২০২৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন নরওয়েজীয় লেখক জন ফসি। বুধবার বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টায় সাহিত্য শাখায় চলতি বছরের নোবেলজয়ী হিসেবে তার নাম ঘোষণা করেছে সুইডেনের রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি। ১৯০১ সাল থেকে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার প্রদান শুরু হয়। চলতি বছর এ শাখার ১১৪তম পুরস্কার জয় করলেন জন ফসি। বুধবার পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে জুরিদের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘জন ফসি তার নাটক এবং গদ্যসাহিত্যের মাধ্যমে তাদের ভাষা আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন, যারা কথা বলতে অক্ষম।’
নরওয়েজীয় ভাষার লিখিত রূপের দু’টি স্ট্যান্ডার্ড বা মানদণ্ড প্রচলিত আছে— নাইনর্স্ক এবং বোকমাল। জন ফসি তার সাহিত্য চর্চার জন্য বেছে নিয়েছেন নাইনর্স্ককে। সাধারণত প্রতি বছর একজন সাহিত্যিককে নোবেল পুরস্কারের জন্য চুড়ান্তভাবে মনোনীত করে নোবেল কমিটি। ইতিহাসে মাত্র চারবার এই পুরস্কার একাধিকজনের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে।
নাটক, উপন্যাস, কবিতা, প্রবন্ধ, শিশুসাহিত্য, অনুবাদ— এক কথায় সাহিত্যের প্রায় সব শাখায় বিচরণ করেছেন জন ফসি। তবে বিশেষ পারদর্শিতা দেখিয়েছেন নাটক ও উপন্যাসে। বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন নাট্যশালায় যেসব পশ্চিমা নাট্যকারদের নাটক সবচেয়ে বেশি প্রদর্শিত হয়, জন ফসি তাদের মধ্যে অন্যতম।
সাহিত্যিক থিম হিসেবে ‘অমীমাংসা’র প্রতি ঝোঁক রয়েছে ফসির। বিশেষ করে তার উপন্যাসের ক্ষেত্রে দেখা যায়— চরিত্রগুলো প্রায় সময়ই এমন পরিস্থিতিতে পৌঁছায়, যার কোনো প্রথাগত সুনির্দিষ্ট সমাধান নেই। ১৯৮৫ প্রকাশ হওয়া তার দ্বিতীয় উপন্যাস ‘স্টেংড গিটার’ থেকে এই থিমে সাহিত্য রচনা শুরু করেন তিনি।
ফসির আগে ১১৩ জন সাহিত্যে নোবেল জয় করেছেন। এই জয়ীদের মধ্যে নারীর সংখ্যা মাত্র ১৭ জন। ফসির পূর্বসূরী, অর্থাৎ ২০২২ সালে যিনি নোবেল পেয়েছিলেন, তিনি অবশ্য একজন নারী— ফ্রান্সের সাহিত্যিক অ্যানি এরনাক্স।
সবচেয়ে কম বয়সে সাহিত্যে নোবেল জয়ের কৃতিত্ব দেখিয়েছেন ব্রিটেনের ঔপন্যাসিক ও ছোট গল্পকার রুডইয়ার্ড কিপলিং। বিশ্ববিখ্যাত শিশুসাহিত্য ‘দ্য জাঙ্গল বুক’ লেখার স্বীকৃতি হিসেবে মাত্র ৪১ বছর বয়সে নোবেল জয় করেন কিপলিঙ।
সবচেয়ে বেশি বয়সে সাহিত্যে নোবেল পেয়েছিলেন ব্রিটিশ-জিম্বাবুইয়ান সাহিত্যিক ডরিস লেসিং। ২০০৭ সালে ৮৭ বছর বয়সে নোবেল জয় করেন তিনি। গত বছর সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন ফ্রান্সের সাহিত্যিক অ্যানি এরনাক্স।
সাহিত্যে নোবেলজয়ীদের পদকের পাশাপাশি পুরস্কার হিসেবে নগদ ১০ লাখ ডলার প্রদান করা হয়। ইতিহাসে ৩ জন সাহিত্যিকের নাম পাওয়া যায়, যারা প্রত্যাখ্যান করেছিলেন সাহিত্যের এই সর্বোচ্চ সম্মানজনক পুরস্কার। তারা হলেন— আর্নেস্ট হেমিংওয়ে, জ্যঁ পল সাঁত্রের এবং টনি মরিসন।
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য