সঙ্কট বলে মনে করা হচ্ছে। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে দেশটিতে খাদ্য, প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র, জ্বালানি ও গ্যাসের ব্যাপক ঘাটতি দেখা দিয়েছে। বৃহস্পতিবার ডিজেলের ঘাটতির কারণে সারা দেশে ১৩ ঘণ্টার জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করা হয়। বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হওয়ার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয় চিকিৎসা পরিষেবাও। হাসপাতালে বন্ধ হয়ে যায় অস্ত্রোপচার।
এ সবের প্রতিবাদে সন্ধ্যা নাগাদ প্রেসিডেন্টের বাড়ির কাছে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করে সাধারণ মানুষ। প্রেসিডেন্ট এবং তার পরিবারের দেশ ছা়ড়ার দাবিতেও সরব হন বিক্ষোভকারীরা। তবে বিক্ষোভ চলার সময় প্রেসিডেন্ট বাসভবনে ছিলেন না বলে জানা গেছে।
প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসের পরিবারের সদস্যরা অর্থ মন্ত্রণালয়সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে আছেন। সেই কারণে রাজাপাকসে পরিবারকেই এই অর্থনৈতিক মন্দার জন্য দায়ী করছেন সাধারণ মানুষ।
সূত্র: আনন্দবাজার
মন্তব্য