টানা দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। ইসরায়েলি নির্বিচার এই হামলা থেকে বাদ যাচ্ছে না গাজার স্কুল, হাসপাতাল, মসজিদ ও গির্জাও। অবিরাম এই হামলায় গাজায় নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা আগেই ছাড়িয়েছে চার হাজার। আর এর মধ্যেই এবার অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে হামলার তীব্রতা আরও বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী।
রোববার (২২ অক্টোবর) এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী রোববার সন্ধ্যা থেকে গাজায় হামলার তীব্রতা আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে বলে ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ)-এর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হ্যাগারি জানিয়েছেন।
শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমরা (গাজা ভূখণ্ডে) আমাদের হামলা আরও তীব্র করব, যুদ্ধের পরবর্তী পর্যায়ে আমাদের বাহিনীর জন্য ঝুঁকি কমিয়ে আনব এবং আমরা আজ থেকেই আক্রমণ বাড়াতে যাচ্ছি।’ আর তাই গাজা শহরের বাসিন্দাদের ‘তাদের নিরাপত্তার জন্য আরও দক্ষিণে সরে যেতে’ আহ্বান জানিয়েছেন হ্যাগারি।
প্রসঙ্গত, মুসলিমদের তৃতীয় পবিত্র ধর্মীয় স্থান আল-আকসা মসজিদের পবিত্রতা লঙ্ঘন এবং অবৈধ বসতিস্থাপনকারীদের অত্যাচারের জবাব দিতে গত ৭ অক্টোবর ‘অপারেশন আল-আকসা ফ্লাড’ নামের একটি অভিযান চালায় ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। হামাসের এই অভিযানে কার্যত হতবাক হয়ে পড়ে ইসরায়েল।
হামাসের এই হামলায় নিহত হয়েছেন কমপক্ষে ১৪০০ ইসরায়েলি। নিহতদের মধ্যে ২৮৬ জন সেনাসদস্য রয়েছে বলে আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করা হয়েছে। হামাসের হামলায় আহত হয়েছেন আরও ৪ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি ইসরায়েলি। এছাড়া আরও দুই শতাধিক মানুষকে বন্দি করে গাজায় নিয়ে গেছে হামাস।
পরে হামাসের হামলার প্রতিশোধে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার সীমান্ত প্রাচীরের কাছে অবস্থান নেয় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর শত শত ট্যাংক। গাজায় অব্যাহত বিমান হামলার মধ্যেই এসব ট্যাংক গাজার কাছে নিয়ে আসা শুরু হয়। আশঙ্কা করা হচ্ছে— যে কোনও সময় গাজায় ইসরায়েলের স্থল অভিযান শুরু হতে পারে।
অবশ্য গত ৭ অক্টোবর থেকেই গাজায় বিমান হামলা চালানো শুরু করে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী। তাদের এ নির্বিচার হামলায় এখন পর্যন্ত ৪ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যার মধ্যে শিশুর সংখ্যাই ১ হাজার ৫০০ জনের বেশি। যদিও ইসরায়েল দাবি করছে তারা হামাসের অবকাঠামো লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে। তবে হামাসের যোদ্ধাদের চেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সেখানকার বেসামরিক মানুষ।
এই পরিস্থিতিতে ইসরায়েল শিগগিরই গাজা উপত্যকায় স্থল আক্রমণ শুরু করবে বলে ব্যাপকভাবে মনে করা হচ্ছে। তবে ঠিক কোন সময় এই অভিযান শুরু হবে তা এখনও অজানা।
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য