-->
শিরোনাম

মিক্সড সবজির উপকারিতা

রোকসানা কবির
মিক্সড সবজির উপকারিতা

সুস্থ-সবলভাবে বেঁচে থাকতে পুষ্টিকর খাবার খেতেই হবে। এর চাহিদা পূরণে শাকসবজির অবদান অনন্য। শাকসবজিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও খনিজ পদার্থসহ অন্যান্য অনেক পুষ্টি উপাদান। সে সাথে আঁশে ভরপুর। সবজি এবং ফলের গুণাগুণ নিয়ে আজকের রেসিপি দিয়েছেন রোকসানা কবির। 

ছবি: ভোরের আকাশ।

মিক্সড সবজির উপকারিতা

 

এসব পুষ্টি উপাদান শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, খাবারে রুচি আনে। এ ছাড়া হজমশক্তি বৃদ্ধিতে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূরীকরণে যথেষ্ট সহায়তা করে। পুষ্টিবিদদের মতে, একজন পূর্ণবয়স্ক লোকের দৈনিক ২০০ গ্রাম শাকসবজি খাওয়া প্রয়োজন। কিন্তু আমরা খাই মাত্র ৬০-৭০ গ্রাম;। সেজন্য বিভিন্ন শাকসবজির পুষ্টি ও ভেষজগুণ সম্পর্কে জেনে নেয়া দরকার।

টমেটো

শীতকালীন সবজির মধ্যে টমেটো অন্যতম। এর মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। পাশাপাশি হৃদরোগকে করে প্রতিহত। টমেটো হজমের জন্য বেশ উপকারী। এর রস স্কার্ভি রোগ প্রতিরোধ করে দেহ ও দাঁতকে নিরোগ রাখে। এ ছাড়া শরীরের মেদ নিয়ন্ত্রণ করে এবং দেহের শক্তিকে রাখে অটুট।

ফুলকপি

পুষ্টিবিজ্ঞানীদের মতে, এর প্রতি ১০০ গ্রামে ভিটামিন-সি রয়েছে ৯১ মিলিগ্রাম। ফুলকপিতে ভিটামিন-কে’র পরিমাণও রয়েছে যথেষ্ট। এর অন্যান্য পুষ্টি উপাদানের মধ্যে আমিষ, শর্করা, চর্বি, ক্যালসিয়াম, লৌহ, ক্যারোটিন ও ভিটামিন-বি বিদ্যমান।

বাঁধাকপি

খাদ্যমান বিবেচনায় বাঁধাকপি একটি পুষ্টিকর সবজি। এতে প্রচুর পরিমাণ ক্যারোটিন ও ক্যালসিয়াম বিদ্যমান। বাঁধাকপি বহুমূত্রকে নিয়ন্ত্রণ করে।

গাজর

গাজর অত্যন্ত পুষ্টিসমৃদ্ধ মূল জাতীয় সবজি। কাঁচা ও রান্না উভয় অবস্থায়ই এটি খাওয়া যায়। কাঁচা গাজর কৃমিনাশক। এছাড়া প্লীহাবৃদ্ধি রোধ এবং আমাশয়ে বেশ কার্যকর।

আলু

পুষ্টিবিজ্ঞানীদের মতে, আলুতে ভিটামিন ‘এ’ ও ‘সি’ রয়েছে। এছাড়া শর্করা, আমিষ, ক্যালসিয়াম, লৌহ, ভিটামিন-এ, ভিটামিন-বি তো আছেই। গোলআলু একমাত্র সবজি, যা বিভিন্ন ধরনের মাছ গোশত রান্নায় তরকারি হিসেবে ব্যবহার হয়। আলু কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। হৃদরোগীরাও আলু খেতে পারেন।

মিষ্টি কুমড়া

মিষ্টি কুমড়া এ দেশের অন্যতম জনপ্রিয় সবজি। সারা বছর পাওয়া যায়। সংরক্ষণযোগ্য, অত্যন্ত সুস্বাদু। এ দেশে ভিটামিন-এ’র অভাব যথেষ্ট। এটি সবচেয়ে বেশি দেখা দেয় শিশু, গর্ভবতী এবং দুগ্ধদানকারী মায়েদের মধ্যে।

হোটেল স্টাইলে মিক্সড সবজি কারি

উপকরণ:

