সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদকের কক্ষের দরজা ও জানালা ভাংচুরের ঘটনায় পৌণে দুইশ আইনজীবীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এদের বেশির ভাগই বিএনপিপন্থী আইনজীবী। মামলায় সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মহসিন রশিদ, ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন, অ্যাডভোকেট সৈয়দ মামুন মাহবুব, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট শাহ আহমেদ বাদল অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজলসহ ২৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও মামলায় অজ্ঞাত আরো ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে সমিতির সহকারী সুপারিনটেনডেন্ট মো. রফিকউল্লাহ এ মামলা দায়ের করেন। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে এক নারী আইনজীবীকে হেনস্তা ও যৌন হয়রানির অভিযোগ আনা হয়েছে।
সমিতির নির্বাচনকে ঘিরে সৃষ্ট বিরোধের জেরে মঙ্গলবার দুপুরে সমিতির সম্পাদকের কক্ষের দরজা ও জানালা ভাংচুর করা হয়। এসময় বিএনপি ও আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবীদের মধ্যে হাতাহাতি, ধাক্কাধাক্কি ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। আর ঘটনার জন্য পরস্পরকে দায়ী করেছেন উভয়পক্ষের আইনজীবী নেতারা। এর আগেও কয়েকদফা ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, ধাক্কাধাক্কি, মিছিল-পাল্টা মিছিলের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় বেশ কয়েকটা মামলা হয়েছে।
দেশের সর্বোচ্চ আদালতে আইন পেশায় নিয়োজিত আইনজীবীদের সংগঠন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির এবারের নির্বাচন ঘিরে নানা অঘটন ঘটছে। সমিতির ২০২৩-২৪ মেয়াদের ১৪ সদস্যের কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচনে ১৫ মার্চ বুধ ও ১৬ মার্চ দুদিনব্যাপী ভোটগ্রহণ করা হয়। এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ওই দুইদিন ধরে দফায় দফায় হট্টগোল, ধস্তাধস্তি, একাধিক আইনজীবীর চেম্বার ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। ব্যাপক পুলিশী প্রহরায় সরকার সমর্থক আইনজীবীরা ভোট দেন। আর বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা ভোট না দিয়ে কেন্দ্রের বাইরে বিক্ষোভ করেন। এই ভোটগ্রহণকে কেন্দ্র করে ১৫ মার্চ সাংবাদিক ও আইনজীবীরা পুলিশী নির্যাতনের শিকার হন। এতে আইনজীবী, সাংবাদিকসহ কমপক্ষে ২৫ জন আহত হন।
ওই নির্বাচনে সভাপতি পদে অ্যাডভোকেট মোমতাজ উদ্দিন ফকির ও সম্পাদক পদে অ্যাডভোকেট মো. আবদুন নূর দুলালকে বিজয়ী ঘোষনা করা হয়। নির্বাচনে সভাপতি ও সম্পাদকসহ ১৪টি পদের সব কটি পদেই সরকার সমর্থক বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ সমর্থিত সাদা প্যানেল প্রার্থীদের বিজয়ী ঘোষনা করা হয়। ওই নির্বাচন বাতিল করে নিরপেক্ষ নির্বাচন পরিচালনা উপকমিটি গঠনের মাধ্যমে পুনরায় নির্বাচন করার দাবিতে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা কর্মসূচি পালন করছেন।
এছাড়া সমিতির সাবেক সভাপতি ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলামের নেতৃত্বে একদল আইনজীবী একটি এডহক কমিটি গঠন করে আগামী ১৪ ও ১৫ জুন নতুন নির্বাচনের তারিখ ঘোষনা করেন।
ভোরের আকাশ/আসা
মন্তব্য