-->
শিরোনাম

নজিরবিহীন শ্রমিক ধর্মঘটে অচল যুক্তরাষ্ট্রের বন্দর

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
নজিরবিহীন শ্রমিক ধর্মঘটে অচল যুক্তরাষ্ট্রের বন্দর

মজুরি, পেনশন বৃদ্ধি এবং স্বাস্থ্যসেবা জোরদারসহ বেশ কিছু দাবিতে গত মঙ্গলবার থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটে নেমেছে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বন্দরের হাজার হাজার ডক শ্রমিক। প্রায় ৫০ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম বন্দরের কার্যক্রম এভাবে বন্ধ হল। আসন্ন মার্কিন নির্বাচনের আগ মুহুর্তে এই ধর্মঘটের ফলে মুদ্রাস্ফীতি আবার বাড়তে পারে। ধর্মঘট কয়েক সপ্তাহ চলতে থাকলে পণ্যের ঘাটতি দেখা দিতে পারে।প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে দিয়ে এই ধর্মঘটের কারণে দেশটির বাণিজ্য এবং অর্থনীতিতে বিঘ্ন সৃষ্টির শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন চাইলে বাড়তি আলোচনার জন্য ৮০ দিন পর্যন্ত ধর্মঘট স্থগিত করতে পারেন। তবে তিনি আপাতত কোনও পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন না বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউজ।

ইন্টারন্যাশনাল লংশোরমেনস অ্যাসোসিয়েশন (আইএলএ)- এর সদস্যরা মঙ্গলবার পূর্ব ও উপসাগরীয় উপকূলের ১৪টি প্রধান বন্দরে ওয়াকআউট করে মেইন থেকে টেক্সাসে কন্টেইনার চলাচল বন্ধ করে দেয়। ডয়েচে ভেলের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বন্দর এবং আন্তর্জাতিক লংশোরম্যান অ্যাসোসিয়েশনের প্রায় ৪৫ হাজার সদস্যের মধ্যকার চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। সোমবার আলোচনায় অগ্রগতির খবর পাওয়া গেলেও মঙ্গলবার থেকে শ্রমিকরা ধর্মঘট কর্মসূচি পালন শুরু করে। ৩৬টি বন্দরে এই ধর্মঘট ১৯৭৭ সালের পর ইউনিয়নের প্রথম ধর্মঘট।শ্রমিকরা ধর্মঘট বিষয়ে আন্তর্জাতিক শ্রম আইনের একটি বিবৃতি দেখিয়ে বলেছে, নিয়োগকর্তারা তাদের ন্যায্য ক্ষতিপূরণ দিতে অস্বীকার করেছে।

জানা গেছে, আগের চুক্তির অধীনে, একজন শ্রমিকের অভিজ্ঞতার উপর নির্ভর করে প্রারম্ভিক মজুরি ঘন্টা প্রতি ২০ ডলার থেকে ৩৯ ডলার পর্যন্ত ছিল। শ্রমিকরা অন্যান্য সুবিধাও পান, যেমন কন্টেইনার বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত বোনাস।তবে শ্রমিক ইউনিয়ন টানা ৬ বছর ধরে প্রতি বছরেই ঘণ্টাপ্রতি ৫ ডলার বাড়তি মজুরি দাবি করছে বলে জানিয়েছেন ড্যাগেট। আবার প্রারম্ভিক বেতনও ৩৯ ডলার থেকে বাড়িয়ে ৬৯ ডলার করার দাবি জানাচ্ছে ইউনিয়ন। এই হিসাবে শ্রমিকদের মজুরি ৭৭ শতাংশ বাড়ার কথা।

এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার সভাপতি হ্যারল্ড ড্যাগেট বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বন্দরে বিদেশি মালিকানাধীন সমুদ্রবাহী জাহাজ কোম্পানিগুলো বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার মুনাফা করলেও মার্কিন শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি দিচ্ছে না। তাই ধর্মঘটে যেতে বাধ্য হয়েছে তারা।

এদিকে, প্রাপ্য মজুরি ও অটোমেশনের বিরুদ্ধে সুরক্ষা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শ্রমিকরা। ধর্মঘট প্রত্যাহারে পদক্ষেপ নিতে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছে দুই শতাধিক ব্যবসায়িক সংগঠন। তবে তাতে কোনো সাড়া মেলেনি।

যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে দিয়ে এই ধর্মঘটের কারণে বাণিজ্য এবং অর্থনীতি বিঘ্নিত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

 

ভোরের আকাশ/রন

মন্তব্য

Beta version