-->
সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ

হাজি সেলিমের সাজা বাড়াতে দুদকের আপিল

নিজস্ব প্রতিবেদক
হাজি সেলিমের সাজা বাড়াতে দুদকের আপিল

সম্পদের তথ্য গোপন করার অভিযোগ থেকে সরকার দলীয় সংসদ সদস্য হাজী মো. সেলিমকে দেওয়া হাইকোর্টের খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন(দুদক)।

আপিল বিভাগের সংশ্লিস্ট শাখায় এ আবেদন দাখিল করা হয়েছে। এই আপিল দাখিল করার তথ্য নিশ্চিত করেছেন দুদকের আইনজীবী অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান।

অবৈধভাবে সম্পদ অর্জন ও দুদকের কাছে সম্পদের তথ্য গোপন করার অভিযোগের মামলায় নিম্ন আদালত ঢাকা-৭ আসনের সংসদ সদস্য হাজি সেলিমের ১৩ বছরের (১০ বছর ও ৩ বছর) কারাদণ্ড হয়।

একইসঙ্গে ২০ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের দায়ে ১০ বছর কারাদণ্ড ও সম্পদের তথ্য গোপন করার দায়ে ৩ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

এ রায়ের বিরুদ্ধে হাজি সেলিমের করা আপিলের ওপর শুনানি শেষে তাকে সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ থেকে খালাস দিয়ে হাইকোর্ট রায় দেন। তবে অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের দায়ে দেওয়া ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং ১০ লাখ টাকা জরিমানার সাজা বহাল রাখেন হাইকোর্ট।

এ অবস্থায় সম্পদের তথ্য গোপন করার অভিযোগ থেকে খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছে দুদক।

অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৪ অক্টোবর হাজী সেলিমের বিরুদ্ধে লালবাগ থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

এ মামলায় ২০০৮ সালের ২৭ এপ্রিল এক রায়ে দুদকের কাছে সম্পদের তথ্য গোপন করার দায়ে তিন বছর এবং অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের দায়ে ১০ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

উভয় সাজা একটির পর একটি কার্যকরের আদেশ থাকায় তার মোট ১৩ বছরের (১০ বছর ও ৩ বছর) কারাদণ্ড হয়। একইসঙ্গে ২০ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

এ রায়ের বিরুদ্ধে ২০০৯ সালের ২৫ অক্টোবর হাইকোর্টে আপিল করেন হাজী সেলিম। ২০১১ সালের ২ জানুয়ারি হাইকোর্ট এক রায়ে হাজী সেলিমের সাজা বাতিল করে তাকে খালাস দেন। এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আপিল করে দুদক।

আপিল বিভাগ ২০১৫ সালের ১২ জানুয়ারি এক আদেশে হাইকোর্টের রায় বাতিল করেন এবং পুনরায় হাইকোর্টে শুনানির নির্দেশ দেন। কিন্তু গত প্রায় ৬ বছরেও কোনো পক্ষই এ আপিলের ওপর শুনানির উদ্যোগ নেয়নি।

নৌবাহিনীর এক কর্মকর্তাকে মারধর করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে হাজী সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিমকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপরই হাজী সেলিমের মামলার বিষয়ে দুদকের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এ অবস্থায় হাজী সেলিমের আপিলের ওপর হাইকোর্টে শুনানির জন্য উদ্যোগ নেয় দুদক।

এরই ধারাবাহিকতায় শুনানি শেষে গতবছর ৯ মার্চ রায় ঘোষনা করেন হাইকোর্ট। রায়ে শুধুমাত্র অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের দায়ে ১০ বছর কারাদণ্ড ও দশ লাখ টাকা জরিমানার আদেশ বহাল রাখা হয়। আর সম্পদের তথ্য গোপন করার অভিযোগ থেকে খালাস দেওয়া হয় তাকে।

এরও একবছর পর গত ১০ ফেব্রুয়ারি পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। এ অবস্থায় গত ২৫ এপ্রিল রায়ের কপি পাঠানো হয় নিম্ন আদালতে। রায়ের শর্তানুযায়ী আগামী ৩০ দিনের মধ্যে অর্থাৎ ২৫ মে’র মধ্যে হাজী সেলিমকে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হবে।

হাজি সেলিমের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাঈদ আহমেদ রাজা জানান, আগামী ১৬ মে’র পর যেকোনো দিন হাজি সেলিম নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পন করবেন।

মন্তব্য

Beta version