-->
দুদককে হাইকোর্টের প্রশ্ন

অর্থশালী, ঋণখেলাপী ও ক্ষমতাবানরা বিচারের উর্ধ্বে কীনা

তদন্ত শেষ না হওয়ায় হাইকোর্টের অসন্তোষ

নিজস্ব প্রতিবেদক
অর্থশালী, ঋণখেলাপী ও ক্ষমতাবানরা বিচারের উর্ধ্বে কীনা

দেশে অর্থশালী, ঋণখেলাপী ও ক্ষমতাবানরা বিচারের উর্ধ্বে কীনা তা দুদকের কাছে জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়ে খেলাপি হচ্ছে, আপনারা তাদের ধরছেন না কেন? যারা বড় বড় ঋণখেলাপি তারা কি বিচারের ঊর্ধ্বে থাকবে? যারা অর্থশালী তারা কি ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকবে? আদালত বলেন, দুদক রাঘব-বোয়ালদের নয়, শুধুই চুনোপুঁটিদের ধরতে ব্যস্ত আছে। তবে মনে রাখবেন, ঋণখেলাপিরা আইনের চেয়ে শক্তিশালী নয়।

 

শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক থেকে প্রায় ১১০ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে তা আত্মসাতের অভিযোগের এক মামলায় দুই আসামির জামিন বাতিল প্রশ্নে রুল শুনানিতে এ প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ। এ সময় আদালতে দুদকের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান ও এম এ আজিজ খান উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।

 

এদিকে বিসমিল্লাহ গ্রুপের বিরুদ্ধে করা মামলায় দীর্ঘদিনেও তদন্ত শেষ না হওয়ায় হাইকোর্ট অসন্তোষ প্রকাশ করেন। আদালত বলেন, এ ধরণের মামলাগুলো কেন শেষ হচ্ছে না। কেন প্রতিবেদন দেওয়া হচ্ছে না? নয় বছর চলে গেছে। আপনারা (দুদক আইনজীবী) দুদক চেয়ারম্যানকে বিষয়টি সিরিয়াসলি নিতে বলবেন।

 

বিসমিল্লাহ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক(এমডি) খাজা সোলায়মান আনোয়ার চৌধুরীসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালের ২৯ মার্চ রমনা থানায় মামলা করেন শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের ইস্কাটন শাখার ম্যানেজার নকীবুল ইসলাম। এ মামলায় ২০১৫ সালের ২৯ অক্টোবর ব্যাংকটির তৎকালীন ডেপুটি ম্যানেজার এএসএম হাসানুল কবীর ও জুনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মান্নাতুল মাওয়াসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়া হয়। এ মামলায় ২০১৭ সালের ১৭ অক্টোবর এই দুইজনকে জামিন দেন বিচারিক আদালত। পরে সেই জামিন বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করে দুদক। জামিন বাতিল প্রশ্নে ২০১৮ সালের ৮ জানুয়ারি হাইকোর্ট রুল জারি করেন।

 

রোববার ওই দুই জনের জামিন বাতিল প্রশ্নে রুলের ওপর শুনানি হয়। ওই শুনানিতে হাইকোর্ট দুদকের আইনজীবীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ১১০ কোটি টাকা নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় ২০১৩ সালে মামলা হয়েছে। এ মামলাটা এখনো কেন (বিচার) হচ্ছে না। এদের ধরবে কে? আপনারা ধরতেছেন চুনোপুটি।

 

জবাবে দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, অবশ্যই দুদকের ধরা উচিত। এদের ধরবে।

 

এসময় আদালত বলেন, কবে ধরবেন? মামলা ২০১৩ সালে। চার্জশীট ২০১৫ সালে। এরপর ফের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন কোর্ট। এত বছর হয়ে গেলো। এগুলোর কি হবে? যারা অর্থশালী, ক্ষমতাবান তারা বিচারের উর্ধে? এরা কি ধরা ছোয়ার বাইরে?

 

এর আগে ২০২০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট এক আদেশে বিসমিল্লাহ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) খাজা সোলেমান আনোয়ার চৌধুরী ও চেয়ারম্যান নওরীন হাবিবসহ ৭ পলাতক আসামিকে সাতদিনের মধ্যে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেন। এই সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার সম্ভব না হয় আর তারা যদি বিদেশে পালিয়ে যেয়ে থাকে, তাহলে তাদের ধরতে ইন্টারপোলের সাহায্যে রেড এলার্ট জারির নির্দেশ দেয়া হয়।

 

ভোরের আকাশ/আসা

মন্তব্য

Beta version