বিএনপির ১০ নেতাকর্মীর ৫ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড

আদালত প্রতিবেদক
বিএনপির ১০ নেতাকর্মীর ৫ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড
মুখ্য মহানগর আদালতে বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের একটি মামলায় অভিযুক্ত বিএনপির ১০ নেতাকর্মীকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

৯ বছর আগে রাজধানীর ভাষানটেক থানায় দায়ের করা বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের একটি মামলায় বিএনপির ১০ নেতাকর্মীর ৫ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন বিশেষ ট্রাইব্যুনাল। এ মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ১৪ জনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (১০ জানুয়ারি) ঢাকার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-৯ এর বিচারক মো. আমিরুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন।  ভোরের আকাশকে এ তথ্য জানান সংশ্লিষ্ট আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর কারিমা আক্তার।

দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন সুমন চন্দ্র, মো. জসিম, মো. আমিনুল ইসলাম, সোহেল, কাওসার, জুয়েল, আ. রহমান, শহীদ, মহসীন ও লিটন। তাদের প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত।

খালাসপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন ইসমাইল হোসেন, আজাদ হোসেন, বকুল হোসেন, নজরুল ইসলাম, আলতাফ হোসেন, নাড়ু জামাল, জিলাপী বাচ্চু, চিকু জামাল ওরফে চিকনা জামাল, জলিল, শামীম, কালা বাচ্চু, সিরাজুল ইসলাম, ফিরোজ খান ও আব্দুস সালামের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় খালাস দেন আদালত।

আসামি পক্ষের আইনজীবী মুহা. মাহবুবুর রহমান সুজন ভোরের আকাশকে বলেন, ‘জব্দ তালিকায় যে পুলিশের নাম উল্লেখ করা আছে তালিকার নিচে তার স্বাক্ষর নেই। এছাড়া মোট ১০ জনের মধ্যে ৬ জনের কাছে বিস্ফোরক দ্রব্য পাওয়া গেছে। কিন্তু, এর ওপর ভিত্তি করে সবাইকে এক সাজা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু, সবার এক সাজা হতে পারে না। আবার তারা বিএনপির ওই কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিল এটাও প্রমাণিত নয় কারণ, দলটিতে এদের কারো কোনো পদ-পদবি নেই। এ বিষয়ে আদালতের জেরায় জানতে চাইলে তদন্তকারী কর্মকর্তা কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। আমরা নিম্ন আদালতে ন্যায়বিচার পাইনি, আমরা উচ্চ আদালতে যাবো। আশা করি সেখানে ন্যায়বিচার পাবো।’

২০১৩ সালের ১৬ নভেম্বর নাশকতার অভিযোগ এনে আসামিদের বিরুদ্ধে ভাসানটেক থানায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলাটি দায়ের করেন ওই থানার উপ পরিদর্শক জাহিদুল ইসলাম।

মামলার অভিযোগপত্র থেকে জানা যায়, ‘২০১৩ সালের ১৬ নভেম্বর বিএনপিসহ ১৮ দল ঘোষিত কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ভাষানটেকে একটি বিক্ষোভ মিছিলের জন্য বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা ব্যানার ককটেলসহ সমবেত হয়। খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে যায়। পুলিশ সেখানে গিয়ে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ৫০/৬০ জন নেতাকর্মীকে দেখতে পায় । তারা পুলিশের উপস্থিতি দেখে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এসময় পুলিশ সেখান থেকে ১০ জনকে আটক করে। আটক হওয়া আব্দুর রহমান নামে এক আসামির কাছ থেকে তাঁতিদলের ব্যানার; সুমন, জসিম, আমিনুল, সোহেল, জুয়েলের কাছ থেকে ককটেল উদ্ধার করে। আটক আসামিরা পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, তারা এসব ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে জনমনে আতঙ্ক, জীবন ও সম্পত্তি বিনষ্ট করার জন্য একত্রিত হয়েছিল। তাদের সাথে আরও কয়েকজনও সেখানে ছিল। তারা কৌশলে পালিয়ে যায়।

মামলাটি তদন্ত করে একই থানার উপ পরিদর্শক মো. আসাদুজ্জামান ২০১৪ সালের ১ মার্চ আদালতে ২৪ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০১৭ সালের ১৩ এপ্রিল আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করেন আদালত। মামলাটির বিচার চলাকালে আদালত ১০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন। আসামিরাও তাদের পক্ষে চারজনের সাফাই সাক্ষ্য দেন।

মন্তব্য