-->
শিরোনাম

গৃহকর্মী নির্যাতন: জামিনেই থাকছেন গৃহকর্ত্রী

আদালত প্রতিবেদক
গৃহকর্মী নির্যাতন: জামিনেই থাকছেন গৃহকর্ত্রী

ফারজানা আক্তার  (১৫) নামে এক গৃহকর্মীকে নির্যাতনের অভিযোগে অভিযুক্ত গৃহকর্ত্রী সামিয়া ইউসুফ সুমি জামিনেই থাকছেন। গৃহকর্ত্রী সামিয়ার জামিন খারিজ করেননি আদালত।

সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার মহানগর হাকিম শুভ্রা চক্রবর্তীর আদালতে বাদী, ভিকটিম ও আসামির উপস্থিতিতে জামিন বাতিলের ওপর শুনানি হয়। শুনানি শেষে আদালত জামিন বাতিলের আবেদন খারিজ করে।

রাষ্ট্রপক্ষে স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর আজাদ রহমান ভোরের আকাশকে জানান, আসামির পক্ষে ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মামুন স্থায়ী জামিনের আবেদন করেন। বিচারক স্থায়ী

জামিনের আবেদন নাকচ করে আগামী ধার্য তারিখ পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করেছেন।

তিনি জানান, গত ৩১ জানুয়ারি দাখিল করা জামিন বাতিলের আবেদনের ওপর রাষ্ট্রপক্ষে আজাদ রহমান এবং বাদীপক্ষের ব্যক্তিগত আইনজীবী জাহিদুর রহমান মিয়া ও আরিফুল ইসলাম শুনানি করেন। শুনানি শেষে আদালত

জামিন বাতিলের আবেদনের বিষয়ে আজ শুনানির জন্য রাখেন।

আসামিপক্ষে আইনজীবী মিজানুর রহমান মামুন শুনানিতে বলেন, আসামি জামিন পাওয়ার পর আইনী ব্যত্যয় ঘটাননি, ফলে তার জামিন বাতিলের কোনো কারণ নাই। তিনি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তিনি এই মামলার চূড়ান্ত

বিচার (ট্রায়াল) ফেস করবেন। কাজেই জামিন বাতিলের মতো কোনো বিষয় থাকতে পারে না। জামিন পেয়ে তিনি জামিনের কোনো শর্তভঙ্গ করেননি।

শুনানি শেষে গৃহকর্মী ফারজানা আক্তারের বাবা বিল্লাল হোসেন সংবাদিকদের বলেন, আসামির লোকজন আমার কাছ থেকে কাগজে সই নিয়েছে। সেই কাগজে নাকি লিখেছে, অভিযোগ সত্য নয়, আমার জামিনে আপত্তি নাই।

সেই কাগজ দেখিয়ে নাকি জামিন নিছে। আমি লেখাপড়া জানি না। কী লেখা ছিল জানি না। আমরা আদালতে জামিন বাতিলের আবেদন করেছিলাম। কিন্তু আদালত বাতিল করে নাই। এর আগে, গত ২৪ জানুয়ারি গৃহকর্ত্রী সামিয়া

ইউসুফ সুমির জামিন মঞ্জুর করে আদালত।

গৃহকর্মী ফারজানা গত ১৭ জানুয়ারি থেকে ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৩৫ দিন রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন।

মামলায় বিল্লাল হোসেন অভিযোগ করেন, ফারজানাকে ২০১৫ সালে মাসিক তিন হাজার টাকার বিনিময়ে সামিয়ার বাসায় কাজে দেয় পরিবার। পরবর্তীতে বিভিন্ন সময় ফারজানা পরিবারকে জানায়, সামিয়া তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে, মারধর করে এবং খাবার দেয় না। গত ১৭ জানুয়ারি সামিয়া ফোনে ফারজানার বাবাকে জানায়, তার মেয়ে খুব অসুস্থ। এরপর সেদিনই স্ত্রীকে নিয়ে বিল্লাল হোসেন ওই বাসায় গিয়ে ফারজানাকে অচেতন অবস্থায় দেখতে পান। অন্যদের সহায়তায় মেয়েকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান।

কিছুটা সুস্থ হলে ফারজানা তাকে জানান, কাজে যোগদান করার পর থেকেই সামিয়া ফারজানাকে বিভিন্ন তুচ্ছ কারণে মারধর করতেন। পেটের দায়ে সে সকল অত্যাচার নীরবে সহ্য করে আসছিল।

গত ১৫ জানুয়ারি ঘর গোছানো ও বাসনপত্র ভেঙে ফেলার মিথ্যা অভিযোগে এবং কাজে দেরি হওয়ার তুচ্ছ অজুহাতে সামিয়া ক্ষিপ্ত হয়ে ফারজানাকে লাঠি দিয়ে মারধর শুরু করে।

এক পর্যায়ে লোহার খুন্তি গরম করে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছ্যাঁকা দেয়।

মন্তব্য

Beta version