-->

আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে এসিএইচএমের দুই দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা

সোনিয়া সিমরান
আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে এসিএইচএমের দুই দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা
কর্মশালায় অতিথিরা দি একাডেমি অব কালিনারি অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্টের এমন আয়োজনের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে নারীদের স্বাবলম্বী ও উদ্যোক্তা হিসেবে এগিয়ে আনতে দি একাডেমি অব কালিনারি অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট (এসিএইচএম) ৩টি ভিন্ন ভিন্ন কর্মশালার আয়োজন করে। কর্মশালাসমূহ ৮ মার্চ ২টি, সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা, বিকাল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা এবং তৃতীয়টি ৯ মার্চ বেলা ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত চলে।

৮ মার্চ সকালের কর্মশালায় সহযোগিতায় ছিল ‘সহায়ক ফাউন্ডেশন’; যেখানে ‘লায়ন ক্লাব প্রেসিডেন্সি’-এর পরিচালক ও ‘সহায়ক ফাউন্ডেশন’-এর সভাপতি লায়ন রীনা রহমান (রানী মা) প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। তিনি তার বক্তৃতায় দি একাডেমি অব কালিনারি অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্টের ভূয়সী প্রশংসা করেন এমন একটি উদ্যোগ নেওয়ার জন্য।

তিনি কর্মশালায় আগতদের কর্মসংস্থানের জন্য তারা সাধ্যমতো সাহায্য করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। সকালে বিশেষ অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন দি গ্লোবাল নেটের প্রকাশক ও সম্পাদক এবং মাদার তেরেসা ফাউন্ডেশনের (বাংলাদেশ চ্যাপ্টার) ভাইস চেয়ারম্যান লায়ন মিটু ধর চৌধুরী।

তিনি বলেন, একটি দেশের সামগ্রিক চিত্রটা যদি পজিটিভ অর্থে পরিবর্তন করতে হয়, তা হলে নারী-পুরুষ উভয়েরই সাবলীলভাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। আর নারী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত কর্মসূচির জন্য তিনি আয়োজকদের সাধুবাদ জানান।

এদিন বিকেলের কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দেশের স্বনামধন্য কলনারি বিশেষজ্ঞ, মিডিয়াব্যক্তিত্ব, এসেসর এবং লবি রহমান কুকিং ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠাতা ও প্রেসিডেন্ট লবি রহমান। তিনি বলেন, আমাদের দেশে হসপিটালিটি ইন্ডাস্ট্রিকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরার জন্য ‘এসিএইচএমে’র মতো প্রতিষ্ঠান আরো অনেক বেশি গড়ে ওঠা দরকার।

আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে এ ধরনের আয়োজন নারীদের কর্মসংস্থান তৈরি এবং তাদের স্বাবলম্বী করে গড়ে তুলতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে। আগামী দিনে ‘এসিএইচএমে’র পাশে থেকে সাধ্যমতো আন্তরিক সহযোগিতা করার আশ্বাস প্রদান করেন।

তিনি আরো জানান, এ প্রতিষ্ঠানে প্রফেশনাল শেফ কোর্সে প্রথম দ্বিতীয় তৃতীয় স্থান অধিকারী সবার একটি করে রেসিপি অনন্যা ম্যাগাজিনে প্রকাশের ব্যবস্থা করবেন এবং বাংলাদেশ টেলিভিশনে তাদের একটি করে টিভি প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেবেন।

ওই প্রোগ্রামে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় বাংলাদেশ পর্যটন শ্রমিক ফেডারেশনের কনভেনার লায়ন রাশেদুর রহমান তার বক্তৃতায় বলেন, এ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যে সব প্রশিক্ষণার্থী প্রশিক্ষণ নেবেন, পর্যটনের বিভিন্ন খাতে-উপখাতে আমাদের হসপিটালিটি ইন্ডাস্ট্রিতে কর্মস্থান ও যথাযথ সম্মানপ্রাপ্তিতে তিনি সর্বাত্মক সহযোগিতা করবেন।

