মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য রাখাইনে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর ২০১৭ সালের মতো আবারও সহিংসতা চালানো হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। মিয়ানমারে রোহিঙ্গা সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর ওপর নতুন করে সহিংসতার ঘটনা তুলে ধরে গত মঙ্গলবার প্রভাবশালী দুই থিঙ্ক ট্যাঙ্ক এই উদ্বেগের কথা জানিয়েছে। ফরাসি বার্তাসংস্থা এএফপি এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
পর্যবেক্ষকগোষ্ঠী ফরটিফাই রাইটস জানায়, তারা প্রত্যক্ষদর্শীদের যেসব সাক্ষাৎকার নিয়েছে, তাতে এটি স্পষ্ট হয়েছে যে আরাকান আর্মি চলতি মাসে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপরে ড্রোন ও মর্টার হামলা করেছে। বোমা হামলায় বাংলাদেশের সীমান্তে কাছে শতাধিক রোহিঙ্গা পুরুষ, নারী ও শিশু নিহত হয়েছে। গ্রুপটি বলেছে, বড় ধরনের এই হামলার আগে আরাকান আর্মি প্রথম ওই এলাকায় একটি নজরদারি ড্রোন পাঠায়। এতে স্পষ্ট যে, আরাকান আর্মি ইচ্ছাকৃতভাবে জনসমাগমের স্থানে হামলা চালিয়েছিল। তবে আরাকান আর্মি গত ৭ আগস্ট এক বিবৃতিতে এই হামলার দায় অস্বীকার করে। এর ১০ দিন পরে রাজনৈতিক শাখার মাধ্যমে আবার একই দাবি করে।
থিংকট্যাংক ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ বলছে, অনেক রোহিঙ্গা তাদের ওপর হামলা ও সহিংসতায় বিদ্রোহীগোষ্ঠীকে দায়ী করেছে। ২০১৭ সালে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর চালানো সহিংসতায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা দেশটি থেকে পালিয়ে প্রতিবেশী বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। পরে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চালানোর অভিযোগ এনে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালতে মামলা করে আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া। বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর মধ্যে লড়াইয়ের মধ্যেও রাখাইনে এখনো প্রায় ছয় লাখ রোহিঙ্গা রয়েছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস বলেছে, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী এবং আরাকান আর্মি- উভয়ের বিরুদ্ধেই রোহিঙ্গাদের গুরুতর নির্যাতনের তথ্য রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বিচারবহির্ভূত হত্যা, অপহরণ, জোরপূর্বক নিয়োগ, গ্রামে নির্বিচারে বোমা হামলা এবং অগ্নিসংযোগ। জাতিসংঘের অধিকারবিষয়ক প্রধান ভলকার তুর্ক বলেছেন, অতীতের অপরাধ ও ভয়াবহতার পুনরাবৃত্তি অবশ্যই রুখে দিতে হবে।
ভোরের আকাশ/মি
মন্তব্য