দুই কিশোরী ধর্ষণের পৃথক মামলায় দুই জনের যাবজ্জীবন

নিজস্ব প্রতিবেদক
দুই কিশোরী ধর্ষণের পৃথক মামলায় দুই জনের যাবজ্জীবন

রাজধানীর পৃথক দুই ঘটনায় ৭ম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে ও আরেক কিশোরীকে ধর্ষণের দায়ে দুই আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন ঢাকার একটি ট্রাইব্যুনাল।

মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮ এর বিচারক বেগম মাফরোজা পারভীন আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় ঘোষণা করেন।

শিক্ষার্থীকে অপহরণের পর ধর্ষণ মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন সাইফুল ইসলাম। ধর্ষণের দায়ে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি দুই লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে তাকে আরও ৬ মাস কারাভোগ করতে হবে। আর অপহরণের দায়ে তাকে আরও ১৪ বছর সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।

আর কিশোরীকে ধর্ষণ মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেন-সাদ্দাম হোসেন শুভ। তাকেও দুই লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আর ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত।

রায় ঘোষণা শেষে দুই আসামিকে সাজা পরোয়ানা দিয়ে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

এ ট্রাইব্যুনালের পেশকার মোকলেছুর রহমান সাজার বিষয়টি ভোরের আকাশকে জানান।

শিক্ষার্থী ধর্ষণ মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, স্কুলে যাওয়া আসার পথে ওই শিক্ষার্থীকে প্রেমের প্রস্তাবসহ বিয়ের প্রলোভন দেয় সাইফুল ইসলাম। ২০১৫ সালের ৫ জুন সাইফুল এবং তার মা কহিনুর ভিকটিমের বাসায় গিয়ে তাকে বাসা থেকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। বাসায় থাকা ৩৭ হাজার টাকা ও ৩৮ হাজার টাকার স্বর্ণও তারা নিয়ে যায়। এ ঘটনায় ওই শিক্ষার্থীর বাবা ১০ জুন শাহআলী থানায় মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে সাইফুলকে অভিযুক্ত করে ওই বছরেরই ৩১ আগস্ট আদালতে অভিযোগ পত্র জমা দেন শাহ আলী থানার উপ পরিদর্শক রবিন চন্দ্র মণ্ডল। সাইফুলের মায়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে অব্যাহতির আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। পরে সাইফুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। মামলাটির বিচার চলাকালে আদালত ৮ জন সাক্ষীর মধ্যে চারজনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।

কিশোরী ধর্ষণ মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ঘটনার চার বছর আগে তার এক বন্ধুর মাধ্যমে সাদ্দাম হোসেন শুভর সাথে ওই কিশোরীর সাথে পরিচয়ের সূত্র ধরে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বাসায় কেউ না থাকায় ২০১৭ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি শুভ ওই কিশোরীকে তার হাতিরপুলের বাসায় নিয়ে ধর্ষণ করে। এরপর ওই ঘটনা ফাঁস করে দেওয়ার হুমকি দিয়ে আরও কয়েকদফা তাকে ধর্ষণ করে শুভ। এরপর তাকে এড়িয়ে চলা শুরু করে। শুভর ভাই সুমন ও এক বোন ওই কিশোরীকে ফোনে বিভিন্ন হুমকি দেয়। এরপর ১৯ এপ্রিল শুভ ওই কিশোরীকে ঢাকা ছাড়ার হুমকি দেয়। এ ঘটনায় ওই কিশোরী ১ জুন শাহবাগ থানায় তিন জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে শুভকে অভিযুক্ত করে ২০১৮ সালের ২৩ জানুয়ারি অভিযোগ পত্র জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার পরিদর্শক আবুল কালাম আজাদ। তবে শুভর ভাই সুমন ও বোনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের অব্যাহতির আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। এরপর শুভর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করেন আদালত। মামলাটির বিচার চলাকালে আদালত ৯ জন সাক্ষীর মধ্যে চারজনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।

মন্তব্য