-->
শিরোনাম

যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ প্রত্যাশা বাংলাদেশের, শ্রম পরিস্থিতি উন্নত হলেই ‘জিএসপি’

ভোরের আকাশ ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ প্রত্যাশা বাংলাদেশের, শ্রম পরিস্থিতি উন্নত হলেই ‘জিএসপি’
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনকে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরে স্বাত জানাচ্ছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বাংলাদেশে অবকাঠামো, আইটি ও ফার্মাসিউটিক্যালস খাতে বিনিয়োগের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। এ বৈঠকে জিএসপি পুনঃস্থাপন, র‌্যাবের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার দাবিসহ আরো কিছু বিষয়ে আলোকপাত করেন তিনি।

গতকাল সোমবার ওয়াশিংটন ডিসিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ৫০ বছর উদযাপন উপলক্ষে ওই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে ড. মোমেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্টমন্ত্রী ব্লিঙ্কেনকে বলেন,‘মার্কিন বিনিয়োগের ৯০ শতাংশ জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে। আমি চাই যুক্তরাষ্ট্র আইটি এবং ফার্মাসিউটিক্যালসের মতো অন্যান্য খাতে বিনিয়োগ করুক।’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে ৭ লাখ তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ রয়েছে এবং যুক্তরাষ্ট্র ওষুধ খাতে বিনিয়োগ করলে সাশ্রয়ী মূল্যে ওষুধ পেতে পারে।

ড. মোমেন বাংলাদেশকে ব্যবসা সহজ করতে সাহায্য করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানান যাতে ঢাকা তার অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাই-টেক পার্কগুলোতে আরও বেশি এফডিআই আকর্ষণ করতে পারে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়ালে যুক্তরাষ্ট্রের উপস্থিতি দেশে বাড়বে যা ওয়াশিংটনকে নিরাপদ ইন্দো-প্যাসিফিকের উদ্বেগ নিরসনে সাহায্য করবে।

মোমেন বলেন, ‘আমি বলেছিলাম যে, আমরা একটি মুক্ত, অন্তর্ভুক্তিমূলক, উন্মুক্ত এবং সুরক্ষিত ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল চাই। যদি আপনার উপস্থিতি থাকে তবে আমরা একসঙ্গে কাজ করব।’ জবাবে ব্লিঙ্কেন বলেন, মার্কিন পক্ষ এই বিষয়গুলো ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করবে।

জিএসপি পুনঃস্থাপন ইস্যু২০১৩ সাল থেকে স্থগিত মার্কিন বাজারে বাংলাদেশের পণ্যের জিএসপি সুবিধা পুনঃস্থাপনের বিষয়টিও তুলে ধরেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে শ্রম পরিস্থিতির আরও উন্নতি হলে যুক্তরাষ্ট্র জিএসপি সুবিধা পুনঃস্থাপন করবে।

ডা. মোমেন জানান, শ্রম অধিকারের ক্ষেত্রে পরিস্থিতির অনেক উন্নতি হয়েছে এবং এটিকে স্বীকৃতি দেওয়া দরকার।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শ্রম সমস্যা আন্তর্জাতিক স্তর অনুযায়ী অর্জনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি রোডম্যাপ তৈরিরও প্রস্তাব করেন। তিনি ব্লিঙ্কেনকে বললেন, ‘আসুন আলোচনা করা যাক।’

রোহিঙ্গা ইস্যুমোমেন ব্লিঙ্কেনকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের সহিংসতাকে গণহত্যা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানান এবং সংকট সমাধানে আসেম এবং কোয়াড সদস্যদের সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।

তিনি ব্লিঙ্কেনকে বলেন, ‘সঙ্কটের টেকসই সমাধানের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আরও অনেক কিছু করা উচিত।’

বাংলাদেশের নির্বাচন প্রক্রিয়াডা. মোমেন একটি স্বচ্ছ ও স্বাধীন নির্বাচন কমিশনের অধীনে বাংলাদেশের অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন পদ্ধতি সম্পর্কে ব্লিঙ্কেনকে অবহিত করেন।

তিনি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলেন, ‘আমাদের একটি সুষ্ঠু ব্যবস্থা আছে। আমাদের একটি নির্বাচন কমিশন (ইসি) আছে। তারা (কমিশন) স্বাধীন এবং নির্বাচনের সময় তারাই বস।’

মোমেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর থেকে বাংলাদেশে বিভিন্ন পর্যায়ে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হচ্ছে।

ঢাকা-নিউইয়র্ক-ঢাকা রুটে সরাসরি বিমানের ফ্লাইট চালু করার জন্য ব্লিঙ্কেনকে উদ্যোগ নেওয়ারও আহ্বান জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

মোমেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে তার সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।

এ বৈঠকে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম হানিফ এমপি, নাইম রাজ্জাক এমপি, পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পশ্চিম) শাব্বির আহমদ চৌধুরী, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শহিদুল ইসলাম ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (আমেরিকা) তৌফিক ইসলাম শাতিল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। বাসস

 

মন্তব্য

Beta version