-->

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ডায়েট

ট্রেন্ড ডেস্ক
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ডায়েট

বর্তমান বিশ্বে উচ্চ রক্তচাপ মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। উচ্চ রক্তচাপের শিকার সারা বিশে^ ১৫০ কোটির বেশি মানুষ। সারা বিশে^ কার্ডিওভাসকুলার রোগের অন্যতম প্রধান এবং সাধারণ কারণ হলো উচ্চ রক্তচাপ। উচ্চ রক্তচাপ বিশ^ব্যাপী প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার ৩০ শতাংশেরও বেশি প্রভাবিত করে।

উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁঁকি বাড়িয়ে তোলার কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে বেশি লবণ গ্রহণ, অতিরিক্ত মেদ, কাজের চাপ, মদপান, পরিবারের আকার, অতিরিক্ত আওয়াজ এবং ঘিঞ্জি পরিবেশে থাকা। একজন প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের রক্তচাপ থাকে ১২০/৮০ মিলিমিটার মার্কারি।

কারও ব্লাড প্রেশার রিডিং যদি ১৪০/৯০ বা এর চেয়েও বেশি হয়, তখন বুঝতে হবে তার উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা আছে। অন্যদিকে রক্তচাপ যদি ৯০/৬০ বা এর আশপাশে থাকে, তাহলে তাকে লো ব্লাড প্রেশার হিসেবে ধরা হয়। যদিও বয়স নির্বিশেষে রক্তচাপ খানিকটা বেশি বা কম হতে পারে।

উচ্চ রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে ডায়েটের ভূমিকা রয়েছে। এবার তাহলে জেনে নিন সেসব খাবারের তালিকা একনজরে-

ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফল: ভিটামিন সি সমৃদ্ধ বিভিন্ন ফল যেমনÑ জাম্বুরা, কমলা এবং লেবু ইত্যাদি ফল উচ্চ রক্তচাপ কমাতে শক্তিশালী হিসেবে কাজ করতে পারে।

কলা: কলায় সোডিয়ামের পরিমাণ কম থাকে। অন্যদিকে, পটাসিয়াম, ফাইবার ও ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ থাকায় রক্তচাপ কম রাখে ও উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।

কমলালেবু: কমলালেবু প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। রক্তচাপ কমাতে এর বিকল্প নেই। হার্টকে সুস্থ রাখার জন্য স্বাস্থ্যকর ফাইবার ও ভিটামিন সি থাকে এতে। সকালের ব্রেক ফাস্টে বা টিফিন ব্রেকে কমলালেবুর রস খেতে পারেন।

বেদানা:  বেদানায় রয়েছে এসিই নামক এনজাইম। এটি রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। তাতে রক্তনালির আকার নিয়ন্ত্রণ করে ও রক্তচাপ কমায়। বেদানা আপনি যেমনভাবে খুশি খেতে পারেন। জুস হিসেবে বা সালাদে মিশিয়ে খেতে পারেন।

আম:  ফলের রাজা আমে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, বিটা ক্যারোটিন ও পটাসিয়ামের একটি বড় উৎস। যার কারণে রক্তচাপ কমাতে কার্যকর হয়।

কুমড়া বীজ:  কুমড়া বীজ দেখতে অনেক ছোট মনে হলেও পুষ্টিগুণে অনেক পরিপূর্ণ। এতে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টির একটি ঘনীভূত উৎস যেমন- ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম এবং আর্জিনিন থাকে। যা রক্তনালি শিথিলকরণ এবং রক্তচাপ কমানোর জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ।

চর্বিযুক্ত মাছ:  বিভিন্ন চর্বিযুক্ত মাছ ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের অনেক ভালো উৎস হতে পারে। আর এটি হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। এই চর্বিগুলো উচ্চ রক্তচাপের মাত্রা কমানো ছাড়াও প্রদাহ কমাতে এবং অক্সিলিপিনস নামক রক্তবাহী যৌগের মাত্রা হ্রাস করে।

চিয়া বীজ:  চিয়া বীজে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য অপরিহার্য পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম এবং ফাইবার প্রচুর পরিমাণে থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে, চিয়া বীজ রক্তচাপ কমায় এবং এটি ১২ সপ্তাহের বেশি সময় ধরে খেলে তা আরো বেশি উপকার করে।

তুলসি পাতা:  নিয়মিত সকালে ঘুম থেকে ওঠে খালি পেটে যদি তুলসি পাতার রসের সঙ্গে পরিমাণ মতো মধু মিশিয়ে খেতে পারেন, তাহলে রক্তচাপ স্বাভাবিক মাত্রায় চলে আসতে সময় লাগে না।

তরমুজ:  রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে তরমুজ বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। তরমুজের ভেতরে উপস্থিত ফাইবার, ভিটামিন এ, পটাসিয়াম এবং লাইকোপেন রক্তচাপকে স্বাভাবিক রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

রসুন:  খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে এই প্রাকৃতিক উপাদানটি যে দারুণ কাজে আসে সে সম্পর্কে তো সবারই জানা আছে। কিন্তু এ কথা জানা আছে কি নিয়মিত দু-কোয়া রসুন খাওয়া শুরু করলে রক্তচাপও নিয়ন্ত্রণে চলে আসে!

বিট:  বিটে উপস্থিত নাইট্রিক অ্যাসিড ব্লাড ভেসেলের কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। ফলে স্বাভাবিকভাবেই শরীরজুড়ে রক্তের প্রবাহ এতটাই বেড়ে যায় যে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগই পায় না।

মিষ্টি আলু:  বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত এই সবজিটি খাওয়া শুরু করলে দেহের অন্দরে পটাশিয়ামের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে, যা ব্লাড প্রেশারকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

পালংশাক: পালংশাকে নাইট্রেট বেশি থাকে। এ ছাড়া এতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম প্রচুর পরিমাণে থাকায় তা রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

নারিকেলের পানি:  নারিকেলের পানিতে রয়েছে প্রাকৃতিক ইলেকট্রোলাইট, যা শরীরের পানির ভারসাম্য বজায় রেখে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে প্রতিদিন এক গ্লাস নারিকেলের পানি পান করুন।

 

মন্তব্য

Beta version