যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার পররাষ্ট্রনীতির প্রভাব পড়বে গোটা বিশ্বজুড়ে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, মার্কিন নির্বাচন, বিশেষ করে কমলা হ্যারিস বা ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়-বিজয় নিয়ে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল থেকে শুরু করে সাধারণ জনগণের হিসেব-নিকাশের শেষ নেই। এই হিসেব-নিকাশ আরও জোরালো হয়ে উঠেছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের এক টুইট বার্তার পর। গতকাল বুধবার ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্পর্কের নীতি দেখার অপেক্ষায় দেশবাসী। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সরকার অনেকটা ডেমোক্র্যাটিক নেতা এবং প্রশাসনকেন্দ্রিক হওয়ায় বিষয়টির আলোচনা আরও ব্যাপকতা পেয়েছে। মার্কিন পররাষ্ট্রনীতিতে বিশ্বে অনেক ক্ষেত্রেই বাংলাদেশকে ভারতের চোখে দেখার প্রবণতা বেশ লক্ষ্যণীয়। ট্রাম্প যেভাবে ব্যক্তিকেন্দ্রিক সম্পর্কে বিশ্বাসী, তাতে করে রাশিয়ার ভ্লাদিমির পুতিনের মতো নরেন্দ্র মোদিকেও তিনি সমর্থন করার সম্ভাবনা রয়েছে। সেক্ষেত্রে ভারতের প্রভাব বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন বিশ্লেষকরা।
সংশ্লিষ্ট কূটনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, ডেমোক্র্যাটিক নেতাদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। বিশেষ করে মার্কিন সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন ও তার স্ত্রী সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের সঙ্গে ড. ইউনূসের ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। সেই সূত্র ধরেই ডেমোক্র্যাটিক নেতাদের সঙ্গে তার সখ্যতা গড়ে ওঠে। বর্তমান প্রেসিডেন্ট বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সরকারের সম্পর্কের বৈরীতার জন্য ড. ইউনূসকে দায়ী করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার দলের নেতারা। বিষয়টি প্রকাশ পেয়েছে বিভিন্ন সময়ে। তাই রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর মার্কিন আশীর্বাদের মাত্রা হ্রাস পেতে পারে—এমন ধারণা আওয়ামী লীগ পন্থিদের। বাংলাদেশ নিয়ে মার্কিন অবস্থানের হেরফের হতে পারে। ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রেও নতুন বার্তাবরণ তৈরি হতে পারে। সুযোগ তৈরি হতে পারে আওয়ামী লীগের জন্যও। এমন আলোচনার মধ্যেই বাংলাদেশ নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকদের ব্যাখ্যা দিতে হয়েছে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিবকে। সব মিলিয়ে মার্কিন নির্বাচন নানা কারণে বাংলাদেশের জনগণের কাছে আলোচনার গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, গত ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মুখে ভারতে পালিয়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত ৮ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়াসহ বিভিন্ন কারণে বর্তমানে ভারতের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের সম্পর্কে অনেকটা ফাটল ধরেছে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে শক্ত অবস্থান নিয়েছে ভারত। বিভিন্ন সময়ে অন্তর্বর্তী সরকারের অনেক উপদেষ্টার বক্তব্য ও মন্তব্যে ভারতের প্রতি অসন্তোষ ও ক্ষোভ প্রকাশ পেয়েছে। নির্বাচনের কয়েকদিন আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির পক্ষে এবং অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্যটি আগুনের ফুলকি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। কারণ বাংলাদেশে এখন বিশেষ এক ধরনের সরকারব্যবস্থা চলছে। অভ্যুত্থান-পরবর্তী দ্রুততম সময়ে বিশেষ এ সরকারের প্রয়োজন ছিল পশ্চিমা সমর্থন। সেটি শুধু পাওয়া নয়, বেশ ভালোভাবেই অর্জন করেছে ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচিত হওয়ায় সেটিতে কোনো প্রভাব পড়বে কি না, তা নিয়ে বিশ্লেষণ চলছে বহুমাত্রায়।
সর্বশেষ সে আলোচনায় জ্বালানি সরবরাহ করেছে হঠাৎ করে নির্বাচনের আগে সাবেক প্রেসিডেন্ট এবং রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি এক্স বার্তা। যেখানে তিনি দাবি করেছেন, বাংলাদেশে এখন অরাজকতা চলছে। যে দাবিটি কয়েক মাস ধরে করে আসছে আওয়ামী লীগ। ট্রাম্প আরও দাবি করেছেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন চলছে। যেটি মূলত বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে মনেপ্রাণে অপছন্দ করা ভারতের দাবি। ভারত এবং দেশটির মিডিয়া বেশ চড়া সুরে দাবিটি করলেও সেটি শেষ পর্যন্ত বৈশ্বিক দৃষ্টি আকর্ষণ করেনি। কিন্তু ট্রাম্পের মন্তব্যের পর নতুন করে আলোচনা শুরুর সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
