ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজে রকেট হামলায় নিহত জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমানের মরদেহ নিয়ে গ্রামের বাড়ি রওনা হয়েছেন স্বজনরা।
সোমবার (১৪ মার্চ) দুপুর ১টার কিছু সময় পরে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মরদেহটি অ্যাম্বুলেন্সে নিয়ে রওনা হন তারা।
এর আগে তুরস্কের ইস্তাম্বুল হয়ে টার্কিস এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে দুপুর ১২টার কিছু পরে মরদেহটি ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছায়। হাদিসুরের মরদেহ গ্রহণ করতে বিমানবন্দরে অপেক্ষায় ছিলেন তার ছোটভাই গোলাম রহমান প্রিন্সসহ নিকট আত্মীয় ও বন্ধুরা।
হাদিসুরের বাড়ি বরগুনার বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের কদমতলা বাজারসংলগ্ন। তিন ভাই এক বোনের মধ্যে বোন সবার বড়। এরপর হাদিসুর রহমান। ছোট দুই ভাই লেখাপড়া করছেন। হাদিসুর রহমানই ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি।
আরো পড়ুন: অবশেষে এলো হাদিসুরের মরদেহ
গত শুক্রবার (১১ মার্চ) গভীর রাতে ইউক্রেন থেকে মালদোভা হয়ে রোমানিয়ার রাজধানী বুখারেস্টে পৌঁছায় হাদিসুরের মরদেহ। কিছু দাপ্তরিক কাজ শেষে হাদিসুরের মরদেহ ঢাকা পাঠানোর সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়।
শনিবার রাত ১০টার দিকে বুখারেস্ট থেকে ঢাকার উদ্দেশ্য মরদেহটি তুলে দেওয়া হয় টার্কিস এয়ারলাইন্সের একটি কার্গো ফ্লাইটে। তুরস্কের ইস্তাম্বুলে পৌঁছানোর পর সেখানে ভারী তুষারপাতের কারণে ফ্লাইটটি বাতিল করা হয়েছিল।
বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের মালিকানাধীন ‘বাংলার সমৃদ্ধি’ জাহাজটি ড্যানিশ কোম্পানি ডেল্টা করপোরেশনের অধীনে ভাড়ায় চলছিল। জাহাজটি মুম্বাই থেকে তুরস্ক হয়ে ২২ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে যায়। সেখান থেকে সিমেন্ট ক্লে নিয়ে ২৪ ফেব্রুয়ারি ইতালির রেভেনা বন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়ার কথা ছিল।
এর আগেই ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরু হলে ২৯ জন ক্রু নিয়ে অলভিয়া বন্দরে আটকা পড়ে জাহাজটি। ২ মার্চ রকেট হামলায় জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার হাদিসুর রহমান মারা যান। পরদিন ৩ মার্চ জাহাজটি থেকে ২৮ নাবিককে সরিয়ে নেওয়া হয়। এরপর তাদের নিরাপদ বাঙ্কারে রাখা হয়।
সেখান থেকে তাদের প্রথমে মালদোভা, পরে রোমানিয়া হয়ে ৯ মার্চ দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। তারা সবাই সুস্থ আছেন এবং বর্তমানে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে রয়েছে।
গত ৯ মার্চ ২৮ নাবিকের ঢাকা ফেরার দিন হাদিসুরের মরদেহ গ্রহণ করতে বিমানবন্দরে উপস্থিত হয়েছিলেন তার ছোটভাই, মা-বাবা ও নিকট আত্মীয়রা।
মন্তব্য