রাজশাহী বিশ্ব বিদ্যালয়ের (রাবি) ভূততত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. এস তাহের হত্যা মামলায় দুই আসামির ফাঁসি কার্যকর স্থগিত করতে করা রিট আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি জাফর আহমেদ ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ রোববার এ আদেশ দেন।
রিট আবেদনকারীর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল এমএমজি সারোয়ার পায়েল।
মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত আসামি ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিনের স্ত্রী ইসরাত রহমান ও মো. জাহাঙ্গীর আলমের ভাই মিজানুর রহমান গত ৭ মে এ রিট আবেদন দাখিল করেছিলেন। গতকাল শুনানি শেষে তা খারিজ করেন হাইকোর্ট। ওই দুই আসামির ফাঁসির রায় পুনর্বিবেচনার জন্য করা রিভিউ আবেদন খারিজ করে আপিল বিভাগের দেয়া পূর্ণাঙ্গ রায় গত ৩ মে প্রকাশিত হয়।
নিয়মানুযায়ী, এ আদেশের কপি পাওয়ার পর মৃত্যুদন্ড প্রাপ্ত দুই আসামি রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চেয়ে আবেদন করা সুযোগ পাবেন। সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে রাষ্ট্রপতি ওই আবেদন খারিজ করলে তাদের ফাঁসি কার্যকর করতে আর কোনো বাধা থাকবে না। এ অবস্থায় ফাঁসি কার্যকর না করতে রিট আবেদন করা হয়।
অধ্যাপক তাহের হত্যা মামলায় একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মিয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ও নিহতের বাসার কেয়ারটেকার মো. জাহাঙ্গীর আলমের ফাঁসি বহাল রেখে গত বছর ৫ এপ্রিল রায় দেন দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। ওই রায়ে জাহাঙ্গীর আলমের ভাই নাজমুল আলম ও নাজমুল আলমের শ্যালক আব্দুস সালামের যাবজ্জীবন কারাদন্ড বহাল রাখা হয়।
এরপর ৬৮ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয় গত বছর ১৪ সেপ্টেম্বর। এ রায় প্রকাশের পর রিভিউ আবেদন করে আসামিপক্ষ। গত ২ মার্চ তা খারিজ করে আদেশ দেন আপিল বিভাগ। গত ৩ মে ২১ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ আদেশের কপি প্রকাশিত হয়। অধ্যাপক তাহের হত্যা মামলায় রাজশাহীর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল ২০০৮ সালের ২২ মে এক রায়ে ৪ জনকে ফাঁসি ও ২ জনকে খালাস দেন।
খালাসপ্রাপ্তরা হলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের তৎকালীন সভাপতি মাহবুবুল আলম সালেহী ও আজিমুদ্দিন মুন্সী। এরপর নিয়মানুযায়ী নিম্ন আদালতের দেয়া মৃত্যু্দন্ডের রায় অনুমদোনের জন্য ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদন্ড নিশ্চিতকরণ) হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পাশাপাশি কারাবন্দি আসামিরা আপিল করেন।
উভয় আবেদনের ওপর শুনানি শেষে দুজনের মৃত্যুদন্ড বহাল এবং দুজনের সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়ে ২০১৩ সালের ২১ এপ্রিল রায় দেন হাইকোর্ট।
এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আসামিপক্ষ ও রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করে। বিশ্ব বিদ্যালয়ের কোয়ার্টারের ম্যানহোল থেকে ২০০৬ সালের ১ ফেব্রুয়ারি উদ্ধার করা হয় অধ্যাপক তাহেরের মরদেহ। ৩ ফেব্রুয়ারি নিহতের ছেলে সানজিদ আলভি আহমেদ মতিহার থানায় মামলা করেন।
তদন্ত শেষে পুলিশ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৭ সালের ১৭ মার্চ অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করে।
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য