ইউক্রেনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় শহর মারিউপোল রাশিয়ার দখলে চলে গেছে। সেখানে এখনও একটি স্টিল কারখানায় যুদ্ধের নামে আত্মরক্ষা করছে ইউক্রেনের কিছু যোদ্ধা। এই শেষ যোদ্ধাদের হতাহত না করে ‘অবরুদ্ধ’ করে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বৃহস্পতিবার (২১ এপ্রিল) দুপুরে বিবিসি এ তথ্য জানিয়েছে।
বিবিসি ও এএফপি জানিয়েছে, মারিউপোলের চার বর্গমাইল জায়গা জুড়ে থাকা আজভস্টাল স্টিল কারখানার ভেতরে ইউক্রেনের হয়ে লড়াই করা দুই হাজারের মতো দেশি-বিদেশি যোদ্ধা অবস্থান করছেন। গত কয়েকদিনের যুদ্ধে কোনঠাসা হতে হতে স্টিল কারাখানাটির ভেতরে এখন আত্মরক্ষা করছেন তারা। তবে তাদের পুরোপুরি ঘিরে রেখেছে রাশিয়ার সৈন্যরা। এরইমধ্যে তারা বাইরের সাহায্য চেয়ে আকুতি জানিয়েছেন। তবে তেমন কিছু পাওয়ার কোন সম্ভাবনাই বাস্তবে আর নেই।
বৃহস্পতিবার সকালে শহরটিতে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ নিতে ও আধিপত্য বজায় রাখার জন্য ওই স্টিল কারখানাটি বোমা মেরে উড়িয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল রুশ সেনাবাহিনী। তবে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন তার প্রতিরক্ষামন্ত্রীকে নির্দেশ দেন স্টিল কারখানার ভেতরে থাকা সৈন্যদের চারদিক থেকে অবরুদ্ধ করে রাখার জন্য।
তবে তারা যাতে কোনোভাবেই পালিয়ে যেতে না পারে সেজন্য সতর্ক প্রহরা রাখা হয়েছে। পুতিনের নির্দেশ, ওই কারখানা থেকে একটি মাছিও যাতে পালাতে না পারে।
সেখানে আটকে থাকা সৈন্যরা যদি আত্মসমর্পণ করতে চায় তাহলে তাদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী আচরণ করারও নির্দেশ দিয়েছেন পুতিন। তবে কেউ হামলা চালালে তা প্রতিহত করা ও সমুচিত জবাব দেওয়ারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
এর আগে ক্রেমলিনে প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই সইগুসহ রুশ সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন পুতিন। সেখানে মারিউপোল করায়ত্ত্ব হওয়ার খবর তার সামনে উপস্থাপন করেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী। জবাবে পুতিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী সইগু এবং সেনাবাহিনীকে অভিনন্দন জানান। সামরিক অভিযানের মাধ্যমে মারিউপোল মুক্ত করাকে বিশাল অর্জন হিসেবে অভিহিত করেন তিনি।
রাশিয়ার দখলে যাওয়া ইউক্রেনের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় শহরটিতে এখনও বেশ কিছু বেসামরিক নাগরিক আটকা পড়ে আছে। তবে তারা নিরাপদে শহর ছাড়তে পারবে কিনা সে বিষয়ে কেউ নিশ্চিত নয়।
অন্যদিকে, ইউক্রেনের পূর্ব দিকে ৩০০ মাইল জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে যে যুদ্ধ হচ্ছে সেখানে রাশিয়ার পক্ষে আর কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি। তবে ইনস্টিটিউট ফর দি স্টাডি অফ ওয়ার অ্যানালিসিস জানিয়েছে, যুদ্ধে মস্কো সামান্য এগিয়েছে।
মন্তব্য