-->
শিরোনাম

আশুলিয়ায় পোশাককর্মী তানিম হত্যা মামলায় চারজনের মৃত্যুদণ্ড

আদালত প্রতিবেদক, ঢাকা
আশুলিয়ায় পোশাককর্মী তানিম হত্যা মামলায় চারজনের মৃত্যুদণ্ড
মো. তানিম। ফাইল ছবি

সাভারের আশুলিয়ার একটি পোশাক কারখানার অপারেটর মো. তানিম হত্যা মামলায় চারজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ইসমত আরা এ রায় দেন।

মামলার তদন্তে পাওনা ৪০ হাজার টাকা চাইতে গিয়ে তানিমের খুন হওয়ার বিষয়টি বেরিয়ে এসেছিল। দণ্ডিতরা হলেন পোশাক কারখানার কর্মী সোহেল রানা, ফরহাদ হোসেন, মো. আশিকুর রহমান ও মো. নজরুল ইসলাম। রায়ের পর তাদের ভীষণ বিমর্ষ দেখা যায়।

মামলার বিবরণ ও আদালত সূত্রে জানা যায়, নিহত তানিমের বাড়ি কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরের ভাগলপুরে। ২০১৭ সনের ২২ জুলাই সকাল ৯টার দিকে তিনি নিখোঁজ হন। তিন দিন পর তার লাশ আশুলিয়ার খাগান গ্রামের জঙ্গলে পাওয়া যায়। বেওয়ারিশ হিসেবে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায় ময়নাতদন্তের জন্য। তখন পুলিশ বাদী হয়ে একটি অপমৃত্যু মামলা করে।

এদিকে তানিমকে খুঁজে না পেয়ে তার স্ত্রী নূরুন্নাহার ১০ আগস্ট কাফরুল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। আর তানিমের খোঁজ না পেয়ে সোহেলসহ অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনের বিরুদ্ধে অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগ এনে ঢাকার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে মামলা করেন নিহতের মা সাইদা সুলতানা।

আদালত সেটি এজাহার হিসেবে গণ্য করার জন্য আশুলিয়া থানাকে নির্দেশ দেন। পরে তদন্তের সময় পুরো ঘটনা প্রকাশিত হয়। জানা যায়, সোহেলের কাছে ৪০ হাজার টাকা পাওনা ছিল তানিমের। সেই টাকা চাওয়ায় সোহেল ও তার সহযোগীরা তানিমকে অপহরণ করেন।

আসামিরা তানিমের কণ্ঠ মোবাইল ফোনে ধারণ করে তার মায়ের কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে টাকা আদায় করেন। টাকা দিলে ছেলেকে ফেরত দেওয়ার আশ্বাসও দেন তারা। কিন্তু তারা গলা কেটে তানিমকে হত্যা করেন।

সোহেল ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে হত্যার কারণ এবং অংশগ্রহণকারী সবার নাম বলে দেন।

আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী শাকিলা জিয়াসমিন মিতু ভোরের আকাশকে জানান, মামলায় ৩০ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৬ জনের সাক্ষ্য নিয়ে বিচারক এ রায় দিয়েছেন।

নথিপত্র ঘেঁটে জানা যায়, মামলায় ২০১৮ সালের ৫ নভেম্বর অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু হয়।

মামলায় হত্যার ঘটনায় তাদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে ৬ মাস করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

আর চাঁদাবজির অর্থাৎ টাকা আদায়ের ঘটনায় প্রত্যেককে ৫ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।

রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে নিহত তানিমের মা মামলার বাদী সাঈদা সুলতানা সাংবাদিকদের বলেন, ‘ন্যায়বিচার পেয়েছি, রায়টি যেন দ্রুত কার্যকর করা হয়।’

আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জানিয়েছেন, রায়ে তারা সন্তুষ্ট নন। এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাবেন তারা।

মন্তব্য

Beta version