ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আব্দুল মোনেম লিমিটেডের ১০ কোটি ৩১ লাখ টাকা চাঁদাবাজির মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ আটজনকে দায়মুক্তি দিয়েছে আদালত। বুধবার (২৭ নভেম্বর) ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. ছানাউল্ল্যাহ পুলিশের চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে এ আদেশ দেন।
অব্যাহতি পাওয়া অপর আসামিরা হলেন তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ বন্ধু গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, ওবায়দুল্লাহ খন্দকার, কামরুজ্জামান, ইঞ্জিনিয়ার মাহবুবুল আলম, এ কে এম শোয়েব বাশুরী (ওরফে হাবলু), আজিজুল করিম তারেক ও মনিজুর রহমান (ওরফে মানিক)।
২০০৭ সালের ৯ এপ্রিল রাজধানীর শাহবাগ থানায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আবদুল মোনেম লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক খায়রুল বাশার এই মামলা করেন। অভিযোগে বলা হয়, যমুনা সেতু সংযোগ সড়ক প্রকল্পের ২৬৫ কোটি ৯৯ লাখ টাকার কাজ পেতে তারেক রহমানের বন্ধু গিয়াস উদ্দিন আল মামুনসহ অন্য আসামিরা বিভিন্ন সময়ে ১০ কোটি ৩১ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করেন।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, ২০০১ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে আসামিরা প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে এই টাকা আদায় করেন। মামলার বিবরণ অনুযায়ী, টাকা পরিশোধ না করলে বাদীর প্রতিষ্ঠানকে আর কোনো প্রকল্পের কাজ দেওয়া হবে না বলেও হুমকি দেওয়া হয়েছিল।
মামলাটি তদন্ত করে ডিবি পুলিশের ঢাকা কোতোয়ালি জোনাল টিমের পরিদর্শক মো. সাজ্জাদ হোসেন ৫ নভেম্বর চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেন। এতে বলা হয়, মামলার অভিযোগ সত্য নয়। বাদী ২০০৭ সালের ৩০ জুন এজাহারে চাঁদার পরিমাণ সংশোধনের আবেদন করেন এবং ২০০৯ সালের ৭ মে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে মামলাটি প্রত্যাহার করে একটি হলফনামা দেন।
হলফনামায় বাদী উল্লেখ করেন, তিনি রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক চাপের মুখে এই মামলা করতে বাধ্য হয়েছিলেন এবং আসামিদের বিরুদ্ধে তার কোনো অভিযোগ নেই। তদন্তে বাদী এ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন এবং জানান, তখনকার রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রভাবে তিনি মামলা দায়ের করেছিলেন।
পুলিশের প্রতিবেদনে বলা হয়, মামলাটি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অংশ হিসেবে দায়ের করা হয় এবং আসামিরা এ ঘটনায় জড়িত নন। আদালত এই প্রতিবেদন গ্রহণ করে তারেক রহমানসহ আটজনকে মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখিত ঘটনার সত্যতা না পাওয়ায় আদালতের এ সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক প্রতিহিংসার মামলাগুলো নিয়ে নতুন করে আলোচনা তৈরি করেছে।
ভোরের আকাশ/রন
মন্তব্য