রাজধানীর মিরপুরে ১১ বছর আগে চুরি করতে গিয়ে আইনজীবী রওশন আক্তারকে খুনের মামলায় দুই নিরাপত্তা প্রহরীকে আমৃত্যু কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মো. আলী আহমেদ রোববার এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। চুরি করতে গিয়ে হত্যার দায়ে দন্ডবিধির ৩৯৪ ধারায় এই রায় আসে।
এই ধারার সর্বোচ্চ সাজাই আসামিদের দেওয়া হয়েছে বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী শামসুল হক বাদল। দন্ডিত দুই আসামি হলেন- সোলায়মান রবিন ওরফে তাজুল এবং রাসেল জমাদার শাকিব। কারাদন্ডের পাশাপাশি তাদের ১০ হাজার টাকা করে অর্থদন্ড, অনাদায়ে আরও এক মাসের কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে। রায় ঘোষণার আগে দুই আসামিকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। রায় শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাদের কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
রায়ের পর দন্ডিতদের মধ্যে কোনো ভাবান্তর দেখা যায়নি। নিহতের জামাতা মাহমুদুল হাসান রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করলেও বলেছেন, দন্ডবিধির ৩০২ ধারায় বিচার হলে ‘ভালো হত’।
মামলার বিবরণে জানা যায়, পরিবার নিয়ে মিরপুরের এক বাসায় থাকতেন অ্যাডভোকেট রওশন আক্তার। দন্ডপ্রাপ্ত দুই আসামি তার বাসায় নিরাপত্তা প্রহরী হিসেবে কাজ করতেন। টাকার জন্য তারা চুরির পরিকল্পনা করতে থাকেন। ২০১২ সালের ৩১ ডিসেম্বর তারা একটি বালিশের কভার নিয়ে অ্যাডভোকেট রওশন আক্তারের বাসার সামনে যায়।
রওশন আক্তার দরজা খুললে তারা জানতে চায়, বালিশের কভারটি তার কি না। রওশন আক্তার বলেন, এটা তার না।
এ কথা বলার এক পর্যায়ে আসামিরা তাকে ধাক্কা দিয়ে ভিতরে প্রবেশ করে। বিছানার ওপর নিয়ে চাদর দিয়ে তার পা বেঁধে ফেলে। ছুরি বের করে তাতে ভয় দেখাতে গিয়ে নিজেদের হাত কেটে ফেলে। পরে ওড়না পেঁচিয়ে রওশন আক্তারকে তারা শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। বাসা থেকে ২০ হাজার টাকা নিয়ে তারা চলে যায়।
এ ঘটনায় রওশন আক্তারের স্বামী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের শিক্ষক মাহবুব ই সাত্তার পরদিন মিরপুর থানায় মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে ২০১৩ সালের ১৮ জুলাই দুই নিরাপত্তাকর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ।
২০১৪ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি অভিযোগ গঠন করে আসামিদের বিচার শুরুর আদেশ দেয় আদালত। মোট ১৫ জনের সাক্ষ্য শুনে রোববার তাদের দোষী সাব্যস্ত করে রায় দিলেন বিচারক।
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য