আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আইনানুযায়ী নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনে সম্ভাব্য ব্যক্তিদের তালিকা রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাবে সার্চ কমিটি।
গতকাল রোববার কমিটির প্রথম বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিকেল সাড়ে ৪টায় সুপ্রিম কোর্টের জাজেস লাউঞ্জে কমিটির সভাপতি ও আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে বৈঠক শুরু হয়। ৩ ঘণ্টার বৈঠক শেষ হয় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায়।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো যদি তাদের পছন্দমতো ব্যক্তির নাম প্রস্তাব করতে চায়, তাহলে ই-মেইলে প্রস্তাব করতে পারবে। এজন্য মন্ত্রিপরিষদ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে আজই ই-মেইল বা ওয়েবসাইটে ঠিকানা দলগুলোকে সরবরাহ করা হবে। এজন্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে পৃথক কোনো বৈঠক হবে না।
এদিকে ইসি গঠনে গঠিত ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি আগামী শনি ও রোববার দুদিন সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, মিডিয়াব্যক্তিত্ব ও বিশিষ্টজনদের সঙ্গে বৈঠক করে মতামত নেবে। এছাড়া আগামীকাল মঙ্গলবার ছয় সদস্যের কমিটি আবারও কর্মপদ্ধতি নির্ধারণে বৈঠকে বসার কথা জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব। প্রথম দিনের সার্চ কমিটির বৈঠকে কর্মপদ্ধতি নির্ধারণ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে বলে জানা গেছে।
তবে বৈঠক শেষে সার্চ কমিটির কেউ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেননি। কমিটির সদস্য হিসেবে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী, সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন, সাবেক নির্বাচন কমিশনার মুহাম্মদ ছহুল হোসাইন এবং কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক আনোয়ারা সৈয়দ হক।
আইনানুযায়ী ১৫ দিনের মধ্যে রাষ্ট্রপতির কাছে ইসি গঠনে সম্ভাব্য ব্যক্তিদের নাম প্রস্তাব করে প্রতিবেদন দেওয়ার কথা রয়েছে। আজ সোমবার সার্চ কমিটির কার্যক্রমের প্রথম দিন শুরু হচ্ছে বলে জানানো হয়। এর আগে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও অন্য নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ দেওয়ার জন্য নাম সুপারিশ করতে সার্চ কমিটি গঠন করে শনিবার প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন-২০২২ এর ধারা ৩ মোতাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্য নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ দেওয়ার জন্য আইনে বর্ণিত যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের নাম সুপারিশ করার লক্ষ্যে অনুসন্ধান (সার্চ) কমিটি গঠন করা হলো।
অনুসন্ধান কমিটি ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন-২০২২’ মোতাবেক দায়িত্ব ও কার্যাবলিসম্পন্ন করবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ অনুসন্ধান কমিটির কার্য সম্পাদনে প্রয়োজনীয় সাচিবিক সহায়তা দেবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।
আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশনের (ইসি) মেয়াদ শেষ হচ্ছে। এর আগেই নতুন ইসি গঠন করা হবে। সার্চ কমিটির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের সদস্যদের মনোনীত করার পর রাষ্ট্রপতি তা চ‚ড়ান্ত করেন। এবার নতুন আইনানুযায়ী সার্চ কমিটি গঠন করা হলো।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গেল ১৭ জানুয়ারি মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন-২০২২’ অনুমোদন দেওয়া হয়।
গত ২৭ জানুয়ারি বিলটি জাতীয় সংসদে পাসের পর ২৯ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি আইনটিতে সম্মতি দেন। ৩০ জানুয়ারি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল-২০২২’ এর গেজেট প্রকাশ করা হয়। প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন-২০২২’ অনুযায়ী সার্চ কমিটি (অনুসন্ধান কমিটি) গঠন করে দেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
মন্তব্য