জাতিসংঘ স্থায়ী মিশনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোতে যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০২ তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস পালিত হয়েছে।
শুক্রবার (১৮ মার্চ) ঢাকায় প্রাপ্ত পৃথক সরকারি তথ্য বিবরণীতে এসব কথা জানানো হয়েছে।
‘বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনের অঙ্গীকার, সকল শিশুর সমান অধিকার’- এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরস্থ বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন,ব্রাজিলের ব্রাসিলিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাস, কানাডার অটোয়ায় বাংলাদেশ হাইকমিশন,পর্তুগালের লিসবনে বাংলাদেশ দূতাবাস, কানাডার টরন্টোতে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল, গ্রীসের এথেন্সে বাংলাদেশ দূতাবাস, জার্মানির বার্লিনে বাংলাদেশ দূতাবাস, জর্ডানের আম্মানে বাংলাদেশ দূতাবাস, যুক্তরাষ্ট্রের মায়ামীস্থ বাংলাদেশ কনস্যূলেট জেনারেল, অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরায় বাংলাদেশ হাইকমিশন এবং মেক্সিকোর মেক্সিকো সিটিতে বাংলাদেশ দূতাবাস জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০২ তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস নিজ-নিজ উদ্যোগে যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যদিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পালন করা হয়।
স্থায়ী মিশন, বাংলাদেশ দূতাবাস ও হাইকমিশনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্যদিয়ে অনুষ্ঠান শুরু করার পাশপাশি দূতাবাস ও হাইকমিশনে অস্থায়ীভাবে নির্মিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করে শোনানো হয়। এরপর অনুষ্ঠিত হয়,বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানমালা। তথ্য বিবরণীতে বলা হয়, অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের হাইকমিশনার ও রাষ্ট্রদূতরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক ও সংগ্রমমুখর জীবন, কর্ম, আদর্শ এবং একটি স্বাধীন দেশ গঠনে তাঁর ভূমিকা ও অবদানের কথা তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন। এছাড়া, শিশুদের প্রতি বঙ্গবন্ধুর অপরিসীম ভালবাসা ও মমত্ববোধের কথাও বক্তারা তুলে ধরেন।
শিশু দিবসের গুরুত্ব ও শিশুদের জন্য বর্তমান সরকারের মাইলফলক অর্জন ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার বিষয়েও বাংলাদেশের হাইকমিশনার ও রাষ্ট্রদূতরা গুরুত্বসহকারে আলোচনা করেন। তাঁরা বলেন,‘বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না। বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ একে অপরের পরিপূরক। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও নেতৃত্বের গুণাবলী ধারণ করে তাঁর কণ্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের মানুষের জন্য অর্থনৈতিক মুক্তির পাশাপাশি শিশুদের সুনাগরিক এবং দেশপ্রেমিক হিসেবে গড়ে তুলতে প্রয়োজনীয় সবকিছুই নিশ্চিত করছেন।
জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে এসব দেশে চিত্রাঙ্কন ও রচনা প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয় এবং বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। জাতির পিতার বর্ণাঢ্য জীবন ও কর্মের উপর নির্মিত একটি প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শণ করা হয়। অনুষ্ঠান শেষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তাঁর পরিবারের শহিদ সদস্যদের, মুক্তিযুদ্ধে সকল শহিদ এবং বাংলাদেশের অগ্রগতি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০২তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস-২০২২ উপলক্ষে নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেল দিনব্যাপি কর্মসূচি গ্রহণ করে।
জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনার মাধ্যমে প্রথম পর্বেও অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয়। কনসাল জেনারেল মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়। কনসাল জেনারেল বিশ্ব মানচিত্রে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে বঙ্গবন্ধুর অসামান্য অবদানের কথাও উল্লেখ করেন। এছাড়াও জাতির পিতার বর্ণাঢ্য জীবন ও কর্মের উপর নির্মিত একটি প্রামাণ্য চিত্র প্রর্শন করা হয়। জাতির পিতা ও তাঁর পরিবারের শাহাদাতবরণকারী অন্যান্য সদস্যসহ মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা কওের অনুষ্ঠিত হয় বিশেষ মোনাজাত। কুইন্স পাবলিক লাইব্রেরিতে শিশু-কিশোরদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।কুইন্স পাবলিক লাইব্রেরিতে আলোচনায় ‘ফ্রেন্ডস অব লিবারেশন ওয়ার অনার’ পদকপ্রাপ্ত মুক্তিযুদ্ধ সমর্থনকারী বাংলাদেশের বন্ধু লিয়ার লেভিন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। লেভিন স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ সৃষ্টিতে বঙ্গবন্ধুর অবদানের কথা স্মরণ করে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন।
তারেক মাসুদ ও ক্যাথরিন মাসুদ পরিচালিত ‘মুক্তির গান’ চলচ্চিত্রে লেভিন এর ধারনকৃত চিত্র ও ভিডিও ফুটেজ ব্যবহার করা হয়। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন কনসাল জেনারেল মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম ও কুইন্স পাবলিক লাইব্রেরীর ভাইস প্রেসিডেন্ট নিক বোরন। অনুষ্ঠানে ভারত, ভুটান, নেপাল ও তুরস্কের কনসাল জেনারেলগণ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে স্থানীয় বাংলাদেশি কমিউনিটি শিল্পীদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান মঞ্চস্থ করা হয়। এরপর চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয় অনুষ্ঠানে এবং জন্মদিনের কেক কাটা হয়। জাতির পিতা ও তাঁর পরিবারের শাহাদাত বরণকারী সদস্যদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
সূত্র : বাসস
মন্তব্য