-->

কেমন হবে রমজানের স্বাস্থ্যকর ডায়েট!

মুনিয়া মৌরিন মুমু
কেমন হবে রমজানের স্বাস্থ্যকর ডায়েট!

রমজান মাস সন্নিকটে। মুসলিম ধর্মাবলম্বিদের জন্য এই মাস খুবই তাৎপর্য বহন করে। পবিত্র মাহে রমজানে সবথেকে বেশি পরিবর্তন আসে আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাসে। সেহরি, ইফতার এবং রাতের খাবার- এই তিনটি প্রধান মিল গ্রহণ করতে হয় রমজানের সময়ে।

ইফতারের পর থেকে সেহরি পর্যন্ত খুব অল্প সময় পাওয়া যায় এবং এই তিনটি মিলের মাধ্যমেই একজন ব্যক্তিকে তার দৈনিক ক্যালরির চাহিদা পূরণ করতে হয়। তাই রমজানে সুষম খাদ্য ব্যবস্থাপনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। খাদ্যের ভারসাম্য নষ্ট হলে বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য জটিলতা দেখা দিতে পারে। আসুন জেনে নেই রমজানে সুস্থ থাকতে চাইলে কি ধরনের ডায়েট মেনে চলবেন।

ইফতারে যা খাবেন

সারাদিন রোজা রেখে শরীরে যে ঘাটতি হয়, সে ঘাটতি পূরণে ইফতারের মেন্যু হতে হবে খুবই স্বাস্থ্যসম্মত। ইফতারের শুরুতে খোরমা বা খেজুর খাওয়া যেতে পারে, ২ পিস খাওয়াই যথেষ্ট। এরপর অল্প অল্প করে বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। রোজা খোলার পরে একসাথে অনেক বেশি পানি পান করবেন না, কারণ অনেক পানি একবারে খাওয়ার ফলে কিডনিতে চাপের সৃষ্টি হয়।

রোজায় শরবত কম-বেশি সবাই গ্রহণ করেন। শরবতের ক্ষেত্রে চিনি ছাড়া ফলের শরবত আপনারা চাইলে খেতেই পারেন। তবে ফলের শরবত খাওয়ার থেকে গোটা ফল খাওয়া বেশি স্বাস্থ্যকর। শরবতের বদলে ডাবের পানি খাওয়া সবচেয়ে উত্তম।

রোজা রেখে অতিরিক্ত ভাজাপোড়া খাবার খেলে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ে। কারণ ভাজাপোড়া খাবারে থাকে ট্রান্স-ফ্যাট যেটা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর। তবে বাসায় স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে তৈরি হলে সর্বোচ্চ ২ পিস পর্যন্ত খেতে পারবেন।

রাতে যা খেলে ভালো

রমজানে ইফতার শেষ করতেই ৭টা থেকে সাড়ে ৭টা বেজে যায়। কারণ অনেকেই মাগরিবের নামাজ পড়ে ইফতারের অবশিষ্ট খাবার গ্রহণ করেন। রাতের খাবার গ্রহণের জন্য তাই কিছুটা সময়ের প্রয়োজন হয়। তবে রাতের খাবার চেষ্টা করবেন ৯-১০টার মধ্যেই শেষ করতে। কারণ ঘুমাতে যাওয়ার কমপক্ষে ২-৩ ঘণ্টা আগেই আপনাকে রাতের খাবার শেষ করতে হবে। রাতের খাবারের পরে আপনারা তারাবির নামাজ পড়লে খুব ভালো উপকার পাবেন কারণ নামাজ পড়ার মাধ্যমে এক্সারসাইজের কাজ হয়ে যায়।

স্যুপ বা খিচুড়ির সাথে প্রোটিন হিসেবে মাছ বা মুরগির কোনো আইটেম রাখা যায়। আবার কেউ চাইলে রুটির সাথে সবজি এবং মাছ কিংবা মুরগির মাংসও খেতে পারবেন। রাতের খাবারের পরে টকদই খাওয়ার অভ্যাস করবেন। টকদই খুব ভালো প্রোবায়োটিক যেটা হজম সহায়ক।

সেহরিতে সহজ খাবার

সেহরি হচ্ছে রমজান মাসে আমাদের সর্বশেষ মিল অর্থাৎ সেহরির পর থেকে ইফতার পর্যন্ত আমাদের না খেয়ে থাকতে হয় আর তাই সেহরিতে খেতে হবে এমন খাবার যে খাবার সারাদিনের শক্তির চাহিদা পূরণে সক্ষম। একটি বিষয় মনে রাখবেন রোজায় ক্যালরি ডিস্ট্রিবিউশন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

দৈনিক ক্যালরির চাহিদা আপনাকে রমজানে তিনটি মিলের মাধ্যমেই পূরণ করতে হয়। তাই তিনটি মিলে খাদ্যের সঠিক বণ্টন হওয়া প্রয়োজন। মনে রাখবেন ভাত খেলে ভাতের পরিমাণ পরিমিত হতে হবে, অতিরিক্ত ভাত খাওয়া উপকারের থেকে অপকারই ডেকে আনে বেশি। সেহরি শেষ করেই শুয়ে পড়বেন না, একটু হাঁটাহাঁটি করে ফজর পর্যন্ত অপেক্ষা করে নামাজ পড়ে ঘুমোতে যাবেন।

এতে করে শারীরিক এবং আত্ত্বিক দুটো উপকারই পাবেন।

মন্তব্য

Beta version