দুর্নীতিবিরোধী উদ্যোগ কার্যকর করতে রাজনৈতিক ও আমলাতান্ত্রিক সংস্কৃতির পরিবর্তন দরকার বলে মন্তব্য করেছেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। গতকাল রোববার আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস উদ্যাপন উপলক্ষে মানববন্ধনে এ কথা বলেন তিনি।
রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এ মানববন্ধন আয়োজন করে। দুর্নীতি প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি আন্তর্জাতিক, রাষ্ট্রীয়, সরকারি ও সংশ্লিষ্ট দেশের নাগরিক এবং সব অংশীজনের-এ মর্মে প্রচারণা ও পরামর্শমূলক কর্মসূচি পালন করা দিবসটির মূল লক্ষ্য। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য, ‘নতুন বাংলাদেশ-দুর্জয় তারুণ্য দুর্নীতি রুখবেই।’
ইফতেখারুজ্জামান তিনি বলেন, দেশে যদি একটি আদর্শ দুর্নীতি দমন কমিশন হয়েও যায়, তবু যত দিন রাজনৈতিক ও আমলাতান্ত্রিক সংস্কৃতির ইতিবাচক পরিবর্তন না আসবে এবং রাজনৈতিক ও আমলাতান্ত্রিক নেতৃত্ব দুর্নীতিবিরোধী চেতনা ধারণ করতে না পারবে, তত দিন দুর্নীতিবিরোধী উদ্যোগ কার্যকর হবে না। পুরো সমাজব্যবস্থার মধ্যে দুর্নীতিবিরোধী চেতনা সৃষ্টি করতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রজন্ম যেটি করতে ব্যর্থ হয়েছে, বর্তমান তরুণ প্রজন্ম তা এবার করে দেখিয়েছে। যে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন তৈরি হয়েছে, সেখানে রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য বর্তমান সরকারের পাশাপাশি সব অংশীজনও ভূমিকা পালন করছে।’ তিনি আরও বলেন, দুর্নীতিরোধে প্রয়োজনীয় সংস্কার কার্যক্রম গ্রহণ করা অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম কাজ।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, এ লক্ষ্যে দুর্নীতি দমন কমিশনকে ঢেলে সাজাতে হবে এক ধরনের শুদ্ধি অভিযানের মাধ্যমে। প্রতিষ্ঠানটি ২০০৪ সালে জন্মলগ্ন থেকে দলীয় রাজনীতি ও আমলাতান্ত্রিক প্রভাবে প্রভাবিত। এ ছাড়া অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি-অনিয়মের কারণে দুদক নখ-দর্পহীন হয়েছিল। কর্তৃত্ববাদী সরকার ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে এটিকে অকার্যকর করে মৃতপ্রায় বানিয়েছিল। সে অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটাতে হবে।
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এমন কমিশন প্রতিষ্ঠা করতে হবে; যা দলীয় রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থাকবে, বিশেষ করে কমিশনার নিয়োগে। এ ছাড়া দুদকের সচিব ও মহাপরিচালক পদে যারা আসবেন, তাদের মধ্যে আমলাতান্ত্রিকতার প্রতি আনুগত্যের মনোভাব দূর করতে হবে। এ দুটি নিশ্চিত করতে হবে। এটা করার এখতিয়ার এ সরকারের আছে।
টিআইবিপ্রধান বলেন, তরুণ প্রজন্ম দেখিয়ে দিয়েছে; যা অগ্রহণযোগ্য তা ধূলিসাৎ করতে তারা রক্ত দিতে পারে। সে বিষয়টিকে মনে রাখতে হবে। বর্তমান সরকারের কাছে এই আস্থা ও প্রত্যাশা যে তাদের কোনো রাজনৈতিক উচ্চাকাক্সক্ষা নেই। রাষ্ট্র কাঠামো এমনভাবে সংস্কার হতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে যারা ক্ষমতায় আসবেন, তাদের মধ্যে দুর্নীতিবিরোধী অবস্থান তৈরি হয় এবং সেই অবকাঠামো তৈরির দায়িত্ব এ সরকারের বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ভোরের আকাশ/রন
মন্তব্য