-->

যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচনে হার, ডেমোক্র্যাট শিবিরে অন্তর্দ্বন্দ্ব

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচনে হার, ডেমোক্র্যাট শিবিরে অন্তর্দ্বন্দ্ব

যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের বড় জয়ে ডেমোক্র্যাট শিবিরে বইছে অন্তর্দ্বন্দ্বের ঝড়। তারা একে অন্যকে দোষারোপ করছেন। ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতা ও প্রতিনিধি পরিষদের সাবেক স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি হারের জন্য প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, গত মঙ্গলবারের নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটরা অনেক ভালো করতে পারতেন যদি বাইডেন আরও আগে প্রার্থিতা থেকে সরে দাঁড়াতেন। ভোটে এমন হার মেনে নিতে পারছেন না দলটির অনেক নেতাকর্মী। ডেমোক্র্যাটরা কংগ্রেসের উভয় কক্ষেরই নিয়ন্ত্রণ হারাতে যাচ্ছে।

পেলোসি দ্য নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেন, যদি বাইডেন আরও আগে সরে দাঁড়াতেন, তাহলে তারা হয়তো অন্য কোনো প্রার্থীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নিয়ে আসতে পারতেন। প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়া (প্রাইমারি) এগিয়ে নেওয়া যেত। এতে অনেক ডেমোক্র্যাট নেতার মধ্য থেকে একজনকে বেছে নেওয়া সম্ভব হতো।

একইভাবে কমলার জন্য অর্থদাতারাও বাইডেনকে দোষারোপ করছেন। তারা বলছেন, জয়ের জন্য সামর্থ্য অনুযায়ী তারা প্রচার ও চেষ্টা চালিয়ে গেছেন। কিন্তু জো বাইডেনই তাদের হারের একমাত্র কারণ। তবে কয়েকজন অনুদানদাতা বলেছেন, হারের পর কমলা নানা অজুহাত দেখাচ্ছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দাতা পলিটিকোকে বলেন, এসবের জন্য সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার উপদেষ্টারা দায়ী। কারণ, তারা প্রকাশ্যে বাইডেনকে সরানোর জন্য আওয়াজ তুলেছেন; তারা কমলাকে প্রার্থী হিসেবে চাননি।

পেনসিলভানিয়ার সিনেটর ও ডেমোক্র্যাট নেতা জন ফ্যাটারম্যান বলেন, বাইডেনের বিরুদ্ধে যারা ষড়যন্ত্র করেছেন, তাদের কারণেই এ হার। নিউইয়র্কের ডেমোক্র্যাট কংগ্রেসম্যান টম সৌজি বলেছেন, ‘রাজনৈতিকভাবে সঠিক’ হওয়ার যে চেষ্টা, সেটার কারণেই হেরেছেন ডেমোক্র্যাটরা। তবে নিউইয়র্কের আরেক কংগ্রেসম্যান বলছেন, কট্টর বামদের কারণেই দলের এ ভরাডুবি।

গত জুলাইয়ের শেষ দিকে চাপের মুখে প্রার্থিতা থেকে সরে দাঁড়ান বাইডেন। এর পরই ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলাকে প্রার্থী করা হয়। শুরুতে তিনি বেশ চমক দেখান এবং জনমত জরিপে ট্রাম্পকেও ছাড়িয়ে যান। কিন্তু শেষ দিকে তাঁর জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়ে। নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হলে দেখা যায়, বড় ব্যবধানে হার হয়েছে কমলার। বিশ্লেষকরা মনে করেন, পুরুষতন্ত্র এবং ট্রাম্পের যুদ্ধ বন্ধের প্রতিশ্রুতির কাছে তিনি টিকতে পারেননি। ট্রাম্প বিজয়ী হওয়ার পর প্রথম ভাষণেই বলেছেন, তিনি যুদ্ধ শুরু করতে যাচ্ছেন না; বন্ধ করতে যাচ্ছেন। বাইডেন-কমলার মেয়াদে মধ্যপ্রাচ্য ও ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু হয়।

সিএনএন জানায়, শুক্রবার ফ্লোরিডার মার-এ লাগোতে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন ট্রাম্প। এক পর্যায়ে তিনি বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেলসার সিইও ইলন মাস্ককে ফোন ধরিয়ে দেন। এ তিনজনের মধ্যে আলাপের বিস্তারিত জানা যায়নি। নিশ্চিত হওয়া যায়নি তারা ইউক্রেন নিয়ে মার্কিন নীতিতে কোনো পরিবর্তন এনেছেন কিনা।

ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের বিবৃতির বরাত দিয়ে এক্সিয়স অনলাইন জানায়, একই দিনে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ২০১৭ সালের পর এই প্রথম দুই নেতার আলাপ হয়। এ সময় ট্রাম্প গাজায় যুদ্ধ বন্ধে কাজ করার আশ্বাস দেন। এতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ফিলিস্তিনের সম্পর্কের বরফ গলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

রয়টার্স জানায়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন হোয়াইট হাউসের চিফ অব স্টাফ হিসেবে তাঁর নির্বাচনী প্রচারণার অন্যতম ব্যবস্থাপক সুসি ওয়াইলসকে বেছে নিয়েছেন। আগামী ২০ জানুয়ারি হোয়াইট হাউসে ফেরার আগে গুরুত্বপূর্ণ পদে তিনি এ সিদ্ধান্ত নিলেন। মার্কিন প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্ত গ্রহণে চিফ অব স্টাফ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় থাকেন।

 

ভোরের আকাশ/রন

মন্তব্য

Beta version