প্যানিক ডিসঅর্ডার এমন একটি মানসিক রোগ, যাতে ব্যক্তি প্রচণ্ড আতঙ্কের শিকার হন। সাধারণত প্রতিটি প্যানিক অ্যাটাকের স্থায়িত্বকাল দশ থেকে পনেরো মিনিটের মতো হয়। তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা ৩০ মিনিটের বেশি হতে পারে। প্রতি মাসে কমপক্ষে একবার প্যানিক অ্যাটাক হবে।
শারীরিক উপসর্গ: দ্রুত হৃৎস্পন্দন বা হার্টরেট বেড়ে যাওয়া, বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট, অতিরিক্ত ঘাম হওয়া, ঝিমুনি ভাব, দুর্বলতা, পেটে ব্যথা, মানসিক উপসর্গ. প্রচণ্ড নার্ভাস হওয়া, প্রচণ্ড ভয় পাওয়া, মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা করা, একা থাকতে চাওয়া এবং লোকের সঙ্গ এড়ানো
কারণ: এক গবেষণায় পাওয়া গেছে, সাধারণত পুরুষদের তুলনায় নারীদের মধ্যে এ রোগ বিস্তারের হার বেশি। প্যানিক ডিসঅর্ডার যেকোনো বয়সেই দেখা দিতে পারে। তবে ১৩ থেকে ১৯ বছর বয়সি ছেলেমেয়েদের ঝুঁঁকি থাকে বেশি।
প্যানিক ডিসঅর্ডারের পেছনে অনেক কারণ কাজ করলেও মূলত মস্তিষ্কে বিভিন্ন রাসায়নিক উপাদান ও হরমোনের ভারসাম্যহীনতা এর জন্য দায়ী।পাশাপাশি বিভিন্ন পারিপার্শ্বিক নিয়ামক,
যেমন:
বৈবাহিক কিংবা দাম্পত্যজীবনে জটিলতা
কোনো দুর্ঘটনা, আর্থিক সমস্যা
অনাকাক্সিক্ষত গর্ভধারণ বা গর্ভপাত
কোনো প্রত্যাশিত কাজে সফলতা না পাওয়া
মাদকাসক্তি
ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
এই রোগের পারিবারিক ইতিহাস থাকলে অন্যদের তুলনায় ৪ থেকে ৮ গুণ বেশি হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
করণীয়: ওষুধের মাধ্যমে চিকিৎসা দেওয়ার সঙ্গে কিছু মনস্তাত্ত্বিক চিকিৎসা, অর্থাৎ সাইকোথেরাপি এবং কাউন্সেলিং দেওয়া হয়।
এগুলোর মধ্যে আছে: কগনিটিভ বিহেভিয়র থেরাপি, রিল্যাক্সেশন, টেকনিক, ফ্যামিলি থেরাপি ইত্যাদি।
এই রোগের উপসর্গগুলো নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং সময়মতো সহায়তা ও উপসর্গের সচেতনতার সাহায্যে রোগটিকেও নিয়ন্ত্রণ করা যায়। প্যানিক অ্যাটাক নিয়ে উদ্বিগ্ন বা মানসিক চাপে থাকলে এবং কীভাবে মোকাবিলা করবেন, সে চিন্তা হলে অভিজ্ঞ সাইকোথেরাপিস্ট, কাউন্সেলর ও মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সহায়তা নিতে পারেন।
লেখক: সাইকোলজিস্ট, ট্রেইনার
মন্তব্য