-->
শিরোনাম

দশ ট্রাক অস্ত্র মামলা: ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানি ৩ জানুয়ারি

নিজস্ব প্রতিবেদক
দশ ট্রাক অস্ত্র মামলা: ডেথ রেফারেন্স ও আপিল
শুনানি ৩ জানুয়ারি

চাঞ্চল্যকর দশ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালান মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ১৩ আসামির মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য নিম্ন আদালত থেকে পাঠানো ডেথ রেফারেন্স ও কারাবন্দি আসামিদের করা আপিলের ওপর আগামী বছর ৩ জানুয়ারি শুনানির দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট।

 

রাষ্ট্রপক্ষের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার এদিন ধার্য করেছেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে আইনজীবী ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বশির আহমেদ ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল নির্মল কুমার দাস।

 

গত ১৬ জানুয়ারি মামলাটি বিচারপতি সহিদুল করিম ও বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চের দৈনন্দিন কার্যতালিকায় ছিল। কিন্তু এই আদালতের তালিকায় আরো মামলা থাকায় দশ ট্রাক অস্ত্র মামলার শুনানিতে বিলম্ব হয়। এরই মধ্যে আদালতের বিচারক পরিবর্তন হওয়ায় আর শুনানি হয়নি। এ অবস্থায় বিচারপতি সহিদুল করিমের নেতৃত্বে বেঞ্চ পুনর্গঠন করা হয়েছে। এই বেঞ্চের গতকালের কার্যতালিকার এক নম্বরে ছিল বহুল আলোচিত দশ ট্রাক অস্ত্র মামলা। তবে রাষ্ট্রপক্ষের সময়ের আবেদনে আগামী বছর (২০২৩ সাল) ৩ জানুয়ারি পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করা হয়।

 

এই মামলার অন্যতম আসামি ছিলেন সেই সময়কার শিল্পমন্ত্রী ও জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমির মতিউর রহমান নিজামী। তবে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় নিজামীর ফাঁসি কার্যকর হয়েছে ২০১৬ সালের ১০ মে রাতে। ফলে অস্ত্র চোরাচালান মামলায় নিজামীর আর বিচার হচ্ছে না।

 

২০১৪ সালের ৩০ জানুয়ারি চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ (বিশেষ ট্রাইব্যুনাল-১) আদালত বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় (অস্ত্র চোরাচালান মামলা হিসেবে পরিচিত) মতিউর রহমান নিজামী, বাবরসহ ১৪ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও অস্ত্র মামলায় একই আসামিদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। এর কয়েকদিন পর ওই বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি এ রায় অনুমোদনের জন্য (যা ডেথ রেফারেন্স হিসেবে পরিচিত) হাইকোর্টে পাঠানো হয়। এ ছাড়া কারাবন্দি আসামিরা আপিল করেন। এরপর অগ্রাধিকার ভিত্তিতে মামলার পেপারবুক তৈরি করা হয়। দ্রুত পেপারবুক তৈরি করা হলেও গত সাড়ে চার বছরে আর শুনানি হয়নি।

 

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- নিজামী, বাবর, প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা মহাপরিদপ্তরের (ডিজিএফআই) সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, এনএসআইর সাবেক মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম, সাবেক পরিচালক উইং কমান্ডার (অব.) শাহাবুদ্দিন আহমদ, সাবেক উপপরিচালক মেজর (অব.) লিয়াকত হোসেন, সাবেক মাঠ কর্মকর্তা আকবর হোসেন খান, সিইউএফএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহসিন উদ্দিন তালুকদার ও মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) এনামুল হক, সাবেক ভারপ্রাপ্ত শিল্পসচিব নূরুল আমিন, ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার সামরিক শাখার প্রধান পরেশ বড়ুয়া, স্থানীয় চোরাকারবারি হাফিজুর রহমান, অস্ত্র খালাসের জন্য শ্রমিক সরবরাহকারী দীন মোহাম্মদ এবং অস্ত্র বহনকারী ট্রলারের মালিক হাজি আবদুস সোবহান। এদের মধ্যে পরেশ বড়ুয়া ও নূরুল আমিন পলাতক।

 

২০০৪ সালের ১ এপ্রিল রাতে চট্টগ্রামের সিইউএফএলের জেটি ঘাট থেকে ১০ ট্রাক অস্ত্র ও গোলাবারুদ আটকের ঘটনায় কর্ণফুলী থানায় অস্ত্র আইন ও ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনে পৃথক দুটি মামলা হয়, যা বহুল আলোচিত দশ ট্রাক অস্ত্র মামলা নামে পরিচিত। তদন্ত শেষে ওই বছরই মামলা দুটিতে স্থানীয় চোরাকারবারি হাফিজুর রহমানকে প্রধান আসামি করে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দেয় সিআইডি পুলিশ। কিন্তু ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে আদালতের নির্দেশে অধিকতর তদন্ত শেষে দুটি মামলায় ২০১১ সালের ২৬ জুন নিজামী, বাবরসহ নতুন ১১ জনকে আসামি করে সম্পূরক অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি।

 

নতুনভাবে আসামি করা অন্য ৯ জন হলেন- রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, আবদুর রহিম, শাহাবুদ্দিন আহমদ, লিয়াকত হোসেন, আকবর হোসেন খান, মহসিন উদ্দিন তালুকদার, এনামুল হক, নূরুল আমিন ও পরেশ বড়ুয়া।

 

ভোরের আকাশ/আসা

মন্তব্য

Beta version