এর আগে বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো-বাইডেনের সঙ্গে ফোনালাপে মোদি বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের বিষয়টি জানিয়েছিলেন। মোদি নিজের এক্স বার্তায় সেটি প্রকাশও করেছেন। তবে এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ইতিবাচক কোনো সাড়া মেলেনি, যা কার্যত তাকে বেশ হতাশ করেছে। কিন্তু সেখানে ট্রাম্প নিজে থেকেই মোদির কথাকে সত্যায়িত করছেন। এটা বাংলাদেশ ইস্যুতে ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্র-ভারতের সম্পর্কে নতুন কোনো রাজনৈতিক মেরুকরণ কিনা, সেটা নিয়েও কথা উঠছে।
ডেমোক্রেটিক নেতাদের সঙ্গে ড. ইউনূসের সখ্যতা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের এ সরকারের সঙ্গে ডেমোক্রেটিক নেতাদের সখ্যতা বহু পুরোনো। সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন, তার স্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের সঙ্গে রয়েছে তার ব্যক্তিগত সম্পর্ক। বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো-বাইডেনের ওপর ডেমোক্রেটিক যে তিনজন শীর্ষ নেতার সবচেয়ে বেশি প্রভাব রয়েছে। তারা হলেন- বিল ক্লিনটন, হিলারি ও বারাক ওবামা। তাই ড. ইউনূস প্রশাসনের সব ধরনের সহায়তা নিশ্চিত করতে ক্লিনটন ও হিলারি ভূমিকা রাখবেন এটাই স্বাভাবিক। ট্রাম্পের নির্বাচনি ট্রান্সজিশন টিমের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির ভাতিজা রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়র ও ডোমোক্রেটিক দল পাল্টে এবার ট্রাম্পকে সমর্থন জানানো সাবেক কংগ্রেসম্যান তুলসি গ্যাবার্ড, যিনি ডানপন্থি কট্টর হিন্দুবাদী হিসেবে পরিচিত।বাংলাদেশকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বড় ধরনের মাথাব্যথা নিয়ে যারা উদ্বিগ্ন, অনেকেই মনে করেন সেখানে বড় ভূমিকা রাখে দেশটির অন্যতম মিত্র ভারত। ভারতকে চটিয়ে বাংলাদেশে অনেক কিছু করতে চাইলেও করতে পারে না যুক্তরাষ্ট্র। তবে বিশ্বস্ত বন্ধু শেখ হাসিনাকে হারিয়ে এবার ভারত বাংলাদেশের বিষয়ে কঠোর অবস্থান নিতে চাইলেও সেটা আটকে আছে যুক্তরাষ্ট্রের মনোভাবের কারণে। সেখানে পরিবর্তন আসতে পারে ডোনাল্ড ট্রাম্প পুনরায় নির্বাচিত হয়ে এলে- এমনটি ধারণা করা হচ্ছে।
ট্রাম্পের দলেও ড. ইউনূসের বন্ধু আছে : প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিবমার্কিন নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়ে আমেরিকার সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক আরও উন্নতির শিখরে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ডেমোক্রেটিক ও রিপাবলিক দুই দলেই ড. ইউনূসের বন্ধু আছে জানিয়ে প্রেস সচিব বলেন, ট্রাম্পের জয়ে সম্পর্ক আরও গভীর হবে বলে মনে করি আমরা।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইংয়ের সংবাদ সম্মেলনে সমসাময়িক নানা বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিষয়ে দেওয়া ট্রাম্পের টুইট সম্পর্কে জানতে চাইলে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম বলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন বাংলাদেশ ইস্যুতে টুইট করেছেন তখন তিনি প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ছিলেন। আমরা মনে করি, সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে উনাকে ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছে। প্রেসিডেন্ট হয়ে তিনি নিশ্চয়ই এসব খতিয়ে দেখবেন। এ দেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের খবর খুব বেশি অতিরঞ্জিত।
প্রেস সচিব বলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প কেন সেই টুইট করেছেন তা তিনি জানেন। এটা নিয়ে আমরা ইতোমধ্যে বলেছি। আর নতুন করে বলার কিছু নেই।
মার্কিন নির্বাচন ও হাসিনা -বিবিসিযুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের কিছুদিন আগে প্রকাশিত বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টানা ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ আর রাজনীতিতে ফিরতে পারবে? ফিরলে কীভাবে, কোন কৌশলে ফিরবে? এসব প্রশ্নের জবাব পেতে যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছেন শেখ হাসিনা। ওই নির্বাচন আওয়ামী লীগের কোনো সুযোগ তৈরি করে দিতে পারে। সুযোগের বিপরীতে হতাশার বার্তাও নিয়ে আসতে পারে মার্কিন মুলুকের নির্বাচন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সরকারের সম্পর্কের বৈরিতার বিষয়টি প্রকাশ পেয়েছে সময়ে সময়ে।
