-->
শিরোনাম

চালু হয়নি মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগার

জনবলের অভাব

জাফর আহমদ 
চালু হয়নি মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগার
কেরানীগঞ্জের মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগার। ছবি ভোরের আকাশ

উদ্বোধন হয়েছে দুই বছর আগে। জনবল অনুমোদন হয়নি এখনো। ফলে চালু হয়নি কেরানীগঞ্জের মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগার। এ কারণে নারী বন্দিদের রাখা হচ্ছে কাশিমপুর মহিলা কারাগারে।

জনবল অনুমোদনের জন্য গত জানুয়ারি মাসে বৈঠক করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যয় ব্যবস্থাপনা অনুবিভাগ। ওই বৈঠকেই জনবল না থাকায় কারাগার চালু করতে না পারার বিষয়টি তুলে ধরেন কারা অধিদপ্তরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা।

এদিকে পদ সৃজনের আগে অন্য কারাগারের মহিলা ওয়ার্ডের বাড়তি জনবল দিয়ে মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে জনবল সমন্বয় করা যায় কিনা, তা খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত হয় ওই বৈঠকে। নতুন এসব পদ সৃজনে কি পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন হবে, এ বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হবে।

এ ছাড়া কারাগারে মহিলা বন্দিদের জন্য বিশেষ কি কি ব্যবস্থা প্রয়োজন এবং এ সম্পর্কিত পদগুলো কি কি, এগুলো খোঁজ নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নারী কারাবন্দিদের কারাগারে কি কি স্বাস্থ্যসেবা প্রয়োজন, সে বিষয়েও অনুসন্ধান চালানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়।

বৈঠক সূত্রে জানা যায়, অর্থ মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারের বাড়তি জনবলের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে কারা অধিদপ্তরের প্রতিনিধি কর্নেল আবরার হোসেন বলেন, ‘জনবলের অভাবে ঢাকার কেরানীগঞ্জে স্থাপিত নতুন মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগার চালু করা যাচ্ছে না। মহিলা কারাগারের প্রকৃতি অন্য কারাগার থেকে আলাদা এবং অনেক রকমের ভিন্নতা রয়েছে। ফলে জনবলের অবশ্যকতা বিবেচনায় এ কারাগারের পদ সৃজন করা হয়েছে।’

পদগুলো কাটছাঁট ব্যতীত অর্থ বিভাগের সম্মতি পাবেন বলে তিনি আশা করেন।

জানা গেছে, ২০২০ সালের ২৭ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কেরানীগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের অভ্যন্তরে নারী বন্দিদের জন্য এ ‘মহিলা কেন্দ্রিয় কারাগার’ উদ্বোধন করেন। সে সময় বলা হয়েছিল, আধুনিক সুযোগ-সুবিধা দিয়ে নারী বন্দিদের এই মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হবে। কারাগারটিতে কিশোরী বন্দিদের জন্য রয়েছে আলাদা ভবন। যে বন্দিদের সন্তান রয়েছে, তাদের জন্য ডে-কেয়ার সেন্টার (দিবাযত্ন কেন্দ্র) রয়েছে।

এখানে হাসপাতাল, বিদ্যালয়, পাঠাগার, ওয়াশিং প্ল্যান্ট এবং মানসিকভাবে অসুস্থ বন্দিদের জন্যও আলাদা ওয়ার্ডের ব্যবস্থা রয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে কারা সদর দপ্তরের উপকারা মহাপরিদর্শক সুরাইয়া আক্তার ফোনে ভোরের আকাশকে জানান, মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগার উদ্বোধন করা হলেও জনবল অনুমোদন হয়নি। এ কারণে চালু করা যায়নি।

তিনি বলেন, ‘আমরা জনবলের অপেক্ষায় আছি। নারী কারাবন্দিরা এখন কাশিমপুর কারাগারে রয়েছেন। জনবল অনুমোদন পেলে নিয়োগ সম্পন্ন হবে। তারপর মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগার চালু হবে।’

জনবল অনুমোদনের জন্য অনুষ্ঠিত অর্থ মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে জনবলের যৌক্তিকতা নিয়ে আলোচনা করা হয়। জনবল অনুমোদনের আগে কারাগার সরেজমিনে পরিদর্শন করার বিষয়েও আলোচনা হয় ওই বৈঠকে।

বৈঠকের সভাপতি অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বাজটে ও ব্যয় ব্যবস্থাপনা) কবিরুল ইজদানী খান বৈঠকে বলেন, ‘আধুনিক প্রেক্ষাপটে কারাগারকে সংশোধনাগার হিসেবে বিবেচনা করলে, সীমিত জনবলের মাধ্যমে বন্দিদের দিয়েই কারাগারের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন কার্যক্রম গঠনমূলকভাবে পরিচালনা করার কথা। কিন্তু বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কারণে তা হয়ে ওঠে না।’

কেরানীগঞ্জে অবস্থিত মহিলা কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রকৃতি ভিন্ন ধরনের হওয়ার কারণে কয়েদি দিয়ে অভ্যন্তরীণ কাজ সম্পাদন করা যাচ্ছে না। এ জন্য ১৭২ কারারক্ষী চায় কারা কর্তৃপক্ষ। এই কারা রক্ষীর পদ অনুমোদনের আগে বিষয়টি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে চায় অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট দপ্তর।

মন্তব্য

Beta version