দালাল প্লাস গ্রাহকদের পেমেন্ট গেটওয়েতে আটকে থাকা এক কোটি উনচল্লিশ লক্ষ টাকা ফেরত চেয়ে রিট

নিজস্ব প্রতিবেদক
দালাল প্লাস গ্রাহকদের পেমেন্ট গেটওয়েতে আটকে থাকা এক কোটি উনচল্লিশ লক্ষ টাকা ফেরত চেয়ে রিট

ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান দালাল প্লাসের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতসহ বিভিন্ন অভিযোগের তদন্ত এবঙ গ্রাহকের স্বার্থ রক্ষায় অবিলম্বে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট আবেদন দাখিল করা হয়েছে। ৪১ জন গ্রাহকের পক্ষে রিট দাখিল করেছেন সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব।

 

রিট আবেদনে বাণিজ্য সচিব, অর্থ সচিব, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব, দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ ব্যংকের গর্ভনর, নগদ, বিকাশ, এস এস এল কমার্স, সূর্য পে পেমেন্ট গেটওয়ে সহ ১৬ জনকে বিবাদী করা হয়েছে।

 

রিট আবেদনে বলা হয়, দালাল প্লাস এর গ্রাহক মোরশেদ নোমানসহ ৪১ জন গ্রাহক গতবছর মে, জুন, জুলাই মাসে বিভিন্ন পণ্য ক্রয়ের জন্য টাকা পরিশোধ করে এখন সর্বশান্ত। টাকা পরিশোধ করলেও পণ্য সরবরাহ না করায় ৪১ জন গ্রাহকের এক কোটি উনচল্লিশ লক্ষ টাকা পেমেন্ট গেটওয়ে এস এস এল এবং সূর্য পে এর একাউন্টে আটকে আছে। বিদ্যমান আইন অনুযায়ী কোন ই কমার্স প্রতিষ্ঠান নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পণ্য সরবরাহ করতে ব্যর্থ হলে পরিশোধিত অর্থ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ফেরত প্রদানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। গ্রাহকগণ অনেক চেস্টা করেও ওই টাকা ফেরত না পেয়ে আইনের দ্বারস্থ হন। গত কয়েক বছরে এ প্রতিষ্ঠানটি সরকারের সংশ্লষ্টি দপ্তর গুলোর কার্যকর নজরদারীর অভাবের সুযোগে গ্রাহক আকর্ষণে বিভিন্ন অনৈতিক অফার, ডিসকাউন্ট নামে গ্রাহকদের প্রলুদ্ধ করে শত শত কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে এবং বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার হয়েছে।

 

আবেদনে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে অনলাইন ভিত্তিক আর্থিক লেনদেন তাৎপর্যপূর্ণভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে । মানুষের জীবন যাত্রার মান বৃদ্ধি, ব্যাংকিং খাতে অনলাইন পেমেন্টের সুবিধা, টেলি যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নসহ অবকাঠামোগত সুবিধা বৃদ্ধির সুযোগে ব্যাঙের ছাতার মত ই-কমার্স ভিত্তিক অসংখ্য প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে।

 

দালাল প্লাস প্রতিষ্ঠার মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে বিভিন্ন অফারের নামে গ্রাহকদের কাছ থেকে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। বিভিন্ন পত্রিকার রিপোর্ট অনুযায়ী এই কোম্পনী বিপুল অর্থ ইতোমধ্যে বিদেশে পাচার করেছে। ই-ওয়ালেট, গিফ্ট কার্ডসহ আরো অন্যান্য অ-অনুমোদিত পদ্ধতিতে লেনদেন করে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে গ্রাহকদের সর্বশান্ত করেছে। প্রতিষ্ঠানটি প্রতিনিয়ত দেশের প্রচলিত আইন ভঙ্গ করেছে সরকারী দপ্তরগুলোর নাকের ডগায়। কিন্তু তারা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। বছরের পর বছর সংশ্লিষ্টদের কার্যকর নজরদারীর অভাবে এই সব কোম্পানীগুলো আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে।

 

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সরকারী দপ্তরগুলো তাদের সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগে গাফিলতি ও ব্যর্থতার ফলে গ্রাহকরা আজ সর্বশান্ত। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে ই-কমার্স ভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলোর যে সম্ভাবনা সেটিও আজ প্রশ্নবিদ্ধ। নোটিশ গ্রহীতারা কোনভাবেই এর দায় এড়াতে পারে না।

 

এর আগে টাকা ফেরত চেয়ে বিবাদীদের নোটিশ পাঠানো হয়েছিল। লিগ্যাল নোটিশের জবাব না পেয়ে রিট আবেদন দাখিল করা হলো।

মন্তব্য