-->

সংযুক্ত আরব আমিরাত গেলেন প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক
সংযুক্ত আরব আমিরাত গেলেন  প্রধানমন্ত্রী
সংযুক্ত আরব আমিরাতের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার আগে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিদায় অভিবাদন জানান শীর্ষ কর্মকর্তারা। (ছবি: পিআইডি)

সংযুক্ত আরব আমিরাতের উপরাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী ও দুবাইয়ের শাসক মুহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুমের আমন্ত্রণে দেশটিতে পাঁচদিনের সফরে রওনা হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সোমবার (৭ মার্চ) বিকেল সোয়া ৪ টায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিজি-১৩০১ ভিভিআইপি ফ্লাইটে আরব আমিরাতের উদ্দেশে রওনা দেন প্রধানমন্ত্রী। স্থানীয় সময় রাত পৌনে ১০টায় আবুধাবি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবেন তিনি।

বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে স্ট্যাটিক গার্ড অব অনার প্রদান করা হবে। বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানাবেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং আমিরাত সরকারের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিরা। বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে প্রধানমন্ত্রী তার সফরকালীন আবাসস্থলে যাবেন।

সফরসূচি অনুযায়ী, ৮ মার্চ দুপুরে দুবাই এক্সিবিশন সেন্টারে যাবেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত ‘রিডিফাইনিং দ্য ফিউচার ফর উইমেন’ শীর্ষক উচ্চ পর্যায়ের প্যানেল আলোচনায় অংশ নেবেন। এরপর বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন পরিদর্শন করবেন। বিকেলে দুবাই এক্সিবিশন সেন্টারে উপরাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী ও দুবাইয়ের শাসক মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুমের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

৯ মার্চ সকালে আবুধাবির ক্রাউন প্রিন্স শেখ মোহম্মদ বিন জায়েদ বিন সুলতান আল-নাহিয়ানের সঙ্গে বৈঠক করবেন । এরপর সংযুক্ত আরব আমিরাতের জাতির মা শেখ ফাতিমা বিনতে মুবারকের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। রাতে সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. আবু জাফরের দেওয়া নৈশভোজে অংশ নেবেন।

১০ মার্চ সকালে ‘এফএও রিজিওনাল কনফারেন্স ফর এশিয়া অ্যান্ড দ্য প্যাসিফিক’ এর উদ্বোধনী পর্বে অংশ নেবেন। এদিন বিকেলে সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের যৌথ অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।

১১ মার্চ সন্ধ্যায় সংযুক্ত আরব আমিরাতে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশি কমিউনিটি আয়োজিত সংবর্ধনায় অংশ নেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই অনুষ্ঠান থেকে ভার্চ্যুয়ালি প্রধানমন্ত্রী রাশ আল খাইমাতে বাংলাদেশ ইংলিশ প্রাইভেট স্কুল অ্যান্ড কলেজে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভবনের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করবেন। সফর শেষে শনিবার (১২ মার্চ) রাতে ঢাকায় ফিরে আসবেন প্রধানমন্ত্রী।

এর আগে প্রধানমন্ত্রীর সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরে চার থেকে পাঁচটি সমঝোতা স্মারক (এমইউ) সই হবার সম্ভাবনা রয়েছে। চুক্তিগুলো কী হবে সেটা চূড়ান্ত নয়।

এ সফরে দেশটির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধি, সরাসরি শিপিং লাইন চালু, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, জলবায়ু পরিবর্তনে টেকসই উন্নয়ন, আইসিটি ও আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সে সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে জোর দেবে ঢাকা।

গত অর্থ বছরে ৪০ হাজার বাংলাদেশি কর্মী দেশটিতে গেছেন। আগামীতে এ সংখ্যা আরো বাড়বে। দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক আরো জোরদারে নজর থাকবে ঢাকার। দেশটির বিনিয়োগ টানতে বিদেশিদের সুযোগ-সুবিধাগুলোও তুলে ধরা হবে। বিশেষ করে সংযুক্ত আরব আমিরাত খাদ্যের বেশিরভাগ আমদানি করে থাকে। আমরাও সেখানে খাদ্য রফতানি করতে চাই।

দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে আমাদের মোট আমদানি-রপ্তানির পরিমাণ প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার। তবে বাণিজ্য ঘাটতি এখনও দেড় বিলিয়ন ডলারের মতো। এর মূল কারণ আমরা তাদের কাছ থেকে শুধু জ্বালানি তেল আমদানি করে থাকি। রপ্তানির পরিমাণ আরও বাড়ানোর জন্য এই সফরে গুরুত্বারোপ করা হবে। সেজন্য বাংলাদেশের সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যে সরাসরি শিপিং চালু নিয়ে আলোচনা করা হবে।

মোমেন বলেন, ফেব্রুয়ারিতে যখন সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরে গিয়েছিলাম, তখন এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রীর সফরে তা আরও জোরদারভাবে উপস্থাপন করা হবে। পাশাপাশি বাংলাদেশের সঙ্গে সংযুক্ত আমিরাতের সম্পর্ক আরও জোরালো করতে দুই দেশের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের মাঝে জয়েন্ট বিজনেস ফোরামের আয়োজন করা হবে। যা আমাদের ব্যবসা বাণিজ্যের জন্য খুবই লাভজনক হবে বলে আমি মনে করি। এতে সৃষ্টি হতে পারে বিনিয়োগের নতুন ক্ষেত্র।

তিনি বলেন, আমরা নবায়নযোগ্য জ্বালানি, জলবায়ু পরিবর্তনসহ টেকসই উন্নয়নের জন্য আমিরাতের সঙ্গে সহযোগিতার ক্ষেত্র বাড়াতে আলোচনায় বসব। এছাড়া আইসিটি, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের সহযোগিতার মাধ্যমে আমরা দুই দেশের মধ্যে অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান বিনিময়ের নতুন নতুন অধ্যায় সূচনা করতে ইচ্ছুক।

মন্তব্য

Beta version