সবজি- ৬-৭ রকমের (পেঁপে, মিষ্টি কুমড়া, মটর, শিম, আলু, ফুলকপি, কাঁচা টমেটো, গাজর, ব্রুকলি- সব সবজি কিউব বা ছোট করে কাটা আর সমপরিমাণ করে নিতে হবে। এখানে ১ কাপ করে নেয়া। ছোলার ডাল- ১-২ কাপ, পেঁয়াজ কুচি- ২-৩টি বড়, কাঁচামরিচ ফালি- ৮-১০টি হলুদ+ধনে গুঁড়া– ১ চা চামচ, আদা+রসুন পেস্ট ১ চা চমচ, টমেটো ফালি করা ২টি, মরিচের গুঁড়া+জিরা গুঁড়া- ১-২ চা চামচ, ধনেপাতা কুচি- ১ মুঠো, লবণ- স্বাদমতো, তেল– রান্নার জন্য ২ টেবিল চামচ।

ফোঁড়নের জন্য লাগবে

রসুন চপ- ৬-৭ কোয়া, শুকনা মরিচ- ৩-৪টি, গরম মসলা, তেজপাতা- ২টি, আস্ত জিরা– ১-২ চা চামচ এবং তেল- পরিমাণমতো।

যেভাবে তৈরি করতে হবে

মিক্সড সবজি রান্না করতে হলে প্রথমে ছোলার ডাল ৩০ মিনিট আগে থেকে ভিজিয়ে রাখতে হবে। ডাল ফুলে উঠলে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে রাখতে হবে। এবার হাঁড়িতে সব সবজি ও ডাল নিয়ে তাতে অর্ধেক পেঁয়াজ কুচি, কাঁচামরিচ, হলুদ-মরিচ-ধনিয়া-জিরা গুঁড়া, দুই টেবিল চামচ তেল ও লবণ দিয়ে খুব ভালোভাবে মাখিয়ে নিতে হবে।

এমনভাবে মাখাতে হবে, যেন সবজির গায়ে মসলা বেশ ভালোভাবে লেগে যায়। সবজি মাখানো হলে হাত ধোয়া পানি দিয়ে দিতে হবে। বেশি পানি দেওয়ার দরকার নেই। সবজি ও পানি সমান সমান থাকলেই হবে।এবার হাড়িটি ঢাকনা দিয়ে ঢেকে চুলার আঁচ বাড়িয়ে রান্না করতে হবে। এবার পানি ফুটে উঠলে আঁচ মাঝারি করে রান্না করতে হবে।

মাঝে মাঝে আলতো করে কাঠের খুন্তি দিয়ে নেড়ে দিতে হবে। পেঁপে আর আলু যখন সেদ্ধ হয়ে যাবে তখন ঢাকনা খুলে দিতে হবে। যদি দেখেন, সবজিতে পানি বেশি রয়ে গেছে তখন চুলার আঁচ বাড়িয়ে পানি টানিয়ে নিতে হবে।পানি টেনে আসলে ধনেপাতা মিশিয়ে হাড়িটি চুলা থেকে নামিয়ে ঢেকে রাখতে হবে অথবা এক চুলায় সবজির হাঁড়ি রেখে অন্য চুলায় ফোঁড়নের জন্য প্যান বসাতে হবে।

প্যানে তেল গরম করে বাকি অর্ধেক পেঁয়াজ ও রসুন দিয়ে ভেজে নিতে হবে। পেঁয়াজ-রসুন হালকা বাদামি হলে তার মধ্যে আস্ত জিরা, শুকনো মরিচ আস্ত ৩-৪টি, অল্প গরম মসলার গুঁড়া ও তেজপাতা দিয়ে একসাথে একটু নেড়ে, এই মিশ্রণটি সবজির ওপর ঢেলে সাথে সাথে ঢাকনা দিয়ে দিতে হবে।

হয়ে গেলো হোটেলের স্বাদে মিক্সড সবজি কারি। সকালের নাস্তায় রুটি-পরোটার সাথে পরিবেশন করুন দারুণ মজার বাংলাদেশি হোটেল-স্টাইল মিক্সড সবজি। ভাতের সাথেও পরিবেশন করতে পারেন।

মন্তব্য

Beta version