-->
শিরোনাম

ড. আজাদ ঠাণ্ডার কারণে ভদকা খান, মারা যান হাইপার টেনশনে: আসামিপক্ষের আইনজীবী

নিজস্ব প্রতিবেদক
ড. আজাদ ঠাণ্ডার কারণে ভদকা খান, মারা যান হাইপার টেনশনে: আসামিপক্ষের আইনজীবী
ড. হুমায়ুন আজাদ হত্যা মামলায় আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহাম্মদের প্রতিক্রিয়া

ড. হুমায়ুন আজাদ হত্যা মামলার রায় মেনে নিতে পারেননি আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহাম্মদ। তার ভাষ্য, হুমায়ুন আজাদের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে এবং তিনি হাইপার টেনশনে মারা যান।

তার দাবি, হত্যা মামলা হওয়ার পরও কোনো মেডিক্যাল সাক্ষীর জবানবন্দি এই মামলায় নেওয়া হয়নি। আমরা আদালতকে বারবার বলেছিলাম যেহেতু এটা ৩০২ ধারার মামলা তাই ডাক্তারকে সাক্ষী হিসেবে আনা হোক। উনারা চেষ্টা করেছেন, কিন্তু রাষ্ট্র আনতে ব্যর্থ হয়েছে। সব প্রটোকল ব্যবহার করেছে কিন্তু রাষ্ট্রপক্ষ সাক্ষী আনতে পারেনি। পোস্ট মর্টেমের (ময়না তদন্ত) ফটোকপি যেটা পেয়েছি তাতে দেখা যাচ্ছে স্যারের পাকস্থলীতে অ্যালকোহল পাওয়া গেছে। যেটাকে আমরা ভদকা বলি। যেহেতু জার্মানি ঠাণ্ডার দেশ, তাই জীবন বাঁচাতে তিনি অ্যালকোহল গ্রহণ করে থাকতে পারেন। আমরা আদালতকে বলেছি উনার ন্যাচারাল ডেথ (স্বাভাবিক মৃত্যু) হয়েছে এবং উনি মারা গেছেন হাইপার টেনশনে।

ফারুক আহাম্মদ আরো বলেন, আঘাতের কারণে মারা গেছেন এ কথা বলেনি আদালত। ছয় মাস পরে তিনি (ড. হুমায়ুন আজাদ) মারা গেছেন, তাই (দণ্ডবিধি) ৩০২ এর ধারায় এ মামলা হবে না। ড. আজাদ চিকিৎসাধীন ছিলেন এবং তিনি সুস্থ হয়ে ঠাণ্ডার কারণে মারা গেছেন। কিন্তু, বিচারক ভালমতো বিষয়গুলো পর্যালোচনা না করেই আসামিদের সাজা দিয়েছেন।

এরপরে আইনজীবী ফারুক আহাম্মদ অনুযোগের কণ্ঠে বলেন, ‘মামলা হলেই ফাঁসি দিতে হবে এ ধরনের ট্রেন্ড থাকলে আসামিপক্ষে মামলা পরিচালনা করা সম্ভব না। দেখা যায় নিম্ন আদালত থেকে ফাঁসি হয়, আর উচ্চ আদালতে গিয়ে খালাস পায়। অনেক সময় নিম্ন আদালতের বিজ্ঞ বিচারকরাও তাদের রায়ের জন্য গিয়ে উচ্চ আদালতে ক্ষমা চান। বিচারক, যারা বিচার করবেন তারা যেন (আসামি) যতটুকু দোষী এবং যতটুকু (তার) দোষ প্রমাণ হয় সে অনুযায়ী সাজা দেন। একজন নির্দোষ ব্যক্তিকে সাজা দেওয়া কখনো কাম্য নয়।’

আসামিপক্ষের আইনজীবী আরো বলেন, ‘‘২০০৪ সালের ৮ মার্চ হুমায়ুন আজাদ স্যার তদন্ত কর্মকর্তার (আইও) কাছে সাক্ষী দিয়েছেন, ‘আমাকে যিনি প্রথমে হাতুড়ি দিয়ে বারি (আঘাত) মারে তিনি আমার চেয়ে দেড় বছরের বড়।’ তখন স্যারের বয়স ছিল ৫৬, তাহলে যে আঘাতটা করেছে তার বয়সটা হবে ৫৭ বা ৫৮। আর আমাদের আসামির বয়স ২৬ থেকে ২৭, এটাও মাননীয় আদালত বিবেচনায় নেননি। মাননীয় আদালত আমাদের কোন যুক্তিকে গ্রহণ না করে সাজা দিয়েছেন। এই রায়ে আমরা মর্মাহত ও সংক্ষুব্ধ।’’

উল্লেখ্য, প্রথাবিরোধী লেখক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক ড. হুমায়ুন আজাদ হত্যা মামলায় চার আসামির মৃত্যুদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানার রায় ঘোষণার আদেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকার চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আল-মামুন এর আদালত এই রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন জেএমবির শুরা সদস্য মিজানুর রহমান ওরফে মিনহাজ ওরফে শফিক, আনোয়ার আলম ওরফে ভাগ্নে শহিদ, সালেহীন ওরফে সালাহউদ্দিন ও নূর মোহাম্মদ ওরফে সাবু।

আরো পড়ুন:

ঘাতকের আঘাতেই ড. হুমায়ুন আজাদের মৃত্যু: রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী

হুমায়ুন আজাদ হত্যা: ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড

মামলার নথিতে হুমায়ুন আজাদের মৃত্যুর কারণ হিসেবে যা আছে

মন্তব্য

Beta version