ওজন কমাতে আমরা কত কিছুই না করে থাকি। শরীরচর্চা থেকে শুরু করে ডায়েটিং, সবকিছুতেই বিশেষ মনোযোগ দিই। তবে এতকিছু করার পরও আমরা অনেকেই প্রত্যাশিত ওজন কমাতে ব্যর্থ হই। শতচেষ্টা সত্ত্বেও যদি আপনার ওজন না কমে, তা হলে কোথাও না কোথাও কিছু গলদ অবশ্যই আছে।
আপনার জীবনধারণের স্টাইল, আপনার খাদ্যতালিকা, আপনার হ্যাপিনেস কিংবা কোন পরিবেশে বসবাস করছেন, এসব বিষয়ও নির্ভর করে আপনার ওজন কমার ক্ষেত্রে। ওজন কমানোর ক্ষেত্রে ছোটো ছোটো বিষয়ও কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
আমাদের নেওয়া কিছু ভুল পদক্ষেপ ওজন কমানোর সমস্ত প্রচেষ্টাকে নষ্ট করে দিতে পারে। আজ এই আর্টিকেল থেকে জেনে নিন, আমাদের কোন কোন ভুল পদক্ষেপের কারণে ওজন কমানোর চেষ্টায় বাধা পড়ে।
১. ক্যালোরির মাত্রা উপেক্ষা করাওজন কমানোর ক্ষেত্রে ক্যালোরি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু আমরা অনেকেই ক্যালোরির গ্রহণকে উপেক্ষা করে অতিরিক্ত ফ্যাট পোড়াতে কেবল শারীরিক কার্যকলাপের দিকেই মনোনিবেশ করে থাকি।
ক্যালোরির ঘাটতি দ্রুত ওজন কমাতে সাহায্য করে। তা ছাড়া আমরা সবাই জানি যে, বেশি ক্যালোরি গ্রহণ করলে শরীরের ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে এবং কম ক্যালোরি শরীরকে দুর্বল করে। তাই ওজন কমানোর ক্ষেত্রে, আদর্শ পরিমাণ ক্যালোরি গ্রহণ করা উচিত।
২. কম ফাইবারযুক্ত খাবার খাওয়াআমরা অনেকেই ওজন কমাতে গিয়ে ডায়েটে ফাইবারযুক্ত খাবার কম অন্তর্ভুক্ত করি। কিন্তু দ্রুত ওজন কমাতে চাইলে খাদ্যতালিকায় অবশ্যই ফাইবারযুক্ত খাবার রাখা প্রয়োজন।
৩. খাদ্যতালিকায় প্রোটিনের অভাবআমেরিকান জার্নাল অব ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশনের মতানুসারে, প্রোটিন শরীরের পেশীর গঠনকে স্বাভাবিক রেখে ওজন কমাতে সহায়তা করে। তা ছাড়া এটি মেটাবলিজম মেইনটেন করে, ক্ষুধা নিবারণ এবং পেটকে দীর্ঘসময় পর্যন্ত ভর্তি রাখতে সহায়তা করে। তাই খাদ্যতালিকায় বেশি করে প্রোটিন অন্তর্ভুক্ত করুন।
৪. ডায়েট খাবারের প্রতি অন্ধ ভালোবাসা দ্রুত ফলের জন্য অনেকেই ডায়েট খাবার বেছে নিতে পছন্দ করেন। এই প্রক্রিয়াজাত খাবারগুলো ওজন কমাতে সহায়ক বলে দাবি করলেও এগুলো কিন্তু অপ্রয়োজনীয় উপাদানে ভরপুর থাকে। উদাহরণস্বরূপ, ১৭০ গ্রামের কম ফ্যাটযুক্ত দইয়ে প্রায় ২৩.৫ গ্রাম চিনি বর্তমান। এগুলো আপনার শরীরের ওপর বিপরীত প্রভাব ফেলতে পারে। এই খাবারগুলো খিদে আরও বাড়িয়ে দেয়।
৫. পানি কম পান করাদ্রুত ওজন কমাতে চাইলে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন। বেশি করে পানি পান করলে শরীর হাইড্রেট থাকে এবং শরীর থেকে টক্সিন বের করে দিয়ে শরীরকে ডিটক্স করতেও সহায়তা করে।
৬. সকালের নাস্তা না খাওয়াআমাদের অনেকেরই ধারণা, ব্রেকফাস্ট না করলে দ্রুত ওজন কমতে পারে। কিন্তু এই ধারণা একেবারেই ভুল। বরং ব্রেকফাস্ট না করলে ওজন বাড়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। সকালে না খেলে লাঞ্চের সময় বেশি খিদে পায়। প্রাতঃরাশে ক্যালোরি গ্রহণ করুন। ব্রেকফাস্টে যে ক্যালোরি শরীরে যায়, তা সারাদিন ধরে বার্ন হতে পারে। দিনের কোনো সময়ই খাবার স্কিপ করা উচিত নয়।
৭. খুব বেশি বা খুব কম ব্যায়াম করাব্যায়াম বা শরীরচর্চা দ্রুত ওজন কমাতে সাহায্য করে। তবে এনআইএইচ-এর মতে, অতিরিক্ত ব্যায়াম শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক হতে পারে। কারণ এটি মানসিক চাপ বাড়ায়। অন্যদিকে, কেবল ডায়েট চার্ট মেনে খাওয়াদাওয়া করলে এবং ব্যায়াম একদমই না করলে কিন্তু ওজন কম হবে না। তাই ব্যালেন্সড ডায়েটের পাশাপাশি পর্যাপ্ত ব্যায়ামও অত্যন্ত জরুরি।
মন্তব্য