দেশের আটটি ভোজ্যতেল পরিশোধনকারী কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করেছে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন। জাতীয় স্বার্থে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে কমিশন বুধবার এই মামলা করেছে।
প্রতিযোগিতা কমিশন আইনের ১৫ এবং ১৫ (২) ধারা অনুযায়ী এই ৮ কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতিযোগিতা কমিশন আইনের ১৫ (২) এর ‘খ’ ধারা অনুযায়ী, উৎপাদন, সরবরাহ, বাজার, কারিগরি উন্নয়ন, বিনিয়োগ বা সেবার সংস্থানকে সীমিত বা নিয়ন্ত্রণ করার অভিযোগ আনা হয়েছে এই আটটি কোম্পানির বিরুদ্ধে।
কমিশন আইনের ১৫ ধারায় বলা হয়েছে, ‘কেউ পণ্য বা সেবার উৎপাদন, সরবরাহ, বিতরণ গুদামজাতকরণ বা অধিগ্রহণ-সংক্রান্ত কোনো চুক্তিতে বা যড়যন্ত্রমূলক যোগসাজশে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে আবদ্ধ হতে পারবে না।
এমনটি করার মাধ্যমে বাজারে বিরূপ প্রভাব, মনোপলি বা ওলিগোপলি অবস্থার সৃষ্টি করলে, কমিশন আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে মামলা এবং অন্যান্য ব্যবস্থা নিতে পারবে।’
ভোজ্যতেল পরিশোধনকারী যে আট কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, সেগুলো হচ্ছে- সিটি এডিবল ওয়েল লিমিটেড, বাংলাদেশ এডিবল ওয়েল লিমিটেড (বিইওএল), মেঘনা ও ইউনাইটেড এডিবল ওয়েল রিফাইনারি লিমিটেড, বসুন্ধরা ওয়েল রিফাইনারি মিল, শবনম ভেজিটেবল ওয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, এস আলম সুপার এডিবল ওয়েল কোম্পানি লিমিটেড, প্রাইম এডিবল ওয়েল লিমিটেড এবং গ্লোব এডিবল ওয়েল লিমিটেড।
আগামী ১৮ মে বুধবার সিটি এডিবল ওয়েল, বাংলাদেশ এডিবল ওয়েল, মেঘনা ও ইউনাইটেড এডিবল ওয়েল রিফাইনারি লিমিটেড ও বসুন্ধরা ওয়েল রিফাইনারি মিল- এই চার কোম্পানি এবং ১৯ মে বৃহস্পতিবার শবনম ভেজিটেবল ওয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ, এস আলম সুপার এডিবল ওয়েল, প্রাইম এডিবল ওয়েল এবং গ্লোব এডিবল ওয়েল লিমিটেড— এই চার কোম্পানিকে শুনানিতে হাজির হওয়ার জন্য নোটিশ পাঠিয়েছে প্রতিযোগিতা কমিশন।
কমিশনের চেয়ারম্যান বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব মফিজুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, শুনানির পর কমিশনের নিজস্ব প্রক্রিয়ায় কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে হবে।
সূত্র জানায়, কমিশনের অনুসন্ধান দলের প্রতিবেদন ও অন্যান্য বিষয়াদি পর্যালোচনায় গত মঙ্গলবার প্রতিযোগিতা কমিশনের সভায় সর্বসম্মতভাবে প্রত্যেকের বিরুদ্ধে মামলার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সভার সিদ্ধান্তমতে, গত বুধবার প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে পৃথক পৃথক মামলা দায়ের করা হয়।
এদিকে, প্রতিযোগিতা কমিশনের আইনে কোনো প্রতিষ্ঠান দোষী সাব্যস্ত হলে আগের তিন বছরে ওই প্রতিষ্ঠান যে পরিমাণ লেনদেন বা পণ্য বিক্রি করেছে, তার ওপর সর্বনিম্ন ১ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ পর্যন্ত জরিমানা করার নিয়ম আছে।
উল্লেখ্য, সরকার গত ৫ মে বোতলজাত সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৯৮ টাকা, প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল ১৮০ টাকা এবং প্রতি লিটার পাম তেল ১৭২ টাকা নির্ধারণ করে সরকার।
মন্তব্য