আওয়ামী লীগ মনে করছে, যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে ডেমোক্রেটিক শিবির জয় পেলে বাংলাদেশ নিয়ে তাদের অবস্থান পরিবর্তন হবে না এবং ভারত সরকারের সঙ্গেও যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্যমান সম্পর্ক অপরিবর্তিত থাকবে।
অন্যদিকে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প বিজয়ী হলে বাংলাদেশ নিয়ে মার্কিন অবস্থানের হেরফের হতে পারে। ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রেও নতুন বাতাবরণ তৈরি হতে পারে। সুযোগ তৈরি হতে পারে আওয়ামী লীগের জন্যও।
প্রবল গণআন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেওয়া আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা অভিযোগ করেছেন, তাকে উৎখাতের পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের মতো বিদেশি শক্তির হাত আছে। সেন্ট মার্টিন আর বঙ্গোপসাগর আমেরিকার হাতে ছেড়ে দিলে আমি ঠিকই ক্ষমতায় থাকতে পারতাম।
ভারতের সংবাদমাধ্যম দ্য প্রিন্ট লিখেছে, দেশে আওয়ামী লীগ সমর্থকদের উদ্দেশে একটি বার্তা পাঠিয়েছেন শেখ হাসিনা। সেখানেই তিনি ওই অভিযোগ করেছেন। এর আগে ১৫ বছর বাংলাদেশের ক্ষমতায় থাকাকালে একই ধরনের অভিযোগ বহুবার করেছেন শেখ হাসিনা। ২০২৩ সালের মে মাসে বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র হয়ত তাকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না।
আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা যা বলেন: যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের দু’দিন আগে বিবিসি বাংলাকে দেয়া সাক্ষাৎকারে যুক্তরাষ্ট্রের ইউলসন সেন্টারের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক বিশেষজ্ঞ এবং লেখক মাইকেল কুগেলম্যানের জানান, কমালা হ্যারিস জয়ী হলে বর্তমান সম্পর্কের ধারাবাহিকতা ও সামঞ্জস্য বজায় থাকবে, কিন্তু ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হলে পরিস্থিতি ভিন্ন হতে পারে।
তিনি মনে করেন, বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম দেশ, যেখানে যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে দু’দেশের সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আসতে পারে।
কুগেলম্যান বলেন, ‘আমার মনে হয় না ডোনাল্ড ট্রাম্প বর্তমান সম্পর্কের কাঠামোকে সমর্থন করবেন, যেখানে বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে উন্নয়ন, সংস্কার ও অন্যান্য সহায়তা বা সমর্থন করছে। ট্রাম্প ও তার প্রশাসন বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা প্রদানের উপর জোর দেয়ার মত সম্পর্ক রাখতে আগ্রহী হবে না।’
ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হলে বিশ্বজুড়েই আমেরিকার মানবিক সহযোগিতার জায়গা কমে আসতে পারে বলে মনে করছেন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবির।
সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের জন্য অনিশ্চয়তার জায়গা হিসেবে রোহিঙ্গা ইস্যুকে দেখছেন তিনি, কারণ জাতিসংঘের মাধ্যমে বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের জন্য যে সহায়তা আসে, তার একটা বড় অংশই যুক্তরাষ্ট্র থেকে। আমেরিকার ইতিহাসে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ঠিক প্রথাগত মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেখা যায়নি। তিনি যেভাবে বৈদেশিক নীতির জায়গাগুলো বিবেচনা করেন, সেটি ঘিরে অনিশ্চয়তাও থাকে।
যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস এ অ্যান্ড এম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মেহনাজ মোমেন বলেন, সাধারণত আমেরিকায় প্রেসিডেন্ট বদল হলেও বৈদেশিক নীতিতে খুব বড় পরিবর্তন হয় না। এর পিছনে যুক্তরাষ্ট্রের সংস্থা বা কাঠামোগুলোর একটা শক্তিশালী ভূমিকা থাকে। কিন্তু ট্রাম্পকে আমরা দেখেছি কিছু প্রচারণায় ইনস্টিটিউশনকে বদলে দেয়ার কথা বলছেন। সেটা হলে একটা বড় পরিবর্তন হতে পারে। যদিও বিষয়টি আদৌ কতদূর সম্ভব হবে বা পররাষ্ট্র নীতির জায়গায় প্রভাব ফেলবে তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে বলেই মনে করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্র নীতিতে বিশ্বে অনেক ক্ষেত্রেই বাংলাদেশকে ভারতের চোখে দেখার প্রবণতার কথা উল্লেখ করেন অনেকে। ট্রাম্প যেভাবে ব্যক্তিকেন্দ্রিক সম্পর্কে বিশ্বাসী, তাতে করে ভ্লাদিমির পুতিনের মতো নরেন্দ্র মোদিকেও তিনি সমর্থন করবেন বলে মনে করছেন মেহনাজ মোমেন। সেক্ষেত্রে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হলে ভারতের প্রভাব বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন মেহনাজ মোমেন।
ভোরের আকাশ/রন
মন্তব্য