-->

হ্যাপি চকোলেট ডে

ইসমত জেরিন স্মিতা
হ্যাপি চকোলেট ডে
এমন দিনে প্রিয়জনকে খুশি করতে চকোলেট উপহার দিতে পারেন

এককথায় আট থেকে আশি, চকোলেট খেতে সবাই ভালোবাসি। তবুও চকোলেট খেলে রোগ যে পিছু নেবে তা নিয়ে কারোর মনেই কোনো সন্দেহ নেই। সে কারণে লুকিয়ে চকোলেট খাওয়া খুবই সাধারণ একটা বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ভ্যালেন্টাইন উইকের শুরুতে রোজ ডে, এরপর যথাক্রমে প্রপোজ ডে, চকোলেট ডে, টেডি ডে, প্রমিজ ডে, হাগ ডে, কিস ডে এবং সবশেষ ভ্যালেন্টাইন ডে (১৪ ফেব্রুয়ারি) পালিত হয়। যদিও ঐতিহাসিকভাবে এ দিনটি উদযাপনের কোনো প্রথার নির্ভরযোগ্য ঐতিহাসিক ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি, তবে ভ্যালেন্টাইন সপ্তাহে ‘চকোলেট ডে’ পালন একটু দুষ্টু-মিষ্টি ভালোবাসার প্রতিচ্ছবির মতোই।

‘চকোলেট’ এর স্বাদ প্রথম পেয়েছিল লাতিন আমেরিকার মায়া সভ্যতা। নামটিও এসেছে তাদের ভাষার ‘স্কোকোলেট’ থেকে। যার অর্থ অম্ল পানীয়। কোকো গাছের বীজ থেকে প্রস্তুত এই চকোলেট গোড়ার দিকে মূলত পানীয় হিসেবেই ব্যবহার করা হতো।

সে আমলে আবার অনেকে তা রান্নার মসলা হিসেবেও ব্যবহার করতেন। তখন কেবল মায়া রাজ পরিবারের সদস্য, প্রশাসক, ধর্মগুরু, সৈনিক এবং সম্মানীয় বণিক সম্প্রদায়ই একমাত্র এর স্বাদ আস্বাদন করতে পারত।আধুনিক চকোলেটের প্রথম কারখানা গড়ে ওঠে স্পেনে। জানেন কি, বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় চকোলেট কোনটি? ক্যাডবেরি ডেইরি মিল্ক।

জানা যায়, জর্জ ক্যাডবেরি (জুনিয়র) স্পেন থেকে ক্যাডবেরি বারের রেসিপিটি শিখে এসে প্রথম এটি বানান ১৯০৫ সালে। তবে ক্যাডবেরি কোম্পানির প্রথম সদস্য হিসেবে ধরা হয় জন ক্যাডবেরিকেই। এর আগে বার্মিংহামের বুলস্ট্রিটে তিনি একটি চায়ের দোকান চালাতেন।

বর্তমানে অবশ্য পশ্চিম এশিয়ার দেশ যেমন- ঘানা, নাইজেরিয়া, কঙ্গো, সিয়েরা লিওন ইত্যাদি দেশ থেকে উন্নতমানের কোকো বীজ আমদানি করে ক্যাডবেরি প্রস্তুত করা হয়। বাচ্চাকে চকোলেট বেশি দিও না, দাঁত একেবারে নষ্ট হয়ে যাবে, পেটও গোল্লায় যাবে- প্রতিবেশিনীর এমন সাবধানবাণী শোনেননি এমন শিশুর মা খুঁজে পাওয়া বেশ দুষ্কর।

 

তবুও বাচ্চাদের এক নম্বর পছন্দ সেই চকোলেটই। আর বাচ্চাই বা বলি কেন বুড়োরাও চকোলেট দেখলে লোভ সামলাতে পারেন না। এককথায় আট থেকে আশি, চকোলেট খেতে সবাই ভালোবাসি। তবুও চকোলেট খেলে রোগ যে পিছু নেবে তা নিয়ে কারোর মনেই কোনো সন্দেহ নেই।

সে কারণে লুকিয়েচুরিয়ে চকোলেট খাওয়া খুবই সাধারণ একটা বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু আজ দাঁত খারাপ, কাল পেট খারাপের জন্য যতই চকোলেটকে দুষি না কেন, সেই সুইট ব্রাউন একদিন আপনার সহযোগী উপাদান হবে জানেন কি। তাহলে জেনে নিন।

সায়েন্টিফিক জার্নাল নিউট্রিয়েন্টসের একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, চকোলেটে থাকা মূল উপাদান কোকোতে থাকে একটি বিশেষ ধরনের রাসায়নিক। যার নাম পলিফেনলস। এই পলিফেনলসের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান।

আর এসব উপাদানই মাঝ বয়সে শ্রবণশক্তি হারানোর বা কমে যাওয়ার থেকে আপনাকে বাঁচাবে। ৩৫৭৫ জন মাঝবয়সি মহিলা এবং পুরুষকে নিয়ে এই সমীক্ষা করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, যারা চকোলেট খেয়ে অভ্যস্ত তাদের কানে শোনার ক্ষমতা বাকিদের তুলনায় অনেকটা ভালো।

অতএব, গবেষণা এবং সমীক্ষা অনুযায়ী, চকোলেটই নাকি কানে শোনার সমস্যাকে কমাতে সাহায্য করবে। তাহলে কী দাঁড়াল, চকোলেট খেলে নাকি নষ্ট হবে না আপনার শ্রবণশক্তি। মাঝ বয়সেই কানে কম শোনার প্রবণতাও দেখা যাবে না।

সম্প্রতি এক গবেষণায় এমনটাই বলা হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিওলের একদল চিকিৎসক এই গবেষণা করেছেন। সেখানে দেখা গেছে, ৪০ থেকে ৬৪ বছর বয়সিদের মধ্যে যারা চকোলেট খান তাদের তুলনায় বাকিদের মধ্যে কানে শোনার সমস্যা বেশি।

অর্থাৎ চকোলেট যারা খান তারা বুড়ো বয়সেও হিয়ারিং এড ছাড়াই দিব্যি কানে শুনতে পাবেন বা বলা ভালো কানে শোনার যন্ত্রটা বাকিদের তুলনায় কয়েকদিন পরে প্রয়োজন হবে।

মন্তব্য

Beta version