বাংলাদেশ টেলিভিশনের প্রযোজক ও সঞ্চালক চন্দনা চৌধুরী তার বক্তৃতায় এই প্রতিষ্ঠানের প্রশিক্ষণার্থীর ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে তিনি তার সাধ্যমতো পাশে থাকার আশ্বাস প্রদান করেন এবং এসিএইচমের সর্বাত্মক মঙ্গল কামনা করেন। প্রোগ্রামের আয়োজনে সহযোগিতায় ছিল ফুড হাব এবং শান্তা’স কুইজিন নামের (ফুড সাপ্লাই অ্যান্ড ক্যাটারিং) দুটি প্রতিষ্ঠান।

৯ মার্চ বিকেলের কর্মশালাটি যৌথভাবে আয়োজন করেন এসিএইচএম এবং বাংলাদেশ ট্যুরিজম এক্সপ্লোরার’স অ্যাসোসিয়েশন (বিটিইএ)। কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বগুড়া ট্যুরিস্ট ক্লাবের প্রতিষ্ঠতা ও বিটিইএর চেয়ারম্যান শাহিদুল ইসলাম সাগর। তিনি তার বক্তৃতায় বলেন, সমাজের একটি বড় অংশকে বাদ দিয়ে কখনো একটি জাতি কিংবা রাষ্ট্রের উন্নয়ন সম্ভব নয়।

নারীদের ব্যক্তিগত স্বাবলম্বী হওয়া এবং পরিবারকে সহযোগিতা করার জন্য প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজের ও অন্যের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা দরকার। বিটিইএ প্রতিষ্ঠার পর থেকে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষকে পর্যটনের বিভিন্ন খাতে-উপখাত, বিশেষ করে কালিনারি ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করে যাচ্ছে।

এসিএইচএম হসপিটালিটি ইন্ডাস্ট্রিতে দক্ষ জনশক্তি তৈরির লক্ষ্যে নিজেদের যে অগ্রযাত্রা শুরু করেছে তাতে বিটিইএ সর্বপ্রকার সহযোগিতা প্রদান করবে এবং তিনি উদ্যোক্তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ট্রেইনার এবং এসেসর জাহাঙ্গীর আলম বকুল বলেন, ভালো কিছু সৃষ্টির জন্য প্রশিক্ষণের কোনো বিকল্প নাই।

রান্না শুধু আমাদের পেটভর্তির জন্য নয়। এতে হাইজিন ও নিউট্রিশন বজায় রাখা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। প্রশিক্ষণ ছাড়া তা নিশ্চিত করা অনেকটাই অসম্ভব। এসিএইচএমের সঙ্গে এ কর্মশালায় যোগ দেওয়ার জন্য সব প্রশিক্ষণার্থীকে তিনি ধন্যবাদ জানান এবং প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তাদের সর্বোত্তম সাফল্য কামনা করেন।

বিটিইএ ন্যাশনাল ওমেনস স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান স্বাম্মি শারমিন বলেন, এ ধরনের আয়োজন দেখে তিনি অভিভূত। ভবিষ্যতে সব রকম সহযোগিতা দিয়ে প্রতিষ্ঠানটির পাশে থাকার আগ্রহ প্রকাশ করেন। আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ প্রতিটি কর্মশালায় ঘুরে ঘুরে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিদর্শন এবং বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ প্রদান করেন।

এসিএইচএম কর্মশালায় আগত সব প্রশিক্ষণার্থী এবং অতিথিদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানান এবং উপহারসামগ্রী তুলে দেন। প্রশিক্ষণ শেষে আয়োজক এবং অতিথিবৃন্দ প্রশিক্ষণার্থীদের হাতে সার্টিফিকেট তুলে দেন। পরে কেক কেটে কর্মশালার সমাপ্তি করেন। উল্লেখ্য যে, বিটিইবি ও এনএসডিএর এসেসর নাজিয়া ফারহানা এ কর্মশালার উপদেষ্টা ছিলেন।

প্রশিক্ষক হিসেবে কাজ করেন শেফ এরিনা শিরিন ও শেফ ফারহানা কাজল। ৮ মার্চের কর্মশালাসমূহ কো-অর্ডিনেট করেন শারমিন কাদের নামিরা। সবশেষে এসিএইচএমের উদ্যোক্তাদের পক্ষে পরিচালক শামসুন নাহার আহম্মেদ মিতা সব অতিথি ও কর্মশালায় যোগদানকারী প্রশিক্ষণার্থীদের আন্তরিক কৃতজ্ঞ ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

মন্তব্য

Beta version