-->
শিরোনাম

মহীসোপানের হালনাগাদ তথ্য জাতিসংঘে উপস্থাপন করল বাংলাদেশ

কূটনৈতিক প্রতিবেদক
মহীসোপানের হালনাগাদ তথ্য জাতিসংঘে উপস্থাপন করল বাংলাদেশ

বঙ্গোপসাগরের মহীসোপানের হালনাগাদ তথ্য জাতিসংঘে উপস্থাপন করেছে বাংলাদেশ। ২০২০ সালের ২২ অক্টোবর সিএলসিএস-এ আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের মহীসোপানের

সংশোধিত এ তথ্য দাখিলের পর এ সংক্রান্ত হালনাগাদ তথ্য উপস্থাপন করা হলো। আজ বুধবার (২মার্চ) জাতিসংঘ সদরদপ্তরে ২১ সদস্যের ‘কমিশন অন দ্য লিমিটস অফ দ্য কন্টিনেন্টাল

শেল্ফ (সিএলসিএস)’ এর ৫৪তম অধিবেশনে হালনাগাদ তথ্য উপস্থাপন করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। এ সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ একটি ঘনবসতিপূর্ণ দেশ,

যেখানে সম্পদের অভাব রয়েছে। বাংলাদেশের মহীসোপান সীমার বিষয়ে জাতিসংঘের চুড়ান্ত সুপারিশ ওই বিশাল সমুদ্র এলাকার সকল প্রাণযুক্ত ও প্রাণহীন প্রাকৃতিক সম্পদের অন্বেষণ, সংরক্ষণ

ও উন্নয়নে একটি ভিত্তি প্রদান করবে। যা দেশের টেকসই উন্নয়ন, শক্তির চাহিদা ও জনগণের সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রাখবে।’ বাংলাদেশ সরকার এক দশকেরও বেশি সময়

ধরে এই দলিলাদির উপস্থাপন নিয়ে কাজ করছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সার্বিক সমন্বয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ নৌবাহিনী, পেট্রোবাংলা, বাপেক্স, জিওলজিক্যাল সার্ভে অব বাংলাদেশ, স্পারসো ও

বিআইডব্লিউটিএ এর একটি বিশেষজ্ঞ দল এই দাখিল প্রস্তুতি সম্পন্ন করে।

এ ছাড়া কমনওয়েলথ সচিবালয় এবং জাতিসংঘের ট্রাস্ট ফান্ড থেকে বাংলাদেশ এ বিষয়ে আইনি ও প্রযুক্তিগত সহায়তা পেয়েছে।

ড. মোমেন আরো বলেন, ‘মহীসোপান সীমা সংক্রান্ত এই উপস্থাপন বাংলাদেশের জন্য একটি বড় অর্জন। বিশেষ করে এমন একটি সময়ে এটি সম্পন্ন করা হলো, যখন আমরা ২০৪১ সালের

মধ্যে একটি উন্নত দেশ হওয়ার পথে সামনে এগিয়ে চলেছি। যেটি জাতির দীর্ঘ দিনের লালিত স্বপ্ন। আগামী দিনগুলোতে এই মহীসোপান এলাকার প্রাণযুক্ত ও প্রাণহীন প্রাকৃতিক সম্পদ-প্রাচুর্য

উন্মোচণে আমাদের পূর্ণ সামর্থ্যের ব্যবহারে পথচলায় সবচেয়ে বড় পাথেয় হয়ে থাকবে।’ জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন এ তথ্য জানিয়ে বলেছে, বাংলাদেশের মহীসোপান সীমা সংক্রান্ত

দলিলাদি ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রথমবারের মতো সিএলসিএস-এ জমা দেয়া হয়। তবে, মিয়ানমার ও ভারতের .. অমীমাংসিত সমুদ্রসীমাজনিত বিরোধের কারণে কমিশন বাংলাদেশের

দাখিলকৃত দলিলাদি সে সময় পরীক্ষা করতে পারেনি। পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বিচারিক সংস্থার মাধ্যমে মিয়ানমার ও ভারতের সাথে সমুদ্রসীমা বিরোধের সমাধান করে।

আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালের রায়ের ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশ সরকার ২০১১ সালের দাখিল করা দলিলাদি পূনরায় পর্যালোচনা করে ২০২০ সালের ২২ অক্টোবর সিএলসিএস এর কাছে

বাংলাদেশের মহীসোপান সীমা সংক্রান্ত দলিলাদির নতুন সংস্করণ পেশ করে। এই সংশোধিত দাখিলে ট্রাইব্যুনাল নির্ধারিত বঙ্গোপসাগরের মহীসোপানের নতুন সীমারেখা অনুসরণ করা হয়।

বাংলাদেশ বঙ্গোপসাগরে ২শ’ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত মহীসোপানে তার অধিকার রক্ষাও ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত তথ্য সরবরাহ করেছে। এর পর সিএলসিএস এর

নিয়ম অনুযায়ী এ উদ্দেশে গঠিত একটি সাব-কমিশন বাংলাদেশের উপস্থাপিত দলিলাদি পরীক্ষা করে বাংলাদেশের মালিকানার বিষয়ে সুপারিশ প্রদান করবে। এর ফলে বাংলাদেশ ঐ এলাকায়

প্রাকৃতিক সম্পদ অনুসন্ধান শুরু করতে পারবে। মহীসোপানের হালনাগাদ তথ্য জাতিসংঘে উপস্থাপনের সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের

সচিব ও রিয়ার অ্যাডমিরাল মো. খুরশেদ আলম এবং এ সংক্রান্ত কমিটির অন্যান্য কারিগরি বিশেষজ্ঞরা।

 

মন্তব্য

Beta version