-->

প্রবাসীকে হত্যা, স্ত্রীসহ তিনজনের যাবজ্জীবন

আদালত প্রতিবেদক
প্রবাসীকে হত্যা, স্ত্রীসহ তিনজনের যাবজ্জীবন
আদালত

সাইদ হাসান বাদল নামে এক যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসীকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তার স্ত্রী ও মিডফোর্ড হাসপাতালের এমএলএসএস শেফালীসহ তিনজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দিয়েছে ঢাকার একটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল। এসময় দণ্ডপ্রাপ্ত প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাভোগের আদেশও দেন আদালত।

মঙ্গলবার  ঢাকার ৪নং দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক জেসমিন আরা বেগম আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।

কারাদণ্ডপ্রাপ্ত অপর দুই আসামি হলেন শেফালীর আত্মীয় নয়ন ও আক্কাস বেপারী।

দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের পেশকার মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, রায়ের পর তাদের সাজা পরোয়ানা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল কাদের এবং বাদী পক্ষে নিজ খরচায় মামলাটিতে শুনানি করেন ব্যরিস্টার ফকরুল ইসলাম।

রায়ের সময় আসামিপক্ষের কোনো আইনজীবী দেখা যায়নি।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, মামলার ভিকটিম সাইদ হাসান বাদল (৪০) ১৯৯২ সাল থেকে ২০০৮ সালের ২ নভেম্বর পর্যন্ত স্যার সলিমুল্লাহ মিটফোর্ড হাসপাতালের অ্যাকাউন্টস সেকশনে অফিস সহকারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

রায়ের বিবরণ থেকে জানা যায়, সাইদ কর্মরত থাকাকালীন ১৯৯৯ সালে ওই হাসপাতালে কর্মরত এমএলএসএস শেফালীকে (৫০) গোপনে বিয়ে করেন। বিয়ের পর তাদের ঘরে একটি কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করে।

২০০৮ সালের অক্টোবর মাসে সাইদ যুক্তরাষ্ট্র চলে যায়। সেখানে থাকাকালে সাইদ হাসান তার মেয়ের খবচ বহন করলেও স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ছিল।

বিবরণে আরও জানা যায়, সাইদ ২০১২ সালের ১ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্র থেকে নগদ ১০ হাজার ইউএস ডলার ও মালামালসহ ঢাকায় ফেরেন। বিমানবন্দরে তাকে গ্রহণ করতে প্রাইভেট কার নিয়ে আসেন ভাতিজা জাহিদ হাসান। তবে সাইদের দেশে আসার খবর শুনে তার স্ত্রী শেফালীও বিমানবন্দরে উপস্থিত হন। ফেরার পথে ওই প্রাইভেট কারে শেফালীর দেওয়া শসা খান সাইদ। এরপর ওই গাড়িতেই সাইদকে ভাতিজার বাসার বদলে নিজের বাসায় যেতে বাধ্য করেন শেফালী। তারা মিটফোর্ড হাসপাতাল ব্লাড ব্যাংকের পূর্বদিকের টিনশেডে শেফালীর বাসায় যান তবে ভাতিজা জাহিদ হাসান নিচে গাড়িতে অপেক্ষা করেন। ভাতিজা জাহিদ হাসান দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করার পর শেফালী এসে তাকে জানায়, সাইদ অসুস্থ। তাকে মিটফোর্ড হাসাপাতালে নিতে হবে। এরপর তারা সাইদ হাসান বাদলকে অচেতন অবস্থায় হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসক সাইদকে মৃত ঘোষণা করেন।

আদালতে প্রমাণিত হয়, সাইদকে বাসার ভেতরে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। এ কাজে স্ত্রী শেফালীর সঙ্গে তার আত্মীয় আত্মীয় নয়ন ও আক্কাস বেপারী জড়িত থাকার অভিযোগও প্রমাণিত হয়।

এ ঘটনায় সাইদের ভাই ডা. শহিদ হাসান কোতোয়ালী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ২০১২ সালের ২৪ জুন আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা পড়ে। একই বছরের ৩০ আগস্ট অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। এ মামলায় বিভিন্ন সময়ে মোট ১৬ জন ট্রাইবুনালে সাক্ষ্য দেন। আসামি পক্ষে ৩ জন সাফাই সাক্ষ্য আদালতে উপস্থাপন করেন।

মন্তব্য

Beta version