দক্ষিণ কোরিয়ায় ভারী বৃষ্টিপাতে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে কমপক্ষে ২৬ জনের প্রাণহানি ও ১০ জন নিখোঁজ রয়েছে। রবিবার কর্মকর্তারা বলেছেন, উদ্ধারকর্মীরা বন্যায় একটি টানেলে আটকে পড়া মানুষের কাছে পৌঁছতে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন।
দক্ষিণ কোরিয়ায় গ্রীষ্ম মৌসুমে সবচেয়ে বেশী বন্যা হয়। গত চার দিন ধরে ভারী বৃষ্টিপাত হয়েছে, যার ফলে একটি বড় বাঁধ উপচে পড়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ভারী বর্ষণে ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে ও আরো ১০ জন নিখোঁজ রয়েছে। নিখোঁজদের বেশিরভাগই ভূমিধসে চাপা পড়েছে বা প্লাবিত জলাধারে ভেসে গিয়েছে।- বাসস
মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, উত্তর চুংচেং প্রদেশের চেওংজুতে ৪৩০ মিটার দীর্ঘ ভূগর্ভস্থ টানেলে আটকা পড়া প্রায় ১৫টি গাড়ি উদ্ধার করার জন্য সেখানে পৌঁছতে কর্মীরা এখনও পর্যন্ত লড়াই করছে।
ইয়োনহাপ নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, শনিবার সকালে বন্যার পানি খুব দ্রুত ভেতরে প্রবেশ করার কারণে সুড়ঙ্গটি ডুবে যায়। ইয়োনহাপ জানিয়েছে, রবিবার, সুড়ঙ্গে নিমজ্জিত একটি বাস থেকে পাঁচটি মৃতদেহ উদ্ধার করেছে, তবে এখনও সরকারিভাবে মৃতের সংখ্যায় অন্তর্ভুক্ত হয়নি।
নিহতদের মধ্যে ১৭ জন ও নিখোঁজদের মধ্যে নয়জন উত্তর গিয়ংসাং প্রদেশের এবং মূলত পাহাড়ী এলাকায় ব্যাপক ভূমিধসে লোকজনসহ ঘরগুলো চাপা পড়ে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, উত্তর গিয়ংসাং প্রদেশে একটি নদী উপচে পড়ায় কিছু লোক নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
বুধবার পর্যন্ত আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। কোরিয়া আবহাওয়া প্রশাসন আবহাওয়া পরিস্থিতি একটি ‘গুরুতর’ বিপদ ডেকে আনবে বলে সতর্ক করেছে।
গ্রীষ্মকালীন বর্ষণে দক্ষিণ কোরিয়া নিয়মিত বন্যার শিকার হয়, তবে দেশটি সাধারণত দুর্যোগ মোকাবিলায় ভালভাবে প্রস্তুত থাকায় মৃতের সংখ্যা তুলনামূলক কম হয়।
দেশটি গত বছর রেকর্ড ছাড়িয়ে বৃষ্টিপাত ও বন্যার কবলে পরলে ১১ জনেরও বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটে। অস্কার বিজয়ী কোরিয়ান ফিল্ম ‘প্যারাসাইট’ এর কারণে আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত সিউলের বেসমেন্ট অ্যাপার্টমেন্টে আটকা পড়ে মারা যাওয়া তিন ব্যক্তি মৃতদের অন্তর্ভূক্ত রয়েছে।
সরকার সে সময় চরম আবহাওয়ার জন্য জলবায়ু পরিবর্তনকে দায়ী করে জানায়, ১১৫ বছর আগে সিউল আবহাওয়ার রেকর্ড সংরক্ষণ শুরু হওয়ার পর থেকে ২০২২ সালের ভারী বৃষ্টিপাতে বন্যা ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ।
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য