জাপানের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে দীর্ঘ এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ নির্বাচনী ফলাফলের মুখোমুখি হয়েছে ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) নেতৃত্বাধীন জোট। গতকাল (২৭ অক্টোবর) অনুষ্ঠিত নির্বাচনের প্রাথমিক ফলাফলে দেখা গেছে, বিরোধী দলগুলো অর্ধেকেরও বেশি আসনে বিজয়ী হয়েছে। জোটে এলডিপির আসন সংখ্যা ১৯১, তাদের মিত্র দল কোমেইতোর সঙ্গে মোট আসন ২০৮-তে দাঁড়িয়েছে, যা সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য প্রয়োজনীয় ২৩৩ আসনের চেয়ে অনেক কম। সবচেয়ে বড় বিরোধী দল কনস্টিটিউশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (সিডিপি) এবার ১৪৩টি আসন পেয়েছে, আর সব বিরোধী দল মিলে ২৩৫টি আসনে জয়ী হয়েছে। নির্বাচনের সম্পূর্ণ ফলাফল আজকের মধ্যে প্রকাশিত হবে।
এবারের নির্বাচনে ভরাডুবির জন্য দলের আর্থিক কেলেঙ্কারির বিষয়টি বড় কারণ হিসেবে উঠে এসেছে। এ বছরের শুরুতেই এলডিপির কয়েকজন শীর্ষ নেতা তহবিল তছরুপের কারণে অভিযুক্ত হন, যা ভোটারদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ ও অবিশ্বাস তৈরি করে এবং দলের জনপ্রিয়তায় বড় ধস আনে। বিশ্লেষকদের মতে, গত এক দশকে এই প্রথম দলটি জনগণের এমন ‘কঠোর রায়’ পেয়েছে। এলডিপির জনপ্রিয়তা রেকর্ড ২০ শতাংশে নেমে আসার প্রেক্ষিতে জাপানের নবনিযুক্ত প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা দ্রুত নির্বাচন আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেন, যা শেষ পর্যন্ত দলের জন্য বুমেরাং প্রমাণিত হয়েছে।
নির্বাচনের ফলাফল সম্পর্কে ইশিবা বলেন, “ভোটারদের এই রায় আমরা বিনীতভাবে মেনে নেব।” তবে পদত্যাগের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়ে তিনি আরও জানান, “রাজনৈতিক নেতৃত্বের শূন্যতা এড়াতে আমি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে যেতে চাই।” তার মতে, দলের ভরাডুবির পেছনে আর্থিক কেলেঙ্কারি নিয়ে মানুষের সন্দেহ ও রাগ প্রভাব ফেলেছে, এবং তিনি অর্থ ও রাজনীতিতে মৌলিক সংস্কারের অঙ্গীকার করেন।
এবারের নির্বাচনে এলডিপি এবং জোটের মিত্র কোমেইতোর জন্য এই ফলাফলকে গত ১৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ভোরের আকাশ/রন
মন্তব্য