পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া থানার সাবেক ওসি সৈয়দ আব্দুল্লাহর আগাম জামিন স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী। ওই পুলিশ পরিদর্শকের স্ত্রী ফারহানা আক্তারের নামে বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে সন্দেহজনক সাড়ে ২৬ কোটি টাকা লেনদেনের মামলায় এই জামিন স্থগিত হয়েছে।
এর আগে হাইকোর্ট গত ২০ জুন সৈয়দ আব্দুল্লাহকে ৬ সপ্তাহের আগাম জামিন দেন। হাইকোর্টের এই জামিনের বিরুদ্ধে দুদকের করা আবেদনে সোমবার তা স্থগিত করে আদেশ দিয়েছেন চেম্বার আদালত। দুদকের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান।
গত ১৫ জুন দুদকের পিরোজপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সৈয়দ আব্দুল্লাহ, তার স্ত্রী ফারহানা আক্তার, শাশুড়ি কারিমা খাতুনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। দুদকের সহকারী পরিচালক মোস্তাফিজ বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
মামলায় বলা হয়েছে, আব্দুল্লাহর স্ত্রী ফারহানা আক্তারের নামে বিভিন্ন ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে ২৬ কোটি ৫০ লাখ টাকার বেশি সন্দেহজনক লেনদেন পাওয়া গেছে। স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ পাওয়া গেছে ১৮ কোটি ১৬ হাজার ৫৬৩ টাকার।
২০২০ সালের একটি অভিযোগ অনুসন্ধানের সূত্র ধরে সৈয়দ আব্দুল্লাহর বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করে দুদক। অনুসন্ধানে আব্দুল্লাহর বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের প্রমাণ পাওয়া যায়। তার ও স্বজনের নামে ১৮ কোটি ১৬ হাজার ৫৬৩ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ পাওয়া যায়।
মাদক-চোরাচালান কারবারিদের সঙ্গে সখ্য, মিথ্যা মামলা দেয়ার মতো ক্ষমতার অপব্যবহার করে এই বিপুল অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন আব্দুল্লাহ।
দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত চলতি বছরের ২৮ মে সৈয়দ আব্দুল্লাহর ১৮ কোটি ১৬ হাজার ৫৬৩ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ ক্রোক করে ফ্রিজ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার বাসিন্দা সৈয়দ আব্দুল্লাহ বর্তমানে ফেনীর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের ক্রাইম শাখায় পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত। সৈয়দ আব্দুল্লাহ ১৯৯১ সালে উপপরিদর্শক পদে পুলিশে যোগদান করেন। তিনি ২০০৭ সালে পরিদর্শক পদে পদোন্নতি পান।
এই পদে থেকে তিনি সিআইডি সদর দপ্তর, নরসিংদী, ডিএমপি, শরীয়তপুর, গোপালগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, চুয়াডাঙ্গা, মাগুরা, কুষ্টিয়া, ময়মনসিংহ, ঢাকা, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, যশোর ও বরিশাল হাইওয়ে জেলায় কর্মরত থেকেছেন সৈয়দ আব্দুল্লাহ।
২০১৯ সালের ২৯ মার্চ থেকে ২০২০ সালের ২৪ মার্চ পর্যন্ত পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া থানার ওসি ছিলেন তিনি।
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য