হজ প্যাকেজের বিমান ভাড়া ১ লাখ ৯৭ হাজার ৭৯৭ টাকা থেকে কমিয়ে এক লাখ ৪৫ হাজার টাকা করার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার এ আবেদন করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আশরাফ-উজ-জামান। এর আগে হজ প্যাকেজ কমানোর নির্দেশনা চেয়ে করা রিট আবেদনের সম্পূরক হিসেবে নতুন আবেদন করা হয়েছে।
বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চে এ আবেদনের ওপর শুনানি হতে পারে বলে জানিয়েছেন আবেদনকারী আইনজীবী।
সরকারি ব্যবস্থাপনায় চলতি মৌসুমে নির্ধারণ করা হজের খরচ ৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৮ টাকা থেকে কমানোর নির্দেশনা চেয়ে করা রিট আবেদনে গত ২ এপ্রিল রুল জারি করেন হাইকোর্ট। রুলে চলতি বছর সরকারি ব্যবস্থাপনায় যাওয়া হজযাত্রীদের জন্য হজ প্যাকেজ ঘোষণা করে সরকারের জারি করা প্রজ্ঞাপন কেন জনস্বার্থ পরিপন্থি ও আইনি কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।
একইসঙ্গে প্রতিযোগিতামূলক বিমান ভাড়ার ভিত্তিতে বাংলাদেশ থেকে হজযাত্রী বহনে সব আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্সকে সুযোগ দিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না তাও জানতে চাওয়া হয়। ধর্ম সচিব, বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
এই রুল জারির আগেই গত ২২ মার্চ ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় অল্প কিছু টাকা কমিয়ে হজ প্যাকেজ পুনর্নির্ধারণ করে। সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ প্যাকেজের মূল্য ৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৫ টাকা থেকে ১১ হাজার ৭২৫ টাকা কমিয়ে ৬ লাখ ৭১ হাজার ২৯০ টাকা করা হয়েছে।
অন্যদিকে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ প্যাকেজের মূল্য ৬ লাখ ৭২ হাজার ৬১৮ টাকা থেকে ১১ হাজার ৭২৫ টাকা কমিয়ে ৬ লাখ ৬০ হাজার ৮৯৩ টাকা করা হয়েছে। এমন অবস্থায় আগের রিট মামলায় সম্পূরক আবেদন করা হয়েছে।
এর আগে গত ৬ মার্চ হজের প্যাকেজ মূল্য সংশোধন করে ৪ লাখ টাকা নির্ধারণ করতে সরকারকে আইনি নোটিশ দেয়া হয়। ৭ দিনের মধ্যে হজের প্যাকেজ পুনর্নির্ধারণ করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। কিন্তু সরকারসহ সংশ্লিষ্টরা হজের প্যাকেজ কমানোর কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় এই রিট আবেদন দাখিল করা হয়। হজের চলমান প্যাকেজ মূল্য কমিয়ে তা পুনর্নির্ধারণ করে নতুন প্যাকেজ ঘোষণার নির্দেশনা চেয়ে গত ১২ মার্চ হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়।
রিট আবেদনে বলা হয়, বর্তমানে বাংলাদেশ-সৌদি-বাংলাদেশ রুটে প্লেন ভাড়া ৭৬ হাজার টাকা থেকে এক লাখ ১০ হাজার টাকা। প্রতি বছর দুই দেশের সরকার হজ যাত্রীদের সৌদি ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের টিকিট কিনতে বাধ্য করে। এ কারণে টিকিট কিনতে হজযাত্রীদের স্বাধীনতা ধ্বংস হয়।
আবেদনে বলা হয়েছে, সরকারি ব্যবস্থাপনায় চলতি মৌসুমে হজের খরচ ৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৮ টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার। অন্যদিকে কোরবানি ছাড়াই এবার বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীদের জন্য সর্বনিম্ন খরচ নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ লাখ ৭২ হাজার ৬১৮ টাকা। আগের বছর এটি ছিল ৫ লাখ ২২ হাজার ৭৪৪ টাকা। অর্থাৎ আগের বছরের চেয়ে দেড় লাখ টাকা বেড়েছে।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২৭ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। এ উপলক্ষে গত ৯ জানুয়ারি সৌদি সরকার ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী এ বছর হজযাত্রীর কোটা ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন নির্ধারিত হয়। কিন্তু এই কোটা পূরণ হয়নি এবার।
আইনজীবীর বক্তব্য হলো, বর্তমানে বাংলাদেশ-সৌদি-বাংলাদেশ রুটে প্লেন ভাড়া ৭৬ হাজার টাকা থেকে এক লাখ ১০ হাজার টাকা। প্রতি বছর দুই দেশের সরকার হজযাত্রীদের সৌদি ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের টিকিট কিনতে বাধ্য করে। এ কারণে টিকিট কিনতে হজযাত্রীদের স্বাধীনতা ধ্বংস হয়।
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য