দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিনকে নির্বাচিত ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জারি করা গেজেট চ্যালেঞ্জ করে দাখিল করা পৃথক দুটি রিট আবেদন সরাসরি খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার এ আদেশ দিয়েছেন। আদালতে রিট আবেদনকারী পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আব্দুল মোমেন চৌধুরী ও অ্যাডভোকেট এম এ আজিজ খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মেহেদী হাসান চৌধুরী।
আদেশের পর অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, রিট আবেদন দুটি সরাসরি খারিজ হয়েছে। সুতরাং রাষ্ট্রপতি পদে মো. সাহাবুদ্দিনকে নির্বাচিত ঘোষণা করে ইসির জারি করা প্রজ্ঞাপন বৈধ।
তবে রিট আবেদনকারী দুই আইনজীবী জানান, তারা এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করবেন।
দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি হিসেবে মো. সাহাবুদ্দিনকে নির্বাচিত ঘোষণা করে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ইসির সচিব মো. জাহাংগীর আলমের স্বাক্ষরে গেজেট জারি করা হয়। এই গেজেট চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম এ আজিজ খান গত ৭ মার্চ ও অ্যাডভোকেট আব্দুল মোমেন চৌধুরীসহ ৬ আইনজীবী গত ১২ মার্চ পৃথক রিট আবেদন দাখিল করেন। এরমধ্যে প্রথম রিট আবেদনটি উপস্থাপিত হলে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ গত ১২ মার্চ রিট আবেদনের ওপর শুনানি করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এরপর রিট আবেদনটি প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠানোর আদেশ দেয়া হয়। পরে দ্বিতীয় রিট আবেদনটি আদালতের নজরে আনা হলে একই আদেশ দেন হাইকোর্ট। এরপর প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী রিট আবেদন দুটি শুনানির জন্য বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে পাঠান।
বিচারপতি মো. খসরুজ্জামানের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চের মঙ্গলবারের কার্যতালিকার ৯৯ ও ১৫৪ নম্বরে ছিল রিট আবেদন দুটি। অ্যাডভোকেট আব্দুল মোমেন চৌধুরী, কে এম জাবিরসহ সুপ্রিম কোর্টের ছয় আইনজীবীর করা রিট আবেদনটি ৯৯ নম্বরে এবং অ্যাডভোকেট এম এ আজিজ খানের রিট আবেদনটি ছিল ১৫৪ নম্বরে। এ অবস্থায় উভয়পক্ষের আইনজীবীদের উপস্থিতিতে বুধবার শুনানির দিন ধার্য করেন হাইকোর্ট। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল শুনানি শেষে রিট আবেদন দুটি খারিজ করে আদেশ দেন হাইকোর্ট।
বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ২৩ এপ্রিল। সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্ববর্তী ৬০ দিন থেকে ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে। সংবিধানের এই বিধানের আলোকে পরবর্তী (২২তম) রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সময় গণনা শুরু হয় গত ২৪ জানুয়ারি। আর ২৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচনের বাধ্যবাধকতা ছিল। গত ২৫ জানুয়ারি প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এবারের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন। এরপর আওয়ামী লীগের প্রার্থী মো. সাহাবুদ্দিন রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থীতা দাখিল করেন। তিনি ছাড়া আর কেউ এ পদে প্রার্তী না হওয়ায় তাকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হিসেবে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি গেজেট জারি করে ইসি।
সংবিধান অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি কার্যভার গ্রহণের তারিখ থেকে পরের পাঁচ বছর তার পদে অধিষ্ঠিত থাকতে পারেন। বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ২০১৮ সালের ২৪ এপ্রিল কার্যভার গ্রহণ করেন। সে মোতাবেক তার দায়িত্বের পাঁচ বছর মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ২৩ এপ্রিল।
ভোরের আকাশ/আসা
মন্তব্য