তুরস্ক ও সিরিয়ায় সোমবারের ভয়াবহ ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ৪,৩০০ ছাড়িয়েছে। উদ্ধারকর্মীরা মঙ্গলবার জীবিতদের উদ্ধারে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের গাজিয়ানতেপে সিরিয়া সীমান্তের কাছে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। গত এক শতাব্দীর মধ্যে এটি ছিল সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্পের একটি। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৮ভাগ। এটি স্থানীয় সময় ভোর সোয়া চারটার দিকে আঘাত হানে। গাজিয়ানতেপ শহরের কাছে এর গভীরতা ছিল মাত্র ১৭ দশমিক ৯ কিলোমিটার।
ভয়াবহ এই ভূমিকম্পে বিভিন্ন শহরে ৫ হাজার ৬শ’র বেশি ভবন ধসে পড়েছে। এর মধ্যে বেশ কিছু বহুতল আবাসিক ভবন রয়েছে। ভূমিকম্পের সময়ে লোকজন ঘুমিয়ে ছিল।
তুরস্কের ত্রাণ সংস্থা এএফএডি মঙ্গলবার বলেছে, কেবলমাত্র তুরস্কেই ২,৯২১ জন মারা গেছেন। সিরিয়ায় মৃতের সংখ্যা এক হাজার ৪৪৪ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। মোট প্রাণহানি ৪,৩৬৫ বলে নিশ্চিত করা হয়েছে।
মৃতের সংখ্যা আরো বাড়বে। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার কর্মকর্তাদের হিসেবে এ সংখ্যা ২০ হাজারে পৌঁছতে পারে। এদিকে তুরস্কে এ পর্যন্ত ১৪ হাজারেরও বেশি এবং সিরিয়ায় ৩,৪১১ জন আহত হয়েছে।
ইউক্রেন থেকে নিউজিল্যান্ড বিশ্বের অনেকগুলো দেশ সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে বরফ বৃষ্টি ও শুন্যের কাছাকাছি তাপমাত্রার কারণে সহায়তা কাজ ব্যাহত হচ্ছে।
এছাড়া কর্মকর্তারা বলছেন, বড়ো বড়ো বিমান বন্দর গুলো অকেজো হয়ে পড়েছে। এতে সহায়তার কাজ জটিল হয়ে পড়েছে। আরো রয়েছে তুষার ঝড় ও বরফ যা রাস্তায় চলাচলে বাধাগ্রস্ত করছে। এদিকে নগরীর আতঙ্কিত বাসিন্দারা হিমশীতল রাতে খোলা আকাশের নিচে রাত কাটিয়েছে। অনেকে ঘরে ফিরতে ভয় পাচ্ছে।
এরকমই একজন মোস্তফা কোয়েনকু (৫৫)। তিনি তার স্ত্রী ও পাঁচসন্তান নিয়ে গাড়িতে রয়েছেন।
তিনি বলেন, আমরা ঘরে যেতে পারছি না। সকলেই ভয়ে আছে। এদিকে বছরের পর বছর গৃহ যুদ্ধে ধ্বংস হওয়া সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে ভয়াবহ এই ভূমিকম্পে আহতদের নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ।
সিরিয়ার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের খবরে বলা হয়েছে, আলেপ্পো, লাটাকিয়া, হামা ও টারটাসে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে।
উল্লেখ্য, তুরস্ক পৃথিবীর অন্যতম ভূমিকম্প প্রবণ এলাকা। দেশটিতে ১৯৯৯ সালে শক্তিশালী এক ভূমিকম্পে ১৭ হাজার লোক নিহত হয়।
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য