-->

ইফতারে স্বাস্থ্যকর খাবার

ট্রেন্ড ডেস্ক
ইফতারে স্বাস্থ্যকর খাবার

আমাদের দেশে রমজানে সারাদিনে প্রায় ১৪ ঘন্টা উপবাসে কিংবা না খেয়ে থাকতে হয়। সারাদিন রোজা রাখার ফলে স্বাভাবিক ভাবেই শরীরে এনার্জির ঘাটতি দেখা দেয়। এই ঘাটতি পূরণে ইফতারের মেন্যু হতে হবে খুবই স্বাস্থ্যসম্মত৷

সারাদিন রোজা রাখার পর ইফতারি করেন সবাই। তবে ইফতারিতে বেশিরভাগ ভাজাপোড়া খাবার বেশি খাওয়া হয়ে থাকে। তবে সবাই ভাজাপোড়া খেতে পারেন না। কারণ প্রতিদিন ভাজাপোড়া খাবার খেলে অনেকের পেটের পীড়াসহ বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়।

সারাদিন রোজা রাখার পর শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দেয়। পানিশূন্যতার অন্যতম বড় লক্ষণ হচ্ছে গলা শুকিয়ে আসা, প্রস্রাব কমে যাওয়া, ক্লান্ত লাগা, কোষ্ঠকাঠিন্য, মাথা ঘোরা, বমিভাব, মাথাব্যথা, ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া, গিঁটে ব্যথা। তাই শরীরে পানিশূন্যতা পূরণে ও পেটের স্বস্তিতে খেতে পারেন ভিন্ন কিছু খাবার।

তাই ইফতারিতে যারা ভাজাপোড়া খেতে পারেন না তাদের জন্য কিছু খাবার রয়েছে। আসুন জেনে নেই ইফতারিতে ভাজাপোড়া না খেলে কি খাবেন? ইফতারের শুরুতে খোরমা বা খেজুর খাওয়া যেতে পারে, ২ পিস খাওয়াই যথেষ্ট। এরপরে অল্প অল্প করে বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে। রোজা খোলার পরে একসাথে অনেক বেশি পানি পান করবেন না, কারণ অনেক পানি একবারে খাওয়ার ফলে কিডনিতে চাপের সৃষ্টি হয়।

রোজায় শরবত কম বেশি সবাই গ্রহণ করেন। শরবতের ক্ষেত্রে চিনি ছাড়া ফলের শরবত আপনারা চাইলে খেতেই পারেন। তবে ফলের শরবত খাওয়ার থেকে গোটা ফল খাওয়া বেশি স্বাস্থ্যকর। শরবতের বদলে ডাবের পানি খাওয়া সবচাইতে উত্তম।

গ্রীষ্মের এই সময়ে পাওয়া যাবে পুষ্টিকর বিভিন্ন ধরনের মৌসুমি ফল। আপনারা একেকদিন পরিবর্তন করে সব ধরনের ফলই ইফতারে রাখতে পারবেন। ছোলা ছাড়া যেনো আমাদের ইফতার জমেই না। ছোলা স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে খেতে চাইলে তেল-মশলায় ভুনা না করে, ছোলার সালাদ করে খাবেন। যেটা কাঁচা ছোলাও হতে পারে কিংবা ছোলা সেদ্ধ করে সেটার সাথে শশা, টমেটো, ক্যাপসিকাম, টকদই দিয়ে তৈরি করে নিবেন, ব্যাস হয়ে গেল হেলদি সালাদ। রোজা রেখে অতিরিক্ত ভাজাপোড়া খাবার খেলে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ে কারণ ভাজাপোড়া খাবারে থাকে ট্রান্স ফ্যাট যেটা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ক্ষতিকর।

তবে বাসায় স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে তৈরি হলে সর্বোচ্চ ২ পিস পর্যন্ত খেতে পারবেন। অনেকে ইফতারে ছোলা এবং হালিম দুটোই খেয়ে থাকেন। এক্ষেত্রে মনে রাখবেন হালিম তৈরি করা হয় ডাল দিয়ে এবং ছোলাও ডাল গোত্রের শষ্যদানা, দুটোই উদ্ভিজ্জ আমিষ।

প্রোটিনের চাহিদা পূরণে ছোলা কিংবা হালিম যেকোনো একটি রাখতে হবে ইফতারে। হালিম খেলে ছোলা নয় কিংবা ছোলা খেলে হালিম নয়। হালিম সহজপাচ্য করে প্রস্তুত করতে হবে, পরিমাণ খেতে পারবেন এক কাপ। ছোলার সালাদ বাদে যদি মুড়ি দিয়ে ছোলা খেতে চান তবে ছোলা-মুড়ি মিলিয়ে এক কাপ খেতে পারবেন।

এছাড়া সুস্থ থেকে রোজা কায়েম করতে চাইলে যে বিষয় গুলি মেনে চলবেন -

☑️ অতিভোজন পরিহার করবেন। একসাথে অনেক ধরনের খাবার খেয়ে অতিরিক্ত ক্যালরি গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকবেন।

☑️ তীব্র গরমে রমজানে পানিশূন্যতা রোধে পর্যাপ্ত পানি পান করবেন। সাহরি থেকে ইফতার পর্যন্ত ২-২.৫ লিটার

☑️ রোজা রেখে যেন দুর্বল না হয়ে পড়েন সেজন্য সাহরি শেষে ঘরে তৈরি ড্রাই ফ্রুট যেমন (১ খেজুর+৪-৫ কাঠবাদাম+৩-৪ কিসমিস) গ্রহণ করলে সারাদিন এনার্জি পাবেন।

☑️ রোজার সময়ে একেবারেই শারীরিক পরিশ্রম ছেড়ে দেওয়া যাবে না। ২০-৩০ মিনিট হালকাভাবে হাঁটার অভ্যাস রাখতে হবে এই সময়টিতেও। আর যারা এই সময়ে অতিরিক্ত ব্যায়াম করেন তারা অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম করা থেকে বিরত থাকবেন।

 

লেখক: পুষ্টিবিদ

মন্তব্য

Beta version