মিজান-বাছিরের বিরুদ্ধে ঘুষ লেনদেনের বহুল আলোচিত মামলার রায়ের তারিখ নির্ধারণ করেছেন আদালত। আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি এ মামলার রায় ঘোষণা করা হবে।
বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলমের আদালত দুদক ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের এ তারিখ ধার্য করেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলা তদন্ত করতে গিয়ে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ ওঠে দুদকের তদানীন্তন পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরের বিরুদ্ধে। পুলিশ বাহিনী থেকে বরখাস্ত ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল (ডিআইজি) মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলাটি তদন্ত করতে গিয়ে তার কাছ থেকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছেন বাছির এমন অভিযোগ তোলেন স্বয়ং মিজান। এসময় ঘুষ বিনিময়ের কথোপকথনের রেকর্ডও গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। এরপর বরখাস্ত করে গ্রেফতার করা হয় দুদকের পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরকে।
২০১৯ সালের ১৬ জুলাই দুদকের ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ দুদকের পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্লাহ বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। গ্রেফতার হন ডিআইজি মিজানও। ২০২০ সালের ১৯ জানুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার বাদী।
ওই বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কেএম ইমরুল কায়েশ। এরপর আদালত অভিযোগ গঠনের তারিখ ধার্য করে মামলাটি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বদলির আদেশ দেন। ২০২০ সালের ১৮ মার্চ আসামিদের অব্যাহতির আবেদন খারিজ করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। মামলার অভিযোগ পত্রে থাকা ১৭ সাক্ষীর মধ্যে ১২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত। গত ২৩ ডিসেম্বর মামলাটির সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়।
দায়ের মামলায় গত ৩ জানুয়ারি আত্মপক্ষ শুনানিতে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন মিজানুর রহমান এবং এনামুল বাছির। এরপর তারা ১২ জানুয়ারি আসামিদের লিখিত বক্তব্য জমা দেন। বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুই আসামির উপস্থিতিতে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলমের আদালত দুদক ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের এ তারিখ ধার্য করেন।
দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মোশাররফ হোসেন কাজল গণমাধ্যমকে বলেন, দুদক অভিযোগ প্রমাণে সক্ষম হয়েছে। আমরা আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা প্রত্যাশা করছি।
অন্যদিকে, ডিআইজি মিজানের আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী ও বাছিরের আইনজীবী সৈয়দ রেজাউর রহমান দাবি করেছেন, দুদক অভিযোগ প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছে। কাজেই তারা খালাস পাবেন।
প্রসঙ্গত ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি দমন প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় মামলাটির বিচার কাজ চলছে। এ ধারায় সর্বোচ্চ শাস্তি ৭ বছরের কারাদণ্ড, সঙ্গে আসামিদের জরিমানা করারও বিধান রাখা হয়েছে।
অন্যদিকে, অর্থ পাচারের সর্বোচ্চ সাজা ১২ বছরের কারাদণ্ড। সঙ্গে পাচার করা টাকা বাজেয়াপ্তসহ জরিমানার বিধান রয়েছে।
মন্তব্য