খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও রাঙামাটি-পার্বত্য চট্টগ্রামের এই তিন জেলায় স্থাপিত সব অবৈধ ইটভাটা সাত দিনের মধ্যে বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এই আদেশ প্রতিপালন করে দুই সপ্তাহের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া লাইসেন্স ছাড়া পরিচালিত সব ইটভাটার তালিকা ৬ সপ্তাহের মধ্যে দাখিল করতে তিন জেলা প্রশাসক ও চট্টগ্রাম এলাকার পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি ফাতেমা নজীবের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) করা এক রিট আবেদনে এ আদেশ দেন আদালত। রিট আবেদনকারীর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।
আদালত অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশনার পাশাপাশি রুল জারি করেন। রুলে খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও রাঙামাটির বিভিন্ন স্থানে লাইসেন্সবিহীন পরিচালিত সকল ইটভাটা বন্ধে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তাকে কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং লাইসেন্সবিহীন ইটভাটা পরিচালনার জন্য অবৈধ ইটভাটার মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ বলেন, ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০১৩ (সংশোধিত ২০১৯) এর ৪ ধারা অনুসারে কোনো ইটভাটা লাইসেন্স ছাড়া চলতে পারবে না। চালালে ধারা ১৪ অনুসারে দুই বছরের সাজার বিধান আছে। তা সত্ত্বেও পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলা খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও রাঙামাটিতে লাইসেন্স ছাড়া ইটভাটা পরিচালিত হচ্ছে। অথচ এসব ইটভাটার বিরুদ্ধে প্রশাসন কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
তিনি বলেন, আইনের ৫ ধারায় পাহাড়ের মাটি কেটে ইটভাটায় ব্যবহার নিষিদ্ধ এবং তা করলে একই আইনের ১৫ ধারায় দুই বছরের সাজার বিধান রয়েছে। তারপরেও পাহাড়ের মাটি ইটভাটার কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহারের কারণে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে না। বনের গাছ কেটে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে মর্মে বিভিন্ন পত্রিকায় রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। এ কারণে পার্বত্য এলাকার অনেক পাহাড় ধ্বংস হচ্ছে এবং পরিবেশের ওপর মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি হয়েছে। বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তার কারণে প্রশাসনের চোখের সামনে লাইসেন্সবিহীন ইটভাটাগুলো পরিচালিত হচ্ছে- যা সম্পূর্ণ অবৈধ।
মন্তব্য