-->

ইরাকে মেয়েদের বিয়ের বয়স ৯ বছরে নেমে এসেছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ইরাকে মেয়েদের বিয়ের বয়স ৯ বছরে নেমে এসেছে

ইরাক একটি নতুন আইন সংশোধনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে, যা অনুযায়ী পুরুষরা ৯ বছর বয়সী মেয়েদের বিয়ে করতে পারবে। এছাড়াও, নারীদের বিবাহবিচ্ছেদ, সন্তানের অভিভাবকত্ব এবং উত্তরাধিকারের অধিকার থেকেও বঞ্চিত করার জন্য সংশোধন প্রস্তাব করা হয়েছে, বলে টেলিগ্রাফ জানিয়েছে। এই বিলটি নাগরিকদের পরিবার সংক্রান্ত বিষয়গুলো নিষ্পত্তির জন্য ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ বা নাগরিক বিচার বিভাগ যেকোনো একটি বেছে নেওয়ার সুযোগ দেবে।

শিয়া দলগুলোর জোট দ্বারা পরিচালিত রক্ষণশীল সরকার এই সংশোধনী পাশ করার উদ্যোগ নিয়েছে, যাতে "অনৈতিক সম্পর্ক" থেকে মেয়েদের রক্ষা করার উদ্দেশ্যে বলে তারা দাবি করেছে। আইনটির দ্বিতীয় সংশোধনী ১৬ সেপ্টেম্বর পাস করা হয়েছিল। "আইন ১৮৮" নামে পরিচিত এটি ১৯৫৯ সালে পশ্চিম এশিয়ার অন্যতম প্রগতিশীল আইন হিসেবে বিবেচিত হয়েছিল, যা ধর্মীয় গোত্র নির্বিশেষে ইরাকি পরিবারের জন্য একটি সামগ্রিক নিয়মাবলী প্রদান করেছিল।

জোট সরকার বলেছে যে প্রস্তাবিত সংশোধনীটি ইসলামী শরিয়া আইনের কঠোর ব্যাখ্যার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং এটি তরুণীদের "রক্ষা" করার লক্ষ্যেই করা হচ্ছে। পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকার কারণে সরকার এই আইনটি পাশ করার জন্য প্রয়াস চালাবে বলে আশা করা হচ্ছে, যদিও ইরাকি নারী গোষ্ঠীগুলো এর বিরোধিতা করছে। ইউনিসেফের মতে, ইরাক জুড়ে শিশুবিবাহের হার ইতিমধ্যেই উচ্চ। প্রায় ২৮% ইরাকি মেয়েদের ১৮ বছরের মধ্যে বিয়ে হয়ে যায় এবং প্রস্তাবিত সংশোধনীগুলো পরিস্থিতি আরও খারাপ করবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ইরাকে মানবাধিকার কর্মী ও বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে প্রস্তাবিত সংশোধনীগুলো নারীদের অধিকার মুছে দেবে এবং ধর্মকে অগ্রাধিকার দেবে।

প্রতিবেদনটিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে, এই সংশোধনী বাস্তবায়িত হলে ইরাক আফগানিস্তান এবং ইরানের মতো ইসলামিক শাসন ব্যবস্থার সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ হবে, যেখানে একজন ধর্মতত্ত্ববিদ দেশের সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করে।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলেছে যে এই সংশোধনী তরুণী মেয়েদের যৌন ও শারীরিক সহিংসতার ঝুঁকির মধ্যে ফেলবে এবং শিক্ষার ও চাকরির সুযোগও থেকে বঞ্চিত করবে।

 

ভোরের আকাশ/রন

মন্তব্য

